নবীগঞ্জে দু’পক্ষের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে নিহত ১।। বাড়ি ঘরে হামলা ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগ ।। নগদ টাকা ও স্বর্নালংকার লুট।। আটক ৩

নবীগঞ্জ ( হবিগঞ্জ)থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা :নবীগঞ্জে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে মৃত কদর উল্লার পুত্র মন মিয়া (৬০) নামের এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (৩০ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে ইনাতগঞ্জ এ ঘটনা ঘটে।
এলাকাবাসী জানায়, নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের মোস্তফাপুর গ্রামে মৃত তকমদ উল্লার পুত্র সাবেক ইউপি সদস্য সাফু আলম ও  একই গ্রামের মৃত কদর আলীর পুত্র নুর আলীর মধ্যে পূর্ব শত্রুুতার জের ধরে বিরোধ চলে আসছে। গত এক সপ্তাহ ধরে বিরোধ চরম আকার ধারন করে। এর জের ধরে গতকাল শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১ টার সময় দু পক্ষের লোকজনের মধ্যে  ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। প্রায় আধা ঘন্টা ব্যাপী চলা সংঘর্ষে দেশীয় অস্ত্র ও ইটপাটকেল ব্যবহ্রিত হয়।
সংঘর্ষে উভয় পক্ষের প্রায় ৩০/৩৫ জন আহত হয়। গুরুতর আহত মন মিয়াকে  স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথিমধ্যে তার মৃত্যু হয়।
সাফু মিয়ার পক্ষে আহতরা হলেন,আনু মিয়া(৫০),মোস্তাকিন মিয়া(৩০),ইমাদ আহমেদ(৯),আলমগীর মিয়া((৩৫),দিলকাছ মিয়া(৩৪),ডালিম আহমেদ(৩০),সোহেল আহমেদ(৩৪)।
নুর আলী গ্রুপের আহতরা হলেন,রুনু মিয়া(৩৫),মোদাব্বির মিয়া(২৫),রুবেল মিয়া(২০),রুমন মিয়া(২৪),ফুলজার মিয়া(২০),মানিক মিয়া(৩৮),নুর আমিন(৪০),উছমান মিয়া(১৬),রুমেল মিয়া(১৯),রুহেনা বেগম(৩৫),সাইফুল ইসলাম(৩০)। উভয়ই সিলেট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এদিকে সাবেক ইউপি সদস্য সাফু আলম বেলা ১ টার দিকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আহতদের দেখতে গেলে ওসমানী হাসপাতালের দায়িত্বরত এসআই ফিরোজ অপর পক্ষের অভিযোগে ভিত্তিতে সাফু আলমসহ তিনকে আটক করেছেন। অপর ২ জন হলেন মোস্তফাপুর গ্রামের কয়ছর উল্লার পুত্র ফয়সল মিয়া(২৪) ও একই গ্রামের মৃত জব উল্লার পুত্র আনু মিয়া(৫০)।
এসআই ফিরোজ মিয়ার বরাতে ইনাতগঞ্জ ফাঁড়ির ইনচার্জ আলমগীর কবির জানান আটক ৩ জনের মধ্য পুলিশ নজর দারিতে আনু মিয়ার চিকিৎসা চলছে। অপর ২ জনকে সিলেট কতোয়ালী থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। আটককৃতদের নিয়ে আসতে এসআই অনিককে সিলেট পাঠানো হয়েছে।
অপরদিকে বৃদ্ধ মন মিয়ার মৃত্যু সংবাদ গ্রামের বাড়িতে আসলে নিহত মন মিয়া ও নুর আলী পক্ষের লোকজন সাবেক ইউপি সদস্য সাফু আলমের বাড়িসহ ১০/ ১২টি বাড়ি ঘর ও আসবাবপত্র ভাংচুর করেছে। এতে ক্ষতির পরিমান প্রায় অর্ধ কোটি টাকা হবে বলে জানান ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন। হামলা ভাংচুরের পর জানু মিয়ার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেন নুর আলী পক্ষের লোকজন।
সাফু আলমের স্ত্রী লিপি বেগম বলেন,তারা গ্রামের বাড়িতে থাকেননা। বিগত কয়েক বছর ধরে সিলেট শহরে ভাড়া বাসায় থাকেন। ঘটনার দিন তার স্বামী সাফু আলম সিলেট বাসায় ছিলেন। সংঘর্ষের খবর পেয়ে তিনি  আহতদের দেখতে ওসমানী হাসপাতালে গেলে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।  তিনি বলেন ঘটনার পর তারা আমাদের গ্রামের বাড়িতে হামলা করে ভাংচুর টাকা পয়সাসহ স্বর্নালংকার লুটপাট করেছে। ঘরের সব জিনিস পত্র তছনছ করেছে। ক্ষতির পরিমান হবে ৩০/৩৫ লক্ষ টাকা।
নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাসুক আলী ঘটনা স্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেন,   শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১ টার সময়  আধিপত্য নিয়ে দুই গ্রুপে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে মন মিয়া নামে এক বৃদ্ধ মারা গেছেন। এখনো মামলা হয়নি। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ জাতীয় আরো খবর..

ফেসবুকে আমরা