জামাল আহমেদ ভৈরব প্রতিনিধি ॥ ভৈরবে নমুনার রিপোর্ট পেতে দীর্ঘ সূত্রিতায় জনমনে আতঙ্ক । সারাদেশে করোনা মহামারীর সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারের পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে । করোনার উপসর্গ দেখাদিলে নিকটস্থ হাসপাতালে গিয়ে করোনা ভাইরাসের নমুনা দেয়ার জন্য সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষা থেকে নির্দেশনা জারি করা হয়েছে এবং রাজধানীসহ দেশের সকল বিভাগ ,জেলা এমনকি উপজেলাতে ও করোনার নমুনা বিনামূল্যে সংগ্রহ ও পরীক্ষার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে । সেই সাথে জনগণকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রয়োজনে ঘর থেকে বের না হওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে । মানুষ যেন আতঙিকত না হয়ে সচেতন হয় এবং করোনার পরীক্ষা করে নিজেকে চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ করে তোলে । কিন্ত করোনার নমুনা সংগ্রহের জন্য ভৈরবে ট্রমা সেন্টারে আইসোলেশন ইউনিট গঠন করে নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে প্রথম পর্যায় থেকেই । তবে ভৈরবে প্রথমে গত ৮ এপ্রিল ভৈরব থানার উপ-পরিদর্শক চানঁ মিয়ার করোনা ধরা পড়ে । পরে আস্তে আস্তে এর সংক্রমণ বাড়তে থাকে । নমুনা সংগ্রহের শুরুর দিকে ভৈরবে অনেকেই নমুনা দিতে তেমন একটা আগ্রহ দেখা দেয়নি । মানুষ মনে করতো করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে জানাজানি হলে সামাজিকভাবে হেয় হতে হবে এমন একটা নেতিবাচক ধারণা ছিলো । কিন্ত আস্তে আস্তে যখন আক্রান্তের বাড়তে লাগলো দেখা গেলো পুলিশ,চিকিৎসক,প্রশাসনিক কর্মকর্তা,ব্যবসায়ী ও রাজনীতিক ব্যক্তিরা আক্রান্ত থেকে রেহাই পাচ্ছেনা । তারপর মানুষের মধ্যে থেকে ভয়টা কাটতে লাগলো । আগে ভৈরবে প্রতিদিন যেখানে ১০/১৫ জন নমুনা দিতো । এখন দেখা যাচ্ছে ১শর উপরেও নমুনা সংগ্রহ হচ্ছে । যা কি না বিশ্লেষণে ইতিবাচক দিক বলে মনে হয় । কিন্ত এখন নমুনা সংগ্রহ বাড়ার ফলে নমুনার রিপোর্ট পেতে দীর্ঘ সূত্রিতার কারণে নমুনা দেওয়া লোকজন আতঙ্কে ও উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে । কারণ হিসেবে দেখা গেছে নমুনা দিয়ে আসা ব্যক্তিরা পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ১৪ দিন পর্যন্ত হোম কোয়ারেন্টাইন বা আইসোলেশনে থাকতে হয় । আবার দেখা গেছে দীর্ঘ সূত্রিতায় রিপোর্ট পেতে অনেকের স্বাস্থ্যগত অবস্থার অবনতি ঘটে । তাই যারা নমুনা দিয়ে আসেন তারা মনে করেন ২ /১ দিনের ভিতর রিপোর্টটি হাতে পেলে তারা মনে শান্তি পায় । রিপোর্ট পজেটিভ এলে দ্রƒত চিকিৎসা সেবা নিতে পারে । তাই তারা মনে করেন বর্তমানে নমুনা সংগ্রহের চাহিদা বাড়ায় দ্রƒত রিপোর্ট দেয়ার ব্যবস্থা নিতে হবে স্বাস্থ্য বিভাগ কে । যাতে মানুষ আতঙ্ক আর উৎকণ্ঠা থেকে বেরিয়ে আসতে পারে । এরফলে মৃত্যু ঝুকিঁ ও কমবে ।ূ
এ বিষয়ে নমুনা দেওয়া ভৈরব পৌর আওয়ামীলীগ সাধারন সম্পাদক আতিক আহমেদ সৌরভ জানান, গত ৮ জুন তার পরিবারের সদস্যর ভৈরব ট্রমা সেন্টারে গিয়ে নমুনা দিয়ে আসেন । কিন্ত এখনো পর্যন্ত নমুনার রিপোর্ট পাননি । নমুনার রিপোর্ট পেতে এত দীর্ঘ সময় লাগলে অনেকেই আতঙ্কেই মারা যাবে । মারা যাওয়ার পর রিপোর্ট পজেটিভ বা নেগেটিভ যা ই আসুক তাতে কোন কাজে আসবেনা । তাছাড়া তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে আরো বলেন, াাগে নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় প্রেরণ করতো । কিন্ত এখন কিশোরগঞ্জ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নমুনা পাঠানো হয় । যাতে মানুষ দ্রƒত রিপোর্ট পায় । প্রথম দিক দিয়ে নমুনা পাঠানোর পরদিন কিশোরগঞ্জ থেকে রিপোর্ট পাওয়া যেতো । কিন্ত এখন কি কারণে রিপোর্ট আসতে দেরী কেন ? ভৈরবে এ পর্যন্ত ১৮শ ৯১ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে । আক্রান্ত হয়েছে ৩শ ৪৯ জন ,মৃত্যু বরণ করেছে ৬ জন এবং উপসর্গ নিয়ে মারা গেছে আরো ১৭ জন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব ডাঃ বুলবুল আহমেদ ।
এ বিষয়ে পৌর নিউমার্কেট ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সহ-সভাপতি মোঃ সাইফুল ইসলাম জানান, তিনি গত ৫ জুন ভৈরব ট্রমা সেন্টার হাসপাতালে নমুনা দেন । কিন্ত ৫ দিন পর রিপোর্ট পান । রিপোর্ট পেতে যদি ৫ দিন সময় লাগে তাহলে এ ৫ দিন তো আমি জানিনা আমি আক্রান্ত কি না । জানিনা বিধায় আমি তো বিভিন্ন কাজে বাইরে যাচ্ছি বিভিন্ন মানুষের সাথে কাজ করতে গিয়ে মনের অজান্তে হয়তো আমার দ্বারা অন্য কেউ আক্রান্ত হতে পারে । তাই নমুনার রিপোর্র্ট দ্রƒত দ্রƒত দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে । তাছাড়া তিনি আরো বলেন,কিশোরগঞ্জ জেলার মধ্যে ভৈরবে সর্বোচ্চ আক্রান্ত । তাই ঢাকায় রিপোর্ট আসতে বিলম্ব হতো বিধায় । এখন কিশোরগঞ্জে পরীক্ষা করা হচ্ছে । কিন্ত এখন মনে হচ্ছে কিশোরগঞ্জ থেকে বিমাতা সূলভ আচরণ করা হচ্ছে ভৈরববাসীর সাথে ।
এ বিষয়ে ভৈরব উপজেলা করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব ডাঃ বুলবুল আহমেদ জানান, জেলাতে প্রতিদিন ৩শ/ সাড়ে ৩শ নমুনা সংগ্রহ করা হয় । কিন্ত প্রতিদিন ৯৪টি নমুনার রিপোর্ট দিতে পারে কিশোরগঞ্জ । আর বাকিগুলো ঢাকায় পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় । তবে তিনি স্বীকার করে আরো জানান, গত ৮,১০,১১,১২ ও ১৩ জুনের নমুনার রিপোর্ট পেন্ডিং আছে ।
Leave a Reply