২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস কোর্সের প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় মেধাক্রমে ৩৭৯৫তম হয়ে জামালপুরের শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন মিরাজ। ভর্তি পরীক্ষায় ১০০ নম্বরের মধ্যে তিনি পেয়েছেন ৬৯.৫ নম্বর। তবে অভাবের সংসারে তার মেডিকেলে লেখাপড়া নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছিল।
এ নিয়ে গত ৮ এপ্রিল ‘সন্তানের মেডিকেলে ভর্তি নিয়ে দিনমজুর বাবার আকুতি’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খানের নজরে আসলে তিনি মিরাজ ও তার পরিবারকে নিজ কার্যালয়ে ডেকে নেন।
মো. ফিরোজ উদ্দিন ও মালেকা বেগমের দুই ছেলে ও তিন মেয়ের মধ্যে দ্বিতীয় সন্তান মো. মিরাজ। তিনি এ বছর এইচএসসি পরীক্ষায় নোয়াখালী ন্যাশনাল মডেল কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। তাদের বাড়ি নোয়াখালী সদরের দক্ষিণ চর শুল্লাকিয়া গ্রামে। তার বাবা ইটভাটায় দিনমজুরের কাজ করেন। দিনশেষে যা রোজগার করেন তা দিয়েই চলে সংসার। মিরাজের মা মালেকা বেগম গৃহিণী। মিরাজের বড় ভাই রিয়াজ উদ্দিন পড়ালেখার পাশাপাশি টিউশনি করে তার পড়ালেখার খরচ চালাচ্ছেন।
মিরাজ বলেন, আমি মেডিকেলে ভর্তি নিয়ে চিন্তায় ছিলাম। এখন আমার ভর্তির চিন্তা কেটে গেছে। আল্লাহর দুনিয়ায় ভালো মানুষের অভাব নেই। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান স্যার আমার মেডিকেলে ভর্তি ফি ও বইপত্রের খরচ হিসেবে ৩৫ হাজার টাকা দিয়েছেন। তিনি আমার লেখাপড়ার জন্য আর্থিক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান বলেন, প্রকাশিত সংবাদটি দেখে আমি মিরাজ ও তার পরিবারকে ডাকি। তারা গাভি বিক্রি করে মিরাজকে মেডিকেলে ভর্তির কথা আমাকে জানায়। আমি মানবিক বিবেচনায় মিরাজের মেডিকেলে ভর্তি ও লেখাপড়ার দায়িত্ব নিয়েছি। তাদের আর্থিক অবস্থার বিস্তারিত জেনে নিজ উদ্যোগে মিরাজের পরিবারের হাতে ৩৫ হাজার টাকা দিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, আমি দোয়া করি মিরাজ একদিন মানবিক ডাক্তার হয়ে দেশের অসহায় মানুষগুলোর পাশে দাঁড়াবে। মিরাজের মেডিকেলে লেখাপড়ার জন্য আর্থিক সহায়তা করব। সরকারি প্রকল্পের আওতায় মিরাজের মাকে গাভি কিনে দেওয়ার আশ্বাস দেন জেলা প্রশাসক।
Leave a Reply