নবীগঞ্জের ইনাতগঞ্জে ডাক্তারের প্রেসক্রিপশনে ফুট সাপ্লিমেন্ট।। ব্যবসা জমজমাট।।

নবীগঞ্জ প্রতিনিধি:নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জ প্রত্যন্ত অঞ্চলের একটি বাজার। এই এলাকার অধিকাংশ মানুষই দিন আনে দিন খায়। গরীবের চেয়ে ধনী লোকের সংখ্যা খুবই কম। যাদের একটা বিরাট অংশ আবার গরীবের সম্পদ আত্মসাত করেই বড় হচ্ছে।

সম্প্রতি দেখা গেছে,ইনাতগঞ্জে কর্মরত কিছু সংখ্যক ডাক্তার নির্ধারিত রোগের ঔষধের পাশাপাশি প্রেসক্রিপশনে গণহারে অযথা লিখে দিচ্ছেন বিদেশী খাবার ফুট সাম্পিমেন্ট। ফলে ঔষধের সাথে ফুট সাম্পিমেন্ট খাবার কিনে খেতে রোগীদের হিমশিম খেতে হয়।

রোগ এমন একটা জিনিস  যে কোন মানুষেরই হতে পারে। সেটা ধনী গরীব বিচার করে হয়না। ধনী লোকদের চিকিৎসা করাতে কোন সমস্যা হয়না

কিন্তু যারা গরীব বা নিম্ন আয়ের মানুষ তাদের অবস্থা কি। তাদের যদি কোন জটিল রোগ হয় তাহলে তাদের কয়জনের হাতেই বা সঞ্চিত টাকা থাকে যার দ্বারা চিকিৎসা করতে পারে।

এমন অবস্থায় যদি যারা ডাক্তার তারা ন্যায্য ভিজিট নিতেন কিংবা অপ্রয়োজনীয় ঔষধ না লিখতেন তাহলে হয়তো অনেক গরীব ও নিম্ন আয়ের মানুষের চিকিৎসা সহজ হতো।

সরেজমিনে দেখা গেছে নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জ বাজারে বিভিন্ন চেম্বার কিংবা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সংশ্লিষ্ট ডাক্তারগণ  একজন রোগীকে সর্বোচ্চ ৫/১০ মিনিট সময় দিয়ে ভিজিট নিচ্ছেন ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা।

পাশাপাশি একজন এমডি ডিগ্রিধারীসহ ২/৩ জন ডাক্তার মোটা অংকের কমিশন খেয়ে প্রেসক্রিপশনে অন্যান্য ঔষধের পাশাপাশি লিখে দিচ্ছেন তথাকথিত ঔষধ ফুড সাম্পিমেন্ট । যদিও এই ফুট সাম্পিমেন্ট ঔষধ নয়,এটা খাবার।

বাজারে বিভিন্ন কোম্পানীর ভিটামিন ডি ট্যাবলেট পাওয়া যায় ৮ থেকে ১০ টাকায়,সেখানে এই ফুট সাম্পিমেন্ট ভিটামিন ডি প্রতি ট্যাবলেটের দাম ২০ থেকে ২৫ টাকা। প্রতি প্যাকেটের মূল্য ৭/৮ শত টাকা। এই ফুট সাম্পিমেন্ট স্বাস্থ্য সম্মত কিনা বা আধৌ সরকারের অনুমোদন আছে কিনা তাও অনেকের জানা নাই। তাছাড়া এই সাম্পিমেন্ট আসল না নকল তা- ও জানেননা কেউ। ডাক্তারদের বিশ্বাস করেই রোগীরা তাদের কাছে যান এবং যাই লিখে দেন সেটাই সেবন করছেন। তার উপর রয়েছ ডাক্তার ভিজিট আর টেষ্ট।

এমন পরিস্থিতিতে ডাক্তারদের অধিক ফি আদায় ও বিনা কারনে প্রেসক্রিপশনে বিদেশী খাবার ফুট সাম্পিমেন্ট লিখে দেয়া মানুষের উপর যুলুম ছাড়া আর কিছু নয়।

সাংবাদিক শাহ এসএম ফরিদ বলেন,ডাক্তার ভিজিট বেশী নিবেন এটা কোন সমস্যা নয়। সমস্যা হয় তখন ডাক্তার  যখন রোগীকে বিভিন্ন উপায়ে মুরগী বানায় । ডাক্তার রোগীকে ধরিয়ে দেন অপ্রয়োজনীয় টেষ্ট। সেই টেষ্ট করাতে রোগীকে অনেক টাকা গুনতে হয়। তাছাড়া একজন সাধারণ রোগী যখন সে রোগের ঔষধ কিনে খাবার সামর্থ নাই,সেখানে অকারনে ফুট সাম্পিমেন্ট খাবার প্রেসক্রিপশনে  লেখার কোন যুক্তিকতা নাই। সেটা লিখে দিয়ে ডাক্তার  একজন সাধারণ রোগীর সাথে প্রতারনা করছেন। এটা বন্ধ হওয়া দরকার।

শামসুল ইসলাম নামে একজন বলেন,কোথায় আমাদের বিবেক? কোথায় আমাদের মানবতার কল্যাণে শিক্ষার প্রয়োগ? তিনি অকারনে ফুট সাম্পিমেন্ট লেখা বন্ধ করাসহ ডাক্তারদের মানবিক হওয়ার আহবান জানান।

নবীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আশাহীদ আলী আশা বলেন,আইনের যথাযথ প্রয়োগ না থাকার কারনে যে যেভাবে পারছেন সেই ভাবেই বানিজ্য করছেন। তিনি বলেন ফুট সাম্পিমেন্ট একটি ব্যয় বহুল খাবার। ডাক্তাদের গরীব রোগীরদের বেলায় আন্তরিক হওয়া উচিত। তিনি এসব সাপ্লিমেন্ট লেখা বন্ধ করার পাশাপাশি জনসাধারণকে শাকসবজিসহ ফল ফ্রুট খাওয়ার পরামর্শ দেয়ার জন্য আহবান জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ জাতীয় আরো খবর..

ফেসবুকে আমরা