নবীগঞ্জের মনি পুলিশ রিমান্ডে ডিজিটাল ক্রাইমের কথা স্বীকার

নবীগঞ্জ(হবিগঞ্জ)থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা: হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার আলোচিত প্রতারক নারী ফরজুন আক্তার মনিকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গতকাল কারাগারে পাঠানো হয়েছে। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে সে ফেসবুকে ডিজিটাল ক্রাইম সম্পর্কের কথা স্বীকার করে অনেক গুরুত্বপূর্ন তথ্য ও সহযোগিদের নাম বলেছে। আবারো রিমান্ডে আনার জন্য পুলিশ আবেদন করবে বিস্বস্থসুত্রে জানা গেছে। গত বুধবার বিকেলে হবিগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ আমজাদ হোসেন রিমান্ডে এই আদেশ প্রদান করেন। উক্ত আদেশের প্রেক্ষিতেই নবীগঞ্জ থানা পুলিশ তাকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ১৭ অক্টোবর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেফতারকৃত প্রতারক ফরজুন আক্তার মনির বিরুদ্ধে এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিনা আক্তার। পরে মনির আইনজীবী এই আদেশ এর বিরুদ্ধে মঙ্গলবার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে রিভিশন দায়ের করেন। বুধবার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে এই রিভিশন এবং মনির জামিন শুনানী অনুষ্ঠিত হয়। দীর্ঘ শুনানী শেষে বিজ্ঞ বিচারক জামিন না মঞ্জুর করেন এবং নি¤œ আদালতের রিমান্ডের আদেশ বহাল রাখেন।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানী করেন পিপি এডভোকেট সিরাজুল হক চৌধুরী, এডভোকেট শাহ ফখরুজ্জামান ও এডভোকেট তাজ উদ্দিন সুফিসহ ৭/৮জন আইনজীবী। আসামী পক্ষে শুনানী করেন এডভোকেট আব্দুল মালেক হৃদয় ৭/৮জন আইনজীবী। পিপি এডভোকেট সিরাজুল হক এই আদেশের সত্যতা নিশ্চিত করেন।
প্রতারক ফরজুন আক্তার মনি রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ ফেসবুকে ডিজিটাল ক্রাইম এর কথা স্বীকার করে অনেক গুরুত্বপূর্ন তথ্য প্রকাশ করে। সে স্বীকার করেছে সে নবীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন সরকারী কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি ও সিনিয়র সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ফেসবুকে মানহানীকর মিথ্যা স্ট্যাটাস এবং বিভিন্ন ভূয়া একাউন্ট খোলে প্রতারণা করতো। এসব ডিজিটাল প্রতারণার সাথে তাকে যারা সহযোগিতা তাদের নামও প্রকাশ করেছে।
এব্যাপারে তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সমিরণ দাশ বলেন, অনেক ডিজিটাল ক্রাইম সম্পর্কে অনেক গুরুত্বপূর্ন তথ্যই সে প্রকাশ করেছে। মামলার তদন্তের স্বার্থে তা প্রকাশ করা যাবে না। মামলার স্বার্থে প্রয়োজন হলে আবারো রিমান্ডে তাকে আনা হতে পারে।
প্রকাশ যে, ডিজিটাল নিরাপত্তা ও তথ্য প্রযুক্তি আইনের মামলায় ফরজুন আক্তার মনিকে গত ২২ সেপ্টেম্বর গ্রেফতার করে পুলিশ। ওই নারী দীর্ঘদিন যাবত নিজেকে সাংবাদিক ও মানবাধীকার কর্মী পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার লোকজনের সাথে প্রতারণা করে আসছিল। তার টার্গেট ছিল- নারী জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন দপ্তরের নারী কর্মকর্তা ও স্কুল-কলেজের ছাত্রী। প্রতি রাতেই নারীদের বিভিন্ন অশালীন ম্যাসেজ দিতো সে। এসব ম্যাসেজের স্ক্রীণশর্ট প্রকাশ হওয়ায় মনি নারী না পুরুষ এনিয়েও প্রশ্ন উঠে নবীগঞ্জ উপজেলা আইন শৃংখলা কমিটিতে।
প্রতারক মনির এই প্রতারণার ফাঁদে পড়ে কেউ প্রতিবাদ করলেই মনি তার ফেইসবুক আইডিতে বিভিন্ন রকম হুমকি ধামকিমূলক ও মানহানীকর স্ট্যাটাস পোস্ট দিয়ে অপদস্থ করতো।
কিছুদিন পূর্বে একাধিক মানহানীকর স্ট্যাটাস দিলে নবীগঞ্জের সিনিয়র সংবাদিক ও সমকাল প্রতিনিধি এম এ আহমদ আজাদ বাদী হয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা ও তথ্য প্রযুক্তি আইনে মামলা করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ জাতীয় আরো খবর..

ফেসবুকে আমরা