শাহ এস এম ফরিদ::অব্যাহত বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের পানিতে মৌলভী বাজার ও সিলেটের ন্যায় জগন্নাথপুর ও নবীগঞ্জের কুশিয়ারা নদীর তীরবর্তী জনপদ সহ কয়েকটি ইউনিয়ন এবং ইনাতগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ী বন্যা কবলিত হয়ে পড়ছে । গত দুই দিন ধরে অব্যাহত পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জগন্নাথপুর ও নবীগঞ্জ উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের তীরবর্তী এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার রাত থেকে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বন্যার পানিতে বিভিন্ন গ্রাম প্লাবিত হওয়ায় এসব এলাকার অধিকাংশ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। উপজেলার অধিকাংশ রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে। এর ফলে বিভিন্ন স্থানের সাথে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। জগন্নাথপুর উপজেলার পাইলগাঁও, আশার কান্দি, রানীগঞ্জ ও নবীগঞ্জের দীঘলবাক ও ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের বসবাসরত শতশত পরিবার পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। ইনাতগঞ্জে পানিবন্দি গ্রামগুলো হচ্ছে ইনাতগঞ্জ
পুলিশফাঁড়ী,,দিগীরপাড়,লালাপুর,মোস্তফাপুর,তপথিবাগ,পাঠানহাটি,মনসুরপুর,বাউরকাপন,লতিবপুর,নোয়াগাঁও,প্রজাতপুর,দক্ষিণগ্রাম,কইখাই,উমরপুরসহ প্রায় ১৫/২০টি গ্রাম। এদিকে পাইলগাঁও ইউনিয়নের মশাজান, সুনাতলা ও নতুন কসবা গ্রামের সড়কের উপর দিয়ে গত দুই দিন ধরে পানি বৃদ্ধি পেয়ে কাতিয়া,পূর্ব-জালালপুর, আলাগদি, সোনাতলা, কদমতলা, জালালপুর, পুরাণ আলাগদি, খানপুর, জায়ফরপুর ও আলীপুর গ্রাম সহ গোটা এলাকায় বন্যা দেখা দিয়েছে।
আশার কান্দি ইউনিয়নের বড় ফেছি বাজার সংলগ্ন জগন্নাথপুর-বেগমপুর সড়কের উপর দিয়ে কুশিয়ারা নদীর পানি প্রবেশ করে এলাকার গ্রাম সমূহ প্লাবিত হচ্ছে। এছাড়াও হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার দীঘলবাক ইউনিয়নের দীঘলবাক,জামারগাঁও,রাধাপুর,পেছি বাজার,ফাদুল্লা,কুমারকাদা,কসবা,চরগাঁওসহ প্রায় ২০টি গ্রাম বন্যার পানি গ্রাস করেছে। ইতিমধ্যে পানিবন্দি হওয়ায় বেশ কয়েকটি পরিবার নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য বসতবাড়ি ছেড়ে আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। আর অনেক পরিবার ঘরের ভেতর বাঁশ দিয়ে মাছাও তৈরী করে অজানা আতংকে বসবাস করছেন। ঈদের দিন থেকে ক্রমশই পানি বৃদ্ধি পেতে চলছে।
এলাকার জনসাধারণ ২০০৪ সালের ভয়াবহ বন্যার আলামত হিসেবে বর্তমান পরিস্থিতিকে দেখছেন। কুশিয়ারা নদীর তীরবর্তী জনপদ সহ প্রতিটা এলাকায় বন্যা আতঙ্ক বিরাজ করছে। ইনাতগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ীর পুলিশ ইন্সপেক্টর সামছুদ্দিন খাঁন জানান,শনিবার বিকেলে অফিসের ভেতরে পানি প্রবেশ করেছে। তপথিবাগ গ্রামের শেখ ফরিদ জানান,রাতে ঘুমিয়ে ছিলাম। সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি উঠানে পানি। পানি কমার কোন লক্ষন নেই। সময় যথই যাচ্ছে,ক্রমান্বয়ে পানি বাড়ছে। লালাপুর গ্রামের দিলদার হোসেন বলেন,সকাল থেকেই গ্রামে উঠানে পানি প্রবেশ করেছে।
যে ভাবে পানি বাড়ছে,রাতের মধ্যেই ঘরে প্রবেশ করবে। পরিবার নিয়ে অজানা আতংকের মধ্যে রয়েছেন বলে তিনি জানান। এদিকে পানি বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে কুশিয়ারা নদীর তীরবর্তী জনপদের বসতবাড়ি সহ উপরোক্ত দুই উপজেলার কয়েক হাজার মানুষ পানি বন্দি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, বন্যা কবলিত দুর্গত এলাকায় এখন পর্যন্ত কোন ত্রাণ সামগ্রী এসে পৌছেনি। জরুরী ভিত্তিতে এসব এলাকায় ত্রাণ সামগ্রী বিতরনের দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
Leave a Reply