নবীন, নোয়াখালী প্রতিনিধিঃচট্টগ্রামে মারা যাওয়া নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা মমতাজ বেগম (৩০) এর করোনা প্রজেটিভ এসেছে। নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে মৃত নারীর পরিবারের আরও দুই সদস্যের। লকডাউন করা হয়েছে তার গ্রামের বাড়ী। ওই নারীর মৃত্যুর বিষয়টি গোপন করে লাশ দাফন করায় এলাকার লোকজনের মধ্যে আতংক বিরাজ করছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফয়সাল আহমেদ বাড়ীটি লকডাউন ঘোষণা করেন। নিহত মমতাজ বেগম কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরহাজারী ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের ডুবাই মসজিদ এলাকার মনাগো বাড়ীর শাহাব উদ্দিনের মেয়ে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ডুবাই মসজিদ এলাকার সাহাব উদ্দিনের ৩০বছর বয়সী প্রতিবন্ধী মেয়ে মমতাজ বেগমকে মার্চ মাসের প্রথম দিকে ফেনীতে একজন মানুষিক চিকিৎসক দেখিয়ে বাড়ীতে নিয়ে আসা হয়। এরপর থেকে সে বাড়ীতে ছিল। কিন্তু গত ১৪এপ্রিল বুধবার চট্টগ্রাম থেকে মমতাজের লাশ বাড়ীতে আনা হয়। পরে পারিবারিক কবরস্থানে মমতাজের লাশ দাফন করা হয়।
মৃতের ভাই মহসিন বলেন, মমতাজের চোখে সমস্যা থাকায় গত ২৩মার্চ তাকে চট্টগ্রামের নিমতলা বিশ্ব রোড এলাকার তার বড় বোনের বাসায় নেওয়া হয়। পরদিন ২৪মার্চ পাহাড়তলী চক্ষু হাসপাতালে নিয়ে তাকে ডাক্তার দেখানো হয়। চিকিৎসককে দেখানোর পর বোনের বাসায় ছিল সে। গত ১৩এপ্রিল মঙ্গলবার সকালে মমতাজ অসুস্থ বলে তার বড় বোন তাকে মোবাইলে জানান। ওইদিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মারা যায় মমতাজ। বুধবার মমতাজের লাশ গ্রামের বাড়ীতে এনে দাফন করা হয়।
তিনি আরও জানান, যদিও তার শরীরে করোনার কোন উপসর্গ ছিলনা তারপরও স্থানীয় একটি সরকারি হাসপাতালের সহযোগিতায় মমতাজের শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। ওই হাসপাতালের মাধ্যমে নমুনা বাংলাদেশ ইনস্ট্রিটিউট অব ট্রফিক্যাল এন্ড এনফেকসাস ডিজিস (বিআইটিআইডি) চট্টগ্রামে পাঠানো হয়। ১৫ এপ্রিল বুধবার চট্টগ্রাম থেকে জানানো হয় মমতাজের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ সেলিম বলেন, মৃত মমতাজের করোনা শনাক্তের বিষয়টি তিনি চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন থেকে নিশ্চিত হয়েছেন। মমতাজের সংস্পর্শে আসা তার বাবা সাহাব উদ্দিন ও ভাই মহসিনের শরীর থেকে বৃহস্পতিবার দুপুরে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার জন্য বিআইটিআইডি পাঠানো হয়েছে।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফয়সাল আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মৃত মমতাজের বাড়ীটি লকডাউন ঘোষণা করে প্রশাসনের নজরধারীতে রাখা হয়েছে। তার পরিবারের দুই জনের নমুনা সংগ্রহ ও পরিবারের সকল সদস্যদের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট আসলে ফলাফল দেখে পরবর্তীতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply