কানাইঘাটের তিন জয়িতার জীবনের গল্প

কানাইঘাট প্রতিনিধি:: “জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ” শীর্ষক কার্যক্রমের আওয়তায় ২০২০ সালের জন্য কানাইঘাট
উপজেলায় ৩ ক্যাটাগরিতে ৩ জনকে জয়িতা নির্বাচিত করা হয়েছে। তারা হলেন অর্থনৈতিক
ভাবে সফল নারী আনোয়ারা বেগম, সফল জননী নারী রওশনআরা বেগম চৌধুরী, সমাজ উন্নয়নে
অসামান্য অবদান রাখা নারী মরিয়ম বেগম চৌধুরী।
ক্যাটাগরীর নাম:-সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রেখেছেন যে নারী, নাম মরিয়ম বেগম চৌধুরী
পিতা-মৃত আব্দুল মুছব্বির চৌধুরী মাতা সুরতুন নেছা গ্রাম-দর্পনগর পূর্ব কানাইঘাট,
সিলেট।
তিনি একজন দরিদ্র পরিবারের মহিলা। দিনরাত টিউশনি করে এলাকার কিছু দরিদ্র পরিবার ও ছাত্র-
ছাত্রীদেরকে শিক্ষা দিয়েছেন। তারা আজ উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি
প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন। তার পারিবারিক উন্নতি সহ সমাজ উন্নয়নে বলিষ্ট ভূমিকা রেখে
ছিলেন মরিয়ম বেগম চৌধুরী। নিজের আয়ের উৎস দিয়ে তাহার এবং গরীব স্বামীকে বিদেশ
পাঠিয়েছেন। বর্তমানে তাহার সংসার উন্নত এবং ভালভাবে দিন যাপন করছেন ছেলে-মেয়েদের নিয়ে।
ক্যাটাগরীর নামঃ-সফল জননী নারী-রওশন আরা বেগম চৌধুরী স্বামী-মৃত আব্দুর রব মাতার নাম-সুরইয়া
বেগম চৌধুরী সাং-ভবানীগঞ্জ কানাইঘাট, সিলেট।
রওশ আরা বেগম চৌধুরী স্বচ্ছল পরিবারের মহিলা ছিলেন। বিবাহের পর ২০০৪ সালে ছোট ছোট ৪
সন্তান রেখে মারা যান তার স্বামী। তখন তার পরিবারের জীবিকা উপার্জনের কোন রকমের ব্যবস্থা ছিল
না। মারাত্মক আর্থিক সংকটে পড়েন রওশন আরা বেগম। সাংসারিক কাজের পাশাপাশি পরিবারের
অভাব মোচনের জন্য হাঁস-মুরগী পালন ও বিভিন্ন রকমের সবজি চাষ সহ অত্যন্ত কষ্ট করে অভাব অনটনের
মধ্যে নিজ গৃহে এলাকায় বাচ্চাদের লেখা-পড়ার পাশাপাশি নিজের সন্তানদের লেখা-পড়া করিয়েছেন।
বর্তমানে রওশনআরা বেগমের ১ম ছেলে হাফিজি পাস করে ডিপ্লোমা ইন ফিজিওথেরাপিষ্ট
প্রোগ্রাম শেষ করে ঢাকার স্যার উইলিয়াম কলেজ ব্যাভারেজ প্রাইভেট হাসপাতালে কর্মরত আছেন।
২য় ছেলে সিলেট পলিটেকনিক কলেজ থেকে ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করে প্রাইভেট জবে
(অ্যাপোলো ইন্ডাষ্ট্রিজ) পাশাপাশি সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে বিএসসি ইন
ইঞ্জিনিয়ারিং (ইলেকট্রনিক্স এন্ড কমিউনিকেশন) গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করে বর্তমানে ইসলামী
ব্যাংক এজেন্ট শাখা সড়কের বাজার আইটি এন্ড ক্যাশ ইনচার্জ হিসাবে কর্মরত আছেন। ৩য় মেয়ে
বর্তমানে মাস্টার্সে অধ্যায়নরত। ৪র্থ মেয়ে ডিপ্লোমা ইন ম্যাটস থেকে ডাক্তারী পাস করে সড়কের
বাজারে নিজস্ব চেম্বারে কর্মরত আছেন।
ক্যাটাগরীর নামঃ-অর্থনৈতিক ভাবে সাফল্য অর্জনকারী নারী-নাম আনোয়ারা বেগম পিতার
নাম-মৃত বশির আহমদ মাতা-ফাতেমা বেগম সাং-সাতপারি কানাইঘাট সিলেট।
আনোয়ারা বেগম দরিদ্র পরিবারের সন্তান ছিলেন। অভাবের মধ্য দিয়ে পিতার পরিবার থেকে অষ্টম শ্রেনী
পর্যন্ত লেখা পড়া করেন। বিবাহের পর স্বামী কর্তৃক তালাক প্রাপ্ত হয়ে এক ছেলে এক মেয়েকে নিয়ে
পিতার বাড়ীতে চলে আসেন। আনোয়ারা বেগমের আর্থিক অবস্থা এত খারাপ ছিল যে, পড়ার মতো
কোন কাপড় পর্যন্ত ছিল না। এনজিও সংস্থা এফআইভিডিবি সূচনা প্রকল্প হতে হাঁস-মোরগ,
গরু ইত্যাদি পেয়ে লালন পালন করে বর্তমানে ভাল ভাবে জীবন যাপন করছেন তিনি। তার ছেলে-মেয়ে
এখন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে লেখা পড়াও করছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ জাতীয় আরো খবর..

ফেসবুকে আমরা