তোমার চোখের ভাষা

শাহ আলম::শহরের ব্যস্ত রাস্তায় তাড়াহুড়ো করে হাঁটছিল রাফি। প্রতিদিনের মতো অফিসে পৌঁছানোর তাড়না। কিন্তু সেদিন যেন কিছু একটা আলাদা ছিল। হঠাৎ করেই তার চোখ পড়ল রাস্তার পাশে দাঁড়ানো এক মেয়ের দিকে। মেয়েটি একদৃষ্টিতে আকাশের দিকে তাকিয়ে ছিল, চোখে যেন হাজার রঙের স্বপ্ন।

রাফি থেমে গেল। এমন মুগ্ধ করার মতো দৃশ্য সে আগে কখনো দেখেনি। মেয়েটির নাম ছিল সায়রা।

সায়রা ছিল চিত্রশিল্পী। তার ক্যানভাসে সব সময় ফুটে উঠত মানুষের আবেগ আর প্রকৃতির রঙ। রাফি জানতে পারল, সায়রা একটি আর্ট গ্যালারিতে কাজ করে। রাফির মনে হলো, এই মেয়েটি শুধু নিজের কাজের মধ্যে নয়, জীবনকেও রঙিন করে তুলতে জানে।

একদিন সাহস করে রাফি গিয়ে সায়রার সঙ্গে কথা বলল। “তোমার ছবিগুলো এত জীবন্ত কেন?” সায়রা মিষ্টি হেসে বলল, “কারণ আমি মানুষের চোখের ভাষা পড়তে পারি।” রাফি বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গেল। তার চোখে হয়তো সায়রা সেই মুহূর্তেই রঙিন স্বপ্নের গল্প পড়ে নিয়েছিল।

এরপর তাদের মধ্যে কথোপকথন বাড়তে লাগল। সায়রা তাকে শেখাল জীবনকে অন্যভাবে দেখা যায়, রঙ আর অনুভূতির মাধ্যমে। আর রাফি তাকে শেখাল বাস্তব জীবনের সংগ্রামের গল্প। একসময় তারা বুঝতে পারল, তাদের মধ্যে এক অদ্ভুত বন্ধন তৈরি হয়েছে।
একদিন সায়রা রাফিকে একটি বিশেষ ছবি উপহার দিল। ছবিতে আঁকা ছিল দুটি মানুষ, যারা একে অপরের হাত ধরে হাঁটছে এক অনন্ত পথে। ছবিটির নিচে লেখা ছিল, “তোমার চোখের ভাষায় আমি আমার গল্প খুঁজে পেয়েছি।”

রাফি বুঝল, এটাই ভালোবাসা। জীবন কখনো কখনো আমাদের সামনে এমন মানুষকে নিয়ে আসে, যার চোখের ভাষায় আমরা আমাদের অস্তিত্বের অর্থ খুঁজে পাই।

সায়রা আর রাফির গল্পটা হয়তো সবার কাছে সাধারণ ভালোবাসার গল্প, কিন্তু তাদের কাছে তা ছিল এক অমূল্য অধ্যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ জাতীয় আরো খবর..

ফেসবুকে আমরা