নুরুন্নবী নবীন, নোয়াখালি প্রতিনিধি :: নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলকে পিটিয়ে জখম করা হয়েছে।
মেয়র আবদুল কাদের মির্জার অনুসারীরা এ হামলা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ সময় হামলাকারীরা বাদলের ব্যক্তিগত গাড়িটি ভাঙচুর করেন।
শনিবার সকাল পৌনে ৯টার দিকে বসুরহাট বাজারের ইসলামী ব্যাংকের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
বাদলের সমর্থকদের অভিযোগ, সকালে মেয়র কাদের মির্জা তার ৩০-৩৫ জন অনুসারী নিয়ে বসুরহাট বাজারে মহড়া দিচ্ছিলেন। নিজের ব্যক্তিগত গাড়ি বাদল ও সাবেক ছাত্রনেতা হাসিব আহসান আলাল ঢাকার উদ্দেশে যাচ্ছিলেন। তাদের গাড়িটি বসুরহাট ইসলামী ব্যাংকের সামনে দাঁড়ালে কাদের মির্জার নির্দেশে তার অনুসারীরা বাদল ও আলালের ওপর হামলা চালায়।
এ সময় বাদলের শরীরের বিভিন্ন অংশে জখম ও কানের একটি অংশ ছিড়ে যায়। পরে একজন অটোরিকশাচালক তাকে উদ্ধার করে প্রথমে থানায় ও পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য বাদলকে ঢাকায় পাঠানো হয়।
এদিকে এ খবর ছড়িয়ে পড়লে উপজেলার পেশকারহাট রাস্তার মাথা, চরএলাহী ও চরফকিরা এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধ করেন বাদলের সমর্থকরা।
কোম্পানীগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ জানান, বাদলকে উদ্ধার করে প্রথমে থানায় নিয়ে আসা হয়। তিনি পুলিশকে জানান, আবদুল কাদের মির্জার নির্দেশে তার অনুসারীরা এ হামলা চালিয়েছে। তবে এখনও কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত এর আগে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খান, সাধারণ সম্পাদক নূর নবী চৌধুরীর ওপর হামলা চালানো হয়। নূর নবী চৌধুরী এখনও ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এর প্রতিবাদে উপজেলা আওয়ামী লীগ সমর্থিত বাদলের অনুসারীরা দুপুরে বিক্ষোভ মিছিল করেন। এ সময় চরকাঁকড়া টেকের বাজারে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়।
এ সময় পুলিশ গুলি চালালে ছয়জন গুলিবিদ্ধ হন। তারা হলেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ফখরুল ইসলাম সবুজ (৫৫) ও তার ছেলে তরিকুল ইসলাম চয়ন (১৮)। অন্যদের নাম এখনও জানা যায়নি।
গুরুতর আহত চয়নকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পর নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তার চোখসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে গুলির চিহ্ন রয়েছে।
আহত সবাই উপজেলা আওয়ামী লীগ সমর্থিত বাদলের অনুসারী।
গুলিবিদ্ধ সবুজ জানান, তারা কাদের মির্জার গ্রেফতার দাবিতে আন্দোলন করার সময় পুলিশ বেপরোয়া গুলি চালায়। এতে তারা পিতা-পুত্রসহ অন্তত ছয়জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তিনি অজ্ঞাত স্থান থেকে হাসপাতালে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, টেকের বাজারে হরতালের সমর্থনে রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে বিক্ষোভ করার সময় পুলিশ বাধা দেয়। এতে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে পুলিশের গুলিতে বাদল সমর্থিত পিতা-পুত্রসহ অনেকে গুলিবিদ্ধ হন।
নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আলমগীর হোসেন জানান, ব্যারিকেড ভাঙতে গেলে পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। এতে ৩-৪ জন পুলিশ আহত হয়। পরে পুলিশ ২০-২৫ রাউন্ড শর্টগানের গুলি চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এর আগে সকাল ৯টায় বসুরহাট বাজারে প্রধান সড়কের ইসলামী ব্যাংকের সামনে মেয়র আবদুল কাদের মির্জার নেতৃত্বে প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। পরে ৪৮ ঘণ্টার হরতালের ডাক দেয় উপজেলা আওয়ামী লীগ
Leave a Reply