রুজেল আহমদ সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:: চার উপজেলার শস্য ভান্ডার দেখার হাওর এখন ও অরক্ষিত। তিনটি পিআইসি’র কাজ এখন ও শুরু হয়নি, ফসল রক্ষায় কৃষকেরা শংকিত রয়েছেন। সরেজমিন দেখার হাওর পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, ফসল রক্ষা বাঁধগুলোর কাজ অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে। উপজেলার পূর্ব পাগলা ইউনিয়নের অন্তর্গত পরিদর্শনকৃত উন্নয়ন প্রকল্প নং ২৬, ২৭,২৮,২৯,৩০,৩১,৩২ ও ৩৩ এবং অনুন্নয়ন প্রকল্প ২৯ ও ৩০। বাঁধের অবস্থা দেখে অবাক দৃষ্টিতে দু’চোখে তাকানো ছাড়া আর কিছুই বলার ছিল না। বিগত বছরে অকালে বোর ফসল তলিয়ে গেলে কৃষকেরা বেকায়দায় পড়ে।
খেয়ে না খেয়ে এবং সরকারের সাহায্য সহযোগিতায় কৃষকেরা কোন রকম দিন কাটিয়ে প্রহর গুনছে আগামী মৌসুমের ফসল তোলার। হাওর রক্ষা বাঁধ নির্মাণে সরকারের আন্তরিকতার কোন ঘাটতি ছিল না। বিগত বছরের তুলনায় এই বছর সরকারের দেওয়া বরাদ্দের পরিমাণ ছিল দ্বিগুণ। পরিদর্শনকালে দেখা যায়, ডেকার হাওর (ডাইক-০৩) এর উন্নয়ন প্রকল্প(পি আই সি) নং-২৮ ২৯ এবং ৩০ তিনটিতে এখন পর্যন্ত কোন কাজ শুরু হয়নি।
২৬ ও২৭ নং দু’টিতে দুইদিন হয় কাজ শুরু হয়েছে এবং তাও সামান্য পরিমাণ কাজ। উন্নয়ন প্রকল্প ৩১ এর কাজ অর্ধেক সমপন্ন হয়েছে এবং ৩২ ও ৩৩ নং পি আই সি’তে চলমান আছে। তাছাড়া অনুন্নয়ন প্রকল্প নং ২৯ও ৩০ দুটিতে কাজ অসমাপ্ত রয়েছে। সরকারের দেওয়া নীতিমালা অনুযায়ী ২৮ শে ফেব্রুয়ারী হাওর রক্ষা বাঁধের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলে ও অদ্যাবধি পর্যন্ত পরিদর্শনকৃত পি আই সি থেকে অনুধাবন হয় ৫০ ভাগ কাজ বাকী রয়েছে। কাজের মেয়াদ শেষ হয়ে গেল কিন্তু এখন পর্যন্ত বেশীরভাগ পি আই সি’ তে দেখা যায়নি কোন সাইনবোর্ড।
চোখে পড়েনি দুর্মোজ শ্রমিক। যার জন্য সরকার বরাদ্দ দিয়েছে মোটা অংকের টাকা। কৃষকেরা তো জানে না এবারের কাজের নীতিমালা জানে না রবাদ্দের পরিমাণ। কিছু সাইনবোর্ড থাকলে ও সেখানে পাওয়া যায়নি প্রস্থ এবং উচ্চতা। বেশীর ভাগ ক্ষেতে বাঁধের একেবারে নিকট থেকে মাটি তোলার ফলে বৃষ্টির পানিতেই ধ্বসে যেতে পারে যে কোন সময়। কোথা ও এখনি ধ্বসে যাচ্ছে।
শংকায় কৃষকেরা আগামী বোর ফসল ঘরে তুলতে পারবে কিনা। ২৭ নং পি আই সি সভাপতি মকবুল নেছা এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন-আমি দুইদিন হয় কাজ শুরু করেছি। ২৯ নং পি আই সি’ সভাপতির সাথে দেখা হলে গুরুত্বহীনভাবে তিনি বলেন-আমরা এখনও প্রক্রিয়া শুরু করি নাই। ৩০ নং পি আই সি সভাপতি আফরোজা বেগম এর সাথে যোগাযোগ করতে চাইলে মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এত বরাদ্দ থাকার পরও সংশ্লিষ্টদের স্বদিচ্ছার অভাবে কৃষকেরা শংকিত রয়েছেন। আমরা যদি বিবেকের কাছে জানতে চাই যে, আমাদের করণীয় কি সে ক্ষেত্রে জবাব কি আসতে পারে ? পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন হাওর বাঁচাও, সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলন’এর কেন্দ্রীয় কমিটির বাঁধ বিষয়ক সম্পাদক ওবায়দুল হক মিলন, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা কমিটির সদস্য সাংবাদিক মো: আবু সঈদ, আব্দুল মকব্বির খোকন, মাহমদ হোসেন। সংগঠনের কেন্দ্রীয় বাঁধ বিষয়ক সম্পাদক ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা কমিটির সদস্যসচিব ওবায়দুল হক মিলন।
জেলা প্রশাসকের সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন-লিখিত অভিযোগ দিলে আমি বিষয়টি দেখব।
দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী অফিসার মোঃ হারুন অর রশীদের সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। কৃষকের ফসল রক্ষার স্বার্থে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি রাখা প্রয়োজন।
Leave a Reply