নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি: নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের ঘোলডুবা গ্রামের মৃত শায়েস্তা মিয়া চৌধুরীর পুত্র যুক্তরাজ্য প্রবাসী মতিউর রহমান চৌধুরী বর্তমানে সিলেট উপশহরের বাসিন্দা সরল বিশ্বাসে বিয়ে করেছিলেন মুন্সীগঞ্জ জেলার, লৌহজং উপজেলার, কলমা গ্রামের খন্দকার সিরাজুল হক এর স্বামী পরিত্যাক্তা কন্যা হাবিবা ইয়াসমিন শিপু (৪৯)কে। বিয়ের পর থেকেই লন্ডন প্রবাসী স্বামীকে কলা কৌশলে কিভাবে লোঠেপুটে খাওয়া যায় সেই ধান্দা শুরু করে হাবিবা। মূলত হাবিবা মতিউর রহমান চৌধুরীকে বিয়ে করেছিলো তার বিশাল সম্পত্তি আত্মসাতের জন্য। দীর্ঘ ১১ বছরের সংসার জীবনে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটেছে ৩ বার। হাবিবার আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যস্থতায় বিচ্ছেদের পরও ৩ বার ফিরে আসে হাবিবা ওই লন্ডন প্রবাসীর ঘরে। লন্ডন প্রবাসী মতিউর স্ত্রী হাবিবাকে সুখে রাখতে বিভিন্ন সময় তার কথা মত স্বর্ণালংকার, দামী গাড়ী, দামী শাড়ী ও মোটা অংকের নগদ টাকা দিয়েছেন। লন্ডন প্রবাসী মতিউরের ঢাকা শহরে কয়েকটি ফ্ল্যাট ও কয়েকটি প্লট রয়েছে। সেই ফ্ল্যাট ও প্লট গুলোকে হাতিয়ে নিতে মরিয়া হয়ে উঠছে হাবিবা। হাবিবার এহেন কর্মকান্ডে ৭০ ঊর্ধ্ব লন্ডন প্রবাসী মতিউর হাপিয়ে উঠেছেন। জীবনের শেষ সময় এসে বৃত্তবান মতিউর এর স্ত্রী হাবিবার ৫ লক্ষ টাকার যৌতুক মামলার আসামী! মতিউর রহমান বর্তমানে সিলেট নগরীর শাহজালাল উপশহরের ডি-ব্লকের বাসিন্দা মৃত শায়েস্তা মিয়া চৌধুরীর পুত্র। ২০০৮ সালে মতিউর ঢাকা একটি মার্কেট ক্রয় করতে দেশে আসেন। এ সময় ঢাকায় একটি শপিংমলে পরিচয় হয় মুন্সীগঞ্জ জেলার লৌহজং থানাধীন কলমা গ্রামের মৃত খন্দকার সিরাজুল হকের মেয়ে হাবিবা ইয়াছমিন শিপুর সাথে। হাবিবা তার মন ভোলানো মিষ্টি কথা আর মিথ্যার ফাঁদে পা দিয়ে ওই বছরের আগস্টে ৫০ হাজার টাকার কাবিননামায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। দুবাই প্রবাসী স্বামীকে রেখে মতিউর এর সম্পত্তি আত্মসাতের লক্ষ্যে এক সন্তানসহ বিয়ে করেন হাবিবা। দীর্ঘ ১১ বছরের বিবাহিত জীবনে মতিউর তার স্ত্রী হাবিবাকে বিলাবহুল জীবন উপহার দেন। এই বিলাস বহুল জীবন কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে মতিউরের জীবনে। মতিউর এখন বুঝতে পেরেছেন তাকে বিবাহ করার পেছনে হাবিবার আসল উদ্দেশ্য কি? ঢাকায় মতিউর এর নামে ক্রয়কৃত ফ্ল্যাটটি হাতিয়ে নিতে বিভিন্ন ছলা-কৌশল অবলম্বন করেছে হাবিবা। হাবিবার ছলা-কৌশল ও মানসিক নির্যাতন থেকে রক্ষা পেতে বিয়ের পাঁচ বছরের মাথায় ২০১৩ সালে হাবিবাকে তালাক দেন তিনি। পরবর্তী সময়ে হাবিবার আত্মীয়স্বজন ও স্থানীয়দের মধ্যস্থতায় তালাকের তিন মাসের মধ্যেই পাঁচ লাখ টাকার কাবিননামায় পুনরায় বিয়ে করেন। এর পরপরই হাবিবা উত্তরার ফ্ল্যাটটি তার নামে কৌশলে উইল করে নেয়। কয়েক বছর সংসার করার পর আবারও হাবিবা নতুন ছলা-কৌশল ও মানসিক নির্যাতন করতে শুরু করে মতিউরের উপর। নির্যাতন সইতে না পেরে ২০১৮ সালের মাঝামাঝি আবারও হাবিবাকে তালাক দেন মতিউর। তালাকের পর উল্টো হাবিবা মতিউর এর ওপর ঢাকায় নারী ও শিশু নির্যাতন অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন মামলা দায়ের করে। হাবিবার আত্মীয়-স্বজন ও স্থানীয়দের মধ্যস্থতায় ১ লাখ টাকা কাবিননামায় পুনরায় বিয়ে হয় তাদের। শর্ত মোতাবেক হাবিবা মামলা তুলে নেয়। এরপরও থেমে নেই হাবিবার ছল-চাতুরী। