এম.মুজিবুর রহমান,নবীগঞ্জ থেকে ॥ হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামে ১৩টি ঘরে অগ্নিসংযোগ,ভাংচুর, লুটপাট নারকীয় তাণ্ডবের ঘটনায় নবীগঞ্জ থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে। ৫৪ ধারায় আটককৃতদের গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
সোমবার (৩১ মে) দুপুরে আসামীদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- উপজেলার গজনাইপুর ইউনিয়নের বহুল আলোচিত পাহাড়ী অঞ্চলের সাতাইহাল গ্রামের মৃত কুতুব মিয়ার ছেলে লেবু মিয়া (৩০), লেদু মিয়া (৩৫), মৃত আব্দুস সহিদের ছেলে নাঈম মিয়া (১৯), মৃত হাজী মৌলাবক্সের ছেলে মুহিবুর রহমান মানিক (৪৩), মৃত বাদশা মিয়ার ছেলে জলফু মিয়া (২৬), মৃত হাসিম উল্লার ছেলে রকিব উল্লাহ (৫০), মৃত আব্দুদ সহিদের ছেলে মামুন মিয়া (২০) ।
জানা যায়, গত (২৬ মে) রাতে নোয়াগাঁও গ্রামের রোক্কা বিলে অবস্থিত উপজেলার গজনাইপুর ইউনিয়নের সাতাইহাল গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা নুর উদ্দিনের ফিশারিতে পাহাড়াদার আবুল মিয়া ও তার স্ত্রী জারু বেগমকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় নোয়াগাঁও গ্রামের ৭ জনকে আসামী করে নবীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। এ ঘটনার জের ধরে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। বিষয়টি আগে থেকে অবগত হয়ে গত রবিবার (৩০ মে) সকালে এক বৈঠকে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মহি উদ্দিন, নবীগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ ডালিম আহমেদ সাতাহাইল গ্রামের লোকজনকে কোনো ধরণের সহিংসতায় না জড়াতে অনুরোধ করেন। প্রশাসনের সাথে সাতাইহালের নেতৃত্ব স্থানীয়দের বৈঠক চলাকালিন সময় সাতাইহাল গ্রামের লোকজন নোয়াগাঁও গ্রামে হামলা করে নারকীয় তাণ্ডব চালায়৷
নোয়াগাঁও গ্রামবাসীর অভিযোগ, গত রবিবার (৩০ মে) সকালে সাতাইহাল ৬ মৌজার কয়েক হাজার লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে নোয়াগাঁও গ্রামে হামলা করে লুটপাট,বাড়ি-ঘরে অগ্নি সংযোগ, ভাংচুর করে । এতে প্রায় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয় বলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার গুলো দাবী করেন। খবর পেয়ে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মহি উদ্দিন বিপুল সংখ্যাক পুলিশ,র্যাবসহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। রাতেই জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে চাল,নগদ অর্থ,টিন দেয়া হয়। পরবর্তীতে বিশৃঙ্খলা এড়াতে ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে রবিবার (৩০ মে) রাতে নবীগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ ডালিম আহমেদের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে ৭ জন দাঙ্গাবাজকে আটক করা হয়। সোমবার (৩১ মে) দুপুরে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে আসামীদের জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।
এদিকে নোয়াগাঁও গ্রামের মাদ্দক মিয়া অভিযোগ করে বলেন, আমি ও আমার ৫ ভাই কেউই নুর উদ্দিনের মামলায় আসামী নই তারপরও সাতাইহাল গ্রামের লোকজন আমাদের ৫টি ঘর,রক্ষিত ধান অনেক গুরুত্বপূর্ণ দামী জিনিস পত্র পুড়িয়ে ছাঁই করে দিয়েছে।
অপরদিকে মুক্তিযোদ্ধা নুর উদ্দিন বলেন, নোয়াগাঁও গ্রামে সাতাইহাল গ্রামের কেউ হামলা করেনি। আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। তবে বক্তব্যকে হাস্যকর বলে দাবী করছেন নোয়া গাঁও গ্রামের লোকজন৷
এদিকে এই অগ্নিসংযোগের ঘটনায় সোমবার রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা দায়ের করা খবর পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ডালিম আহমেদ বলেন, মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ৫৪ ধারায় তাৎক্ষণিক গ্রেফতারকৃতদের জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
Leave a Reply