মোঃ নাবেদ মিয়া, নবীগঞ্জ থেকে॥ হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে বৃদ্ধ জাহির আলী হত্যাকা-ের ৮ মাস পর তদন্তে বেড়িয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। গতবছর ১৫ জুলাই প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে নিজের বৃদ্ধ বাবাকে খুন করে ছেলে ও তার স্বজনরা। শনিবার বিকেলে এক প্রেস- বিফ্রিংয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা। তিনি জানান, এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।আকটকৃতরা আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে ঘটনা স্বীকার করেছে। পুলিশ সুপার জানান, স্থানীয় বিজনা নদীর লীজ নিয়ে নবীগঞ্জ উপজেলার বাঁশডর গ্রামবাসী দুই পক্ষের বিভক্ত হয়ে বিবাদে জড়িয়ে পড়ে। এক পক্ষের নেতৃত্ব দেন স্থানীয় কাচন মিয়া ও ইউপি সদস্য রাজা মিয়া। অপর পক্ষের নেতৃত্ব দেন স্থানীয় শফিক মিয়া, রয়মান মিয়াসহ কয়েকজন। দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলাকালে উভয় পক্ষের মধ্যে ১০-১২টি মামলাও হয়। এসব ঘটনার জের ধরে, গত বছরের ১৫ জুলাই সংঘর্ষে জড়ায় দুই পক্ষের লোকজন। সংঘষের এক পর্যায়ে, প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে শফিক মিয়ার পক্ষের লোকজন ৭৫ বছরের বৃদ্ধ জাহির আলীকে ফিকল (বল্লম জাতীয় অস্ত্র) দিয়ে পেটে আঘাত করে হত্যা করে। আর, এ হত্যাকা-ে সরাসরি অংশ নেয় নিহতের পুত্র আরশ আলী ও তার কয়েকজন আত্মীয়।
পরে, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতের লাশ ও ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করে। পরদিন, এ ঘটনায় নিহতের ছেলে আরশ আলী বাদি হয় প্রতিপক্ষের ৯২ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করে।
ঘটনার তদন্ত চলাকালে, বাদিপক্ষের লোকজনের কথাবার্তা সন্দেহ দেখা দিলে গত ২২ এপ্রিল বাদিপক্ষের মিসবাহ উদ্দিনকে আটক করে পুলিশ। তাদেরকে ব্যাপক জিজ্ঞাবাদ বেড়িয়ে আসে চাঞ্চল্যকর অনেক তথ্য। এরপর, গত ২৩ এপ্রিল বাদি পক্ষের সামছুল হক ও জিলু মিয়াকে আটক করে পুলিশ। ২৪ এপ্রিল তারা আদালতে ১৬৪ ধারা জবানবন্দিতে জানায়, প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতেই আরশ আলী আত্মীয়স্বজনদের সহায়তায় পিতা জাহির আলীকে হত্যা করে খুনের নাটক সাজিয়েছিলো। এ ঘটনায় ছেলেসহ বাকি ঘাতকরা পলাতক রয়েছেন। পুলিশ তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে বলে জানান পুলিশ সুপার।
এদিকে বাঁশডর গ্রামবাসী বলছেন এ হত্যাকা-ে নেতৃত্ব দেয় আরশ আলীর ভাই বহুরূপী আবুল। সিএনজি চালককে হত্যার চেষ্টা অভিযোগে তাকেও খুঁজছে পুলিশ। বৃদ্ধ জাহির আলী হত্যার রহস্য উদঘাটন হওয়ায় মিথ্যা ও হয়রানী মূলক হত্যা মামলা থেকে মুক্তি পাবে ৯২ নিরিহ লোক।
নবীগঞ্জের সুশীল সমাজও সচেতন মানুষ মনে করছেন আবুলকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসলে এ ধরণের সহিংসতা থেকে মুক্তি পাবে গ্রামবাসী।
Leave a Reply