সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ নেত্রকোনার কলমাকান্দায় গুমাই নদীতে যাত্রীবাহী একটি ট্রলার ডুবির মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ২২জন যাত্রী নিখোঁজ হয়েছেন। এর মধ্যে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত স্থানীয় এলাকাবাসীর সহযোগিতায় নেত্রকোনার দমকল বাহিনীর ডুবুরিরা চেষ্টা চালিয়ে নারী ও শিশুসহ ১০ জনের মৃত্যুদেহ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে এবং বাকি নিখোঁজ ব্যক্তিদের উদ্ধার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। বুধবার সকাল ৯টার দিকে পাশের সুনামগঞ্জেের ধর্মপাশা উপজেলার মধ্যনগর বাজার থেকে ৩০-৩২ জন যাত্রী নিয়ে যাত্রীবাহী ওই ট্রলারটি নেত্রকোণা সদর উপজেলার ঠাকুরাকোনা বাজারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয় পরে ওই দিন সকাল ১০টার দিকে ট্রলারটি কলমাকান্দা উপজেলার বরখাপন ইউনিয়নের রাজনগর গ্রাম সংলগ্ন গুমাই নদীতে যাওয়া মাত্রই বালু বোঝাই একটি নৌকার সাথে ধাক্কা লেগে এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটে।
উদ্ধারকৃত নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৯ জনই পাশের সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার বাসিন্দা বলে জানান, মধ্যনগর থানার ওসি মো. আবদুল্লাহ আল মামুন। নিহতরা হলেন, ধর্মপাশা উপজেলার মধ্যনগর থানা সদর ইউনিয়নের কামাউরা গ্রামের আব্দুর ছায়েদের স্ত্রী মজিদা আক্তার (৫৫) একই গ্রামের আব্দুল ওহাব মিয়ার স্ত্রী লুৎফুর নান্নার বেগম (২৬) ও তার ছেলে রকিবুল ইসলাম (৩) হাবিকুল ইসলামের স্ত্রী লাকি আক্তার (৩৪) ও তার শিশু কন্যা তুমপা আক্তার (৭) ও শিশু পুত্র জাহেদ হাসান (২) এবং একই উপজেলার পাইকুরাটি ইউনিয়নের জামালপুর গ্রামের আব্দুল করিমের স্ত্রী সুলতানা আক্তার (৪২) ও একই গ্রামের জুবায়ের মিয়ার শিশু পুত্র মুজাহিদ হোসেন (৫)। এ ছাড়াও অন্যজন হলেন, নেত্রকোনা জেলা সদরের মেদনী গ্রামের আবু চাঁন মিয়ার স্ত্রী মজিদা আক্তার (৫২)।
এ দিকে এ ঘটনার খবর পেয়ে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল আহাদ, নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক কাজী আব্দুর রহমান ও এবং নেত্রকোনা পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী মুন্সী ও সুনামগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সাহেব আলী পাঠান, ধর্মপাশা উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবু তালেব ও ধর্মপাশা সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার সুজন চন্দ্র সরকার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। স্থানীয় এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে, বুধবার সকাল ৯টার দিকে পাশের সুনামগঞ্জেের ধর্মপাশা উপজেলার মধ্যনগর বাজার থেকে ৩০-৩২ জন যাত্রী নিয়ে যাত্রীবাহী ওই ট্রলারটি নেত্রকোণা সদর উপজেলার ঠাকুরাকোনা বাজারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয় পরে ওই দিন সকাল ১০টার দিকে ট্রলারটি কলমাকান্দা উপজেলার বরখাপন ইউনিয়নের রাজনগর গ্রাম সংলগ্ন গুমাই নদীতে যাওয়া মাত্রই বালু বোঝাই একটি নৌকার সাথে ধাক্কা লেগে যাত্রীবাহী ওই ট্রলারটি ডুবে যায়। এ সময় সাঁতরে ট্রলার চালকসহ ১২ যাত্রী তীরে উঠতে পারলেও বাকি যাত্রীরা পানিতে ডুবে নিখোঁজ হন।
মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল আহাদ বলেন, খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি এবং আমাদের ডুবুরিরা এ পর্যন্ত ১০জনের মৃত্যুদেহ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে। আরো দুই জন নিখোঁজ রয়েছে বলে তাদের স্বজনরা জানিয়েছে। তবে বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছেন বলে আমরা প্রথমিক ভাবে ধারনা করছিল। তবে এ উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রাখা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
Leave a Reply