ইনাতগঞ্জ ডিগ্রি কলেজে উপবৃত্তির টাকা আত্মসাৎ এর ঘটনায় অধ্যক্ষ ও শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন রবিবার

নবীগঞ্জ(হবিগঞ্জ)থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা : নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জ ডিগ্রী কলেজের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা আত্মসাত করায় এবং বিভিন্ন দুর্নীতির প্রতিবাদে অধ্যক্ষ সঞ্জিত সেন রায় ও শিক্ষক নাজমুল হুদার অপসারণের দাবিতে কলেজ শিক্ষার্থীরা আগামী শনিবার সকালে মানববন্ধন আহবান করেন। সংবাদটি কলেজ অধ্যক্ষ সঞ্জিত সেন জানার পর তড়িঘড়ি করে গতকাল বৃহস্পতিবার নোটিশ টানিয়ে আগামী শনিবার কলেজ বন্ধ ঘোষণা করেন। এতে শিক্সার্থীদের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। তাই শনিবারের পরিবর্তে আগামী রবিবার সকাল ১০টায় তারা কলেজ ক্যাম্পাসে মানববন্ধন আহবান করেন।
জানাযায়, প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের সমন্বিত উপবৃত্তির টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠে ইনাতগঞ্জ ডিগ্রী কলেজের শিক্ষক নাজমুল হুদার বিরুদ্ধে।  তিনি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ৪ শিক্ষার্থীর ২৩ হাজার ২ শত  উপবৃত্তির টাকা আত্মসাৎ করেন। খোঁজ নিয়ে জানাগেছে শিক্ষক নাজমুল হুদা নিজের মোবাইল নাম্বার ও তার ভাই পিয়াস আহমেদের নাম্বারে উপবৃত্তির টাকা নেন।
উপবৃত্তি পাওয়া শিক্ষার্থীরা গরীব ও হত দরিদ্র। পে-রোল রিপোর্ট অনুযায়ী প্রদত্ত সেইসব নাম্বারে বিগত-২০২২-২৩ অর্থ বছর হতে শিক্ষার্থীদের জন্য আসা উপবৃত্তির টাকা হাতিয়ে নেন শিক্ষক নাজমুল।
উপবৃত্তির তালিকায় থাকা একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী জামিল মিয়ার ক্ষেত্রে কলেজ শিক্ষক নাজমুল হুদার ভাই পিয়াসের নগদ অ্যাকাউন্ট নম্বর ব্যবহার করা হয়।
একই শ্রেণির শিক্ষার্থী রকমিনা আক্তার,আশ্রবী বেগম ও সুমাইয়া বেগমের টাকা আসে শিক্ষক নাজমুল হুদার  বিকাশ অ্যাকাউন্টে।
বিষয়টি প্রকাশ হলে কলেজের অধ্যক্ষ সঞ্জিত সেন রায় তাৎক্ষণিক শিক্ষকদের নিয়ে জরুরী সভা করেন। সভায় শিক্ষক নাজমুল হুদা ৪ শিক্ষার্থীর ৬ মাসের উপবৃত্তির ২৩ হাজার ২ শত টাকা কলেজের অধ্যক্ষ্যর কাছে ফেরত দেন।  এলাকাবাসীও অভিভাবকদের প্রশ্ন ৬ মাসে যদি উপবৃত্তির ২৩ হাজার ২ শত টাকা হয়,তাহলে এক বছরে ৪৬ হাজার ৪ শত টাকা। আর বিগত ১০ বছর ধরে শিক্ষক নাজমুল হুদা এই বিষয়ে তদারকি করছেন। এই ১০ বছরে তিনি কি পরিমান টাকা লুটেছেন তিনিই ভাল জানেন। শিক্ষক নাজমুল হুদা দীর্ঘদিন যাবত এমন ঘৃনিত কাজে জড়িত থাকলেও  কলেজের অধ্যক্ষ সঞ্জিত সেন রায় নির্বিকার কেন এমন প্রশ্নও এলাকাবাসীর। অভিভাবকরা বলেন, তাদের সন্তানেরা গত বছর একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হওয়ার পর তাদের নামে উপবৃত্তি হয়। কিন্ত তারা টাকা পাননি। তারাও সুষ্টু তদন্তের দাবি জানান।
শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা আত্মসাৎ এর ঘটনায় ফুসে উঠছেন কলেজের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। তারা আগামী রবিবার মানববন্ধন করবে।
কলেজের সাবেক ছাত্র কাইফু আহমেদ বলেন,এলাকার শিক্ষানুরাগী মানুষের ঘামে প্রতিষ্টিত হয়েছে ইনাতগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ। আর এই কলেজকে ব্যবসার জায়গা মনে করে লুটপাট করা হচ্ছে। এটা চলতে পারেনা। আমরা সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা মানববন্ধনের আহবান করেছি। অধ্যক্ষ সঞ্জিত সেন ও শিক্ষক নাজমুল হুদার অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। এলাকাবাসী ও আমাদের সাথে আছেন।
কলেজের গভর্নিংবডির সদস্য তহির উদ্দিন বলেন,ঘটনাটি শুনেছি।  অধ্যক্ষ মহোদয়ের সাথে আমরা কথা বলে জরুরী সভা ডাকতে বলছি।
অধ্যক্ষ সঞ্জিত সেন বলেন,নির্বাচনের পর গভর্নিংবডির সভা আহবান করবো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ জাতীয় আরো খবর..

ফেসবুকে আমরা