নবীগঞ্জ ( হবিগঞ্জ) থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা :ষষ্ঠীপূজার মধ্য দিয়ে বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব আজ রোববার থেকে শুরু হয়েছে। শাস্ত্র মতে, কন্যারূপে দেবী দুর্গা প্রতিবছর কৈলাস থেকে মর্ত্যে বাপের বাড়িতে আসেন। এ বছর দেবী গজে (হাতি) চড়ে আগমন করছেন এবং বিদায় নেবেন দোলায় (পালকি) করে।
নবীগঞ্জ উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার ৯টিসহ মোট ৯৩টি পূজামণ্ডপে এবার দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রতিটি মণ্ডপে প্রতিমা তৈরির কাজ ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে। দিন-রাত নিরলস পরিশ্রমে কারিগররা আনন্দময়ীর আগমনকে বরণ করে নিতে ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন।
হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় এ উৎসবকে ঘিরে নবীগঞ্জসহ হবিগঞ্জ জেলার সর্বত্র এখন সাজসাজ রব। ধনী-গরিব, আবালবৃদ্ধ নির্বিশেষে ভক্ত-পূজারীদের মাঝে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। শুধু ধর্মীয় আবহই নয়, সামাজিক সংগঠন ও স্থানীয় মানুষের মাঝেও দেখা দিয়েছে সমান উৎসাহ ও উদ্দীপনা।
শাস্ত্র অনুযায়ী, দেবীর গজে আগমন ও দোলায় গমন সমৃদ্ধি ও শস্যপূর্ণ বসুন্ধরার প্রতীক। অসুর শক্তির বিনাশ এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার বাণীই হলো দুর্গোৎসবের মূল লক্ষ্য।
এবারের দুর্গোৎসব সুন্দর ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে নবীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ এবং স্বেচ্ছাসেবকরা কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে।
প্রতিটি মণ্ডপে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে এবং
প্রতিটি মণ্ডপে ৬ জন করে আনসার এবং ঝুঁকিপূর্ণ মণ্ডপে ৮ জন আনসার সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবেন।
ইতোমধ্যে উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশের উদ্যোগে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রুহুল আমিন জানান, সব মণ্ডপে সরকারি বরাদ্দ পৌঁছে দেওয়া হবে এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা থাকবে।
নবীগঞ্জ থানার ওসি শেখ কামরুজ্জামান বলেন, প্রতিটি ইউনিয়নে পুজারীদের নিয়ে প্রস্তুতি সভা করা হয়েছে। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ নবীগঞ্জ শাখার সাধারণ সম্পাদক উত্তম কুমার পাল হিমেল বলেন, ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। এ উৎসবকে ঘিরে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অটুট থাকবে।
আজ রবিবার ষষ্ঠীপূজার মধ্য দিয়ে নবীগঞ্জে দুর্গোৎসব শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে পূজা সম্পন্ন হবে।
সারা দেশের মতোই নবীগঞ্জেও দুর্গাপূজা উপলক্ষে সর্বত্র এখন উৎসবের আবহ বিরাজ করছে। ভক্তদের ভক্তি, শিল্পীদের সৃজনশীলতা ও প্রশাসনের সুষ্ঠু প্রস্তুতিতে এ উৎসব হয়ে উঠেছে বর্ণিল ও আনন্দমুখর।
Leave a Reply