নিজস্ব প্রতিবেদক::নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জ বাজারে সুমন রায়ের মালিকানাধীন ব্যবসা প্রতিষ্টান মেসার্স প্রভীর কুমার রায় এন্ড সন্স এ দোকান কর্মচারী শিপন দাশ(৩০) কর্তৃক হামলার ঘটনায় নিহত দোকান ম্যানেজার হত্যাকারী শিপন দাশ(৩০)কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত শুক্রবার ইনাতগঞ্জ ফাঁড়ীর ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক মো: শামছউদ্দিন খাঁন,এসআই এমরান আহমদ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ম্যেলভীবাজার রাজনগর এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে দিনভর অভিযান পরিচালনা করেন। অবশেষে রাজনগর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
শনিবার দুপুরে আসামী শিপন দাশ হবিগঞ্জের চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট শাহীনুর আক্তারের কাছে ১৬৪ ধারায় হত্যাকান্ডের শ্বীকারোক্তিমূলক জবানকন্দী প্রদান করেছে। ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক মো: শামছউদ্দিন খাঁন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।জবানবন্দীতে শিপন জানায়,নিহত নিরঞ্জন দাশ ও দিলিপ দাশ বিগত ১৪বছর ধরে ইনাতগঞ্জ বাজারে সুমন রায়ের মালিকানাধীন ব্যবসা প্রতিষ্টান মেসার্স প্রভীর কুমার রায় এন্ড সন্স এ দায়িত্ব পালন করে আসছে। ক্যাশের দায়িত্বে ছিলেন নিহত নিরঞ্জন দাশ। দিলিপ রায় ছিল তার সহযোগি। আসামী শিপন বিগত ২ বছর পূর্বে দোকানে কর্মচারী হিসেবে নিয়োগ পায়। শিপন জানায়,দোকান মালিক সুমন রায় তাকে স্নেহ করতেন। তাই দোকানের বাইরে মালিকের ব্যাক্তিগত কাজে বাড়ীতে ও সহযোগিতা করতো সে।
ফলে দোকানে আসতে তার দেরী হতো। এ নিয়ে ম্যানেজার নিরঞ্জন ও তার সহযোগি দিলিপ তাকে গালিগালাজ করতো। শিপন দোকান মালিক সুমনের কাছে বিচার দিলে কিছু দিন তারা শান্ত থাকতো। তারপর আবার ও তারা তাকে একই নিয়মে গালিগালাজ করতো। ঘটনার দিন শিপন দাশ রাত সাড়ে ১১টার দিকে দোকান মালিক সুমনের বাবা প্রভীর রায়ের সাথে তাদের বাড়ীতে যায়। সেখানে মালিকের ব্যক্তিগত কাজে জড়িয়ে পড়লে রাত ১টার দিকে শিপন ইনাতগঞ্জ বাজার দোকানে ফিওে আসে।
শিপন জানায়,দোকানে আসার পর মৃত নিরঞ্জন ও দিলিপ রায় তাকে গালিগালাজ করে। এক পর্যায়ে তারা দুজন তাকে মারপিট করে। পরবর্তীতে রাগের মাথায় সে লোহার এ্যাংগেল দিয়ে তাদের আঘাত করে। পরে সে পালিয়ে যায়।উল্লেখ্য ইনাতগঞ্জের পার্শ্ববর্তী পাঁইলগাঁও ইউনিয়নের আলিপুর গ্রামের সুমন রায়ের মেসার্স প্রভীর কুমার রায় এন্ড সন্স নামে ইনাতগঞ্জ বাজারের একটি ব্যবসা প্রতিষ্টান রয়েছে। মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার কাশিপুর গ্রামের প্রতেন্ড দাশের ছেলে শিপন দাশ(৩০) ও জগন্নাথপুর উপজেলার মেঘেরকান্দি গ্রামের মাখন দাশের পুত্র দিলিপ দাশ(২৫) দোকান কর্মচারী ও নবীগঞ্জ উপজেলার পাঞ্জারাই গ্রামের মৃত রাধানাথ এর পুত্র নিরঞ্জন রায়(৫৫) দোকান ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
৩ জনই রাতে দোকানে থাকেন। ২৫ জুন সোমবার রাত ১১টার দিকে দিকে সুমন রায় বাসায় চলে গেলে রাত প্রায় দেড়টার দিকে ম্যানেজার নিরঞ্জন রায় সহ অপর দুই কর্মচারী প্রতিদিনের মতো দোকানে ঘুমানোর প্রস্তুতি নেন । এ সময় দিলিপ দাশ বাতরুমে গেলে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী শিপন লোহার দাড়ালো এ্যাংগেল দিয়ে কোন কিছু বুঝার আগেই নিরঞ্জন রায়ের মাথায় আঘাত করে।
এ সময় দিলিপ মাতরুম থেকে বের হওয়ার সাথে সাথে একই অস্ত্র দিয়ে তার মাথায়ও আঘাত করে শিপন। এ সময় তারা চিৎকার দিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তাদের চিৎকার শুনে পার্শ্ববর্তী দোকান কর্মচারী,বাজার পাহাড়াদার সহ লোকজন ঘটনা স্থলে ছুটে আসেন। কিন্ত লোকজন আসার আগেই শিপন পাশের বিল্ডিয়ের ছাদে উঠে কিছু দুর গিয়ে ছাদ থেকে লাফ দিয়ে মাটিতে পড়ে পালিয়ে যায়।
খবর পেয়ে এলাকাবাসীসহ দোকান মালিক সুমন রায় ঘটনা স্থলে এসে দু’জনকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। আহত নিরঞ্জন রায়(৫৫) প্রায় ৮ দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে ৩ জলাই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার বেলা ২টার সময় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শেষ নি:স্বাস ত্যাগ করেন। আর আহত দিলিপ রায়ের শারিরীক অবস্থার উন্নতি হলে সে শংকামুক্ত হয়।
এ ঘটনায় নিরঞ্জন রায়ের পুত্র কৃষœ রায় বাদী হয়ে হামলাকারী শিপন দাশ(৩০) কে আসামী করে নবীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। তারিখ ২৬/০৬/১৮। ধারা ৩২৪/৩২৫/৩২৬/৩০৭/৩৪। পরবর্তী সংযুক্ত ৩০২।
সহকারী পুলিশ সুপার নবীগঞ্জ-বাহুবল সার্কেল মো: পারভেজ আলম চৌধুরী বলেন,ঘটনার পরপর আমি ঘটনা স্থল পরিদর্শন করে আসামী গ্রেফতারে নির্দেশ প্রদান করি। দ্রুত সময়ের মধ্যে তাকে আইনের আওতায় নিয়ে এসে ঘটনার রহশ্য উদঘাটন করা হয়েছে।
Leave a Reply