নিজস্ব সংবাদদাতা::নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জ বাজারে সুমন রায়ের মালিকানাধীন ব্যবসা প্রতিষ্টান মেসার্স প্রভীর কুমার রায় এন্ড সন্স এ দোকান কর্মচারী শিপন দাশ(৩০) কর্তৃক হামলার ঘটনায় আহত নিরঞ্জন রায়(৫৫) প্রায় ৮ দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
মঙ্গলবার (৩ জুলাই) বেলা ২টার সময় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শেষ নি:স্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মেসার্স প্রভীর কুমার রায় এন্ড সন্স এর মালিক সুমন রায় মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান,হামলার ঘটনার পর তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউতে রাখা হয়েছিল। চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর ২টায় তিনি মারা যান।
বুধবার সকালে ওসমানী হাসপাতালে ময়না তদন্ত সম্পন্ন হওয়ার পর মৃত দেহ গ্রামের বাড়ীতে নিয়ে আসা হবে। অপর আহত দিলীপ দাশ শংকামুক্ত বলে তিনি জানান।
উল্লেখ্য ইনাতগঞ্জের পার্শ্ববর্তী পাঁইলগাঁও ইউনিয়নের আলিপুর গ্রামের সুমন রায়ের মেসার্স প্রভীর কুমার রায় এন্ড সন্স নামে ইনাতগঞ্জ বাজারের একটি ব্যবসা প্রতিষ্টান রয়েছে। মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার কাশিপুর গ্রামের প্রতেন্ড দাশের ছেলে শিপন দাশ(৩০) ও জগন্নাথপুর উপজেলার মেঘেরকান্দি গ্রামের মাখন দাশের পুত্র দিলিপ দাশ(২৫) দোকান কর্মচারী ও নবীগঞ্জ উপজেলার পাঞ্জারাই গ্রামের মৃত রাধানাথ এর পুত্র নিরঞ্জন রায়(৫৫) দোকান ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ৩ জনই রাতে দোকানে থাকেন।
সূত্র জানায়, গত কিছু দিন ধরে শিপন দাশের সাথে ম্যানেজার নিরঞ্জন দাশ ও অপর কর্মচারী দিলিপ দাশের মনোমালিন্য চলে আসছে। এর জের ধরে দোকানের মালিক সুমন রায় ২৫ জুন সোমবার রাত ১১টার দিকে বাসায় চলে গেলে রাত প্রায় দেড়টার দিকে ম্যানেজার নিরঞ্জন রায় সহ অপর দুই কর্মচারী প্রতিদিনের মতো দোকানে ঘুমানোর প্রস্তুতি নেন । এ সময় দিলিপ দাশ বাতরুমে গেলে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী শিপন লোহার দাড়ালো এ্যাংগেল দিয়ে কোন কিছু বুঝার আগেই নিরঞ্জন রায়ের মাথায় আঘাত করে।
এ সময় দিলিপ মাতরুম থেকে বের হওয়ার সাথে সাথে একই অস্ত্র দিয়ে তার মাথায়ও আঘাত করে শিপন। এ সময় তারা চিৎকার দিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তাদের চিৎকার শুনতে পান পার্শ্ববর্তী বাসার ডা: বাপ্পি সরকার। ডা: বাপ্পি কি হয়েছে বলে চিৎকার করলে তার চিৎকারে অপর দোকান কর্মচারী,বাজার পাহাড়াদার সহ তিনি ঘটনা স্থলে ছুটে আসেন। কিন্ত লোকজন আসার আগেই শিপন পাশের বিল্ডিয়ের ছাদে উঠে কিছু দুর গিয়ে ছাদ থেকে লাফ দিয়ে মাটিতে পড়ে পালিয়ে যায়।
খবর পেয়ে এলাকাবাসীসহ দোকান মালিক সুমন রায় ঘটনা স্থলে এসে দু’জনকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। এ ঘটনায় ২৬জুন সন্ধায় আহত নিরঞ্জন রায়ের পুত্র কৃষœ রায় বাদী হয়ে হামলাকারী শিপন দাশ(৩০) কে আসামী করে নবীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার বাদী কৃস্ন রায় কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন,আমার বাবা জীবনে কারো সাথে কোন অন্যায় করেননি। পরিবারের এক মাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন আমার বাবা। অন্যায় ভাবে আমার বাবাকে মেরে ফেলল। তিনি তার বাবা হত্যাকারী ঘাতক শিপনের মৃত্যুদন্ডের শাস্তির দাবিয়ে জানিয়ে অভিলম্বে তাকে গ্রেফতারে প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানান।
এ ব্যাপারে ইনাতগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ীর পুলিশ পরিদর্শক সামছুদ্দিন খাঁন বলেন,আসামীর বাড়ী মৌলভীবাজার জেলায়। ইতিমধ্যে আমরা মৌলভীবাজার ও সিলেটে শিপনকে গ্রেফতারে অভিযান পরিচালনা করেছি। আশা করছি খুব শীঘ্রই তাকে গ্রেফতার করে আনের আওতায় নিয়ে আসবো।
Leave a Reply