নিজস্ব সংবাদদাতা:: নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের ইছবপুর গ্রামে দৃর্বৃত্তের হামলায় ছরিকাঘাতে নিহত নীলু সূত্র ধর (৬০) নিহতের ঘটনায় এখনও মামলা দায়ের হয়নি। ঘাতককে গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গতকাল বুধবার সকালে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে নিহতের ময়না তদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বিকেল সাড়ে ৪টার মৃতদেহ নিজ বাড়ীতে এসে পৌছলে এ সময় পরিবারের লোকজনের কান্নায় আকাশ ভারী হয়ে উঠে। ঘটনার খবর পেয়ে নিহত নীলুর একমাত্র সন্তান জীবন সূত্রধর কুয়েত থেকে বুধবার দুপুরে বাড়ীতে এসেছেন। ছেলের উপস্থিতিতেই সন্ধায় স্থানীয় শ্মশানঘাটে নীলুকে দাফন করা হয়।
নিহতের ছেলে জীবন জানায়,আমি মানুষের বাড়ীতে কাজ করে মার মুখে খাবার দিয়েছি। মায়ের সুখের জন্য বিদেশ গিয়েছি। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার মার সাথে ফোনে কথা হয়। মাকে বলেছিলাম মাগো তোমার সুখের জন্য আমি সব করবো। আমার সব আশা ভরসা শেষ হয়ে গেল। এই বলে তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তিনি মায়ের হত্যাকারীকে দ্রুত গ্রেফতারসহ খুনির সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান।
নিহতের বড় মেয়ে সাবিত্রি সূত্রধর জানান,আমাদের কারো সাথে কোন শক্রতা নেই। এমন ঘটনা আমরা কোন দিন কল্পনাও করিনি। তিনি ঘটনার সাথে যারা জড়িতদের গ্রেফতারের দাবির জানান।
সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দায়িত্বরত এসআই ফারুক আহমদ জানান,হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিল্পী সূত্রধর এর শারীরিক অবস্থা উন্নতির দিকে। সে সম্পর্ণ আশংকামুক্ত।
নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি)ইকবাল হোসেন জানান,লাশের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করার পর সন্ধায় দাহ করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি। আসামী গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
সহকারী পুলিশ সুপার নবীগঞ্জ-বাহুবল সার্কেল পারভেজ আলম চৌধুরী জানান,কারা ঘটনার সাথে জড়িত খুব শীঘ্রই তাদের চিহিৃত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আসামী গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
উল্লেখ্য,নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জের ইছবপুর গ্রামের নিহত নীলু সূত্রধর এর স্বামী চানমনি সূত্রধর মারা যান বিগত ৭/৮বছর পূর্বে। তার একমাত্র পুত্র জীবন কুয়েত প্রবাসী। মেয়ে সবাই স্বামীর বাড়ীতে থাকেন। এক মাত্র পুত্রবধু হ্যাপি সুত্রধরকে নিয়েই শাশুড়ী বাড়ীতে থাকেন। গত ১০/১৫ দিন আগে পুত্রবধু হ্যাপি পিতার বাড়ী নবীগঞ্জের ভুবিরবাগ গ্রামে অবস্থান করছেন। মা বাড়ীতে একা এই সুবাধে তার ছোট মেয়ে মাধবপুর উপজেলার মনতলা স্বামীর বাড়ী থেকে মা নীলু সুত্রধরের কাছে আসেন। গত মঙ্গলবার সন্ধা থেকে বৃষ্টি হচ্ছিলো। তাছাড়া ওই দিন ইনাতগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ছিলো বারুনী মেলা। মেলা থাকায় গ্রাম ছিল পুরুষ শুন্য। এই সুযোগটাই কাজে লাগায় খুনি। রাত ৮টায় নীলু সুত্রধরের ঘরে প্রবেশ করে ঘাতক। মা মেয়ে দুজনকেই এলাপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করলে ঘটনা স্থলেই বৃদ্ধা নীলু নিহত হন। গুরুতর আহত হন মেয়ে শিল্পী। এ সময় শিল্পীর ৩বছরের শিশু অভি অক্ষত অবস্থায় থাকে।
Leave a Reply