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে আবারও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ৫ লক্ষ টাকার যৌতুক মামলা দায়ের করে হাবিবা। হাবিবার আত্মীয়স্বজন ও স্থানীয়দের মধ্যস্থতায় গত ১১ সেপ্টেম্বর পারিবারিক ও সামাজিক ভাবে আপস-মীমাংসা হয়। এ সময় কাজী ডেকে খোলা তালাক ও ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে ২ লাখ টাকার বিনিময়ে স্বাক্ষর করে হাবিবা আপোষ-মীমাংসা হয়। কিন্তু হাবিবা আবারও অপকৌশলের ধারাবাহিকায় আপোষ-নিষ্পত্তি ও তালাকের ঘটনাটি জোরপূর্ব হয়েছে বলে ঢাকার দ্বিতীয় সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে আপোষনামা বাতিলের ঘোষণামূলক মামলা দায়ের করে। এভাবেই হাবিবা বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে মতিউর রহমানকে মানসিক ও আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করছে। এ ব্যাপারে লন্ডন প্রবাসী মতিউর রহমান চৌধুরী বলেন, আমার স্ত্রী দাবিদার শিপু আমার কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে প্রতারণার মাধ্যমে ৪২,২৫০০০/- (বিয়াল্লিশ লক্ষ পঁচিশ হাজার) টাকা এবং আমার মার্কেট ও বাসা ভাড়া সহ প্রায় ১.৫ কোটি টাকা আত্মসাত করে। উক্ত বিষয়ে আমি উকিল নোটিশ প্রেরণ করিলে তার কোন সদোত্তর না পাওয়াতে বিজ্ঞ নোটারী পাবলিক সিলেট জজ কোট ২২/০৮/২০১৯ইং, তারিখে তালাক নামার নোটিশ প্রেরণ করি এবং আমি স্বামী কর্তৃক তালাক নামা বিগত ২২/০৮/২০১৯ইং প্রেরণ করি। জানা থাকা আবশ্যক। বহু বিবাহে আসক্ত প্রতারক এই মহিলা আমার সহায় সম্মপত্তির লোভ লালসায় নিমজ্জিত হয়ে গত ১০/০৭/২০১৮ইং তারিখে ভোলা জেলা মোকাম বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সি.আর নং- ৩৩২/১৮-২০১৮ হাবিবা ইয়াছমিন শিপু আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট মামলা দায়ের করে। উক্ত মামলাটি নাটকীয় ভাবে বাদীনি আবার সে নিজেই প্রত্যাহার করে নেয়। এরই ধারাবাহিকতায় বহুরূপী প্রতারক মহিলা আবারো তার অবৈধ ফায়দা হাসিলে ব্যর্থ হয়ে পূর্বের ন্যায় ঢাকা বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল-৬ এ নারী শিশু মামলা নং- ৮২/২০১৮ দায়ের করিলে বিজ্ঞ আদালতের বিচারে উক্ত মামলা হতে বিগত ০৩/০৪/২০১৯ইং তারিখে আমি মামলা হতে অব্যাহতি পাই। মামলাটি নতি ভুক্ত করা হয়। একের পর এক তার নানা সড়যন্ত্র করেও সে ক্ষান্ত হয়নি সে ইদানিং পূর্বের ন্যায় আরো ২টি মামলা দায়ের করে আমার কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি আত্মসাতের পায়তারা করে মরিয়া হয়ে উঠছে হাবিবা ইয়াসমিন শিপু ও তার আত্মীয়স্বজনরা। তাই উক্ত প্রতারক মহিলা একের পর এক মিথ্যা মামলা করে আমাকে মানষিক, শারীরিক ও আর্থিক ক্ষতির স্বাধন করিতেছে। আমি একজন হার্টের রোগী আমার হার্টে চারটি রিং বসানো আছে ও ডায়বেটিসসহ নানা রোগ ব্যধিতে ভুগতেছি। সে আমাকে মামলা মোকদ্দমা করে ও ক্ষান্ত হয়নি। আমাকে বিভিন্ন ভাবে প্রাণ নাশের হুমকি ও মানসিক নির্যাতন করে আসছে যে কারণে ঢাকা উত্তরা পশ্চিম থানায় ২০১৩ সাল থেকে একাধিক জিডি এন্ট্রি করে সর্বশেষ চলতি বছরে উল্লেখিত থানায় ১৮৬৪/১৯ নং সাধারণ ডায়রি করিতে বাধ্য হই। ওই শিপুর সাথে আমার ১১ বছরের সংসার জীবনে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে ৩বার। তবে সুচতুর শিপু তার আত্মীয়স্বজনের মাধ্যমে আমাকে বিভিন্ন ভাবে ফুসলিয়ে এবং ক্ষমা প্রার্থী হয়ে বার বার আমার ঘরে ফিরে আসে। তাকে সুখে রাখতে তার কথামতো স্বর্ণালংকার ও উল্লেখিত পরিমাণ টাকা সহ আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ দামী আসবাবপত্র কিনে দিয়েও তার মন জয় করতে পারিনি, তাকে পবিত্র হজ্জ করানোর পরেও সে নিজেকে বদলাতে পারেনি, তার লক্ষ উদ্দেশ্য একটাই আমার সকল সম্পত্তি আত্মসাৎ করা। আমি তাকে সংশোধন হওয়ার জন্য অনেক চেষ্টা করেছি কিন্তু সে তার চরিত্র বদলাতে পারেনি। আমি প্রশাসনের কাছে এর ন্যায় বিচার চাই। এ ব্যাপারে হাবিবা ইয়াসমিন শিপুর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হল তার মোবাইল নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়।
Leave a Reply