সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:: সুনামগঞ্জ ব্যাপক উৎসাহ উদ্দিপনার মধ্যে দিয়ে পৌর নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নাদের বখত বিশাল ভোটের ব্যবধানে ২য় বারের মত বিজয়ী হয়েছেন। তিনি ২১ হাজার ৬৮৬ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী মোর্শেদ আলম ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে ৫ হাজার ৮৭০ ভোট পেয়েছেন। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী রহমত উল্লা হাত পাকা মার্কায় পেয়েছেন ২৩১৪ ভোট। শনিবার রাতে জেলা নির্বাচন অফিসের সম্মেলন কক্ষে রিটার্নিং কর্মকর্তা শরীফুল ইসলাম এ ফলাফল ঘোষণা করেন। পৌরসভা নির্বাচনে মোট তিন জন প্রার্থী মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৪৯ জন ও সংরক্ষিত মহিলা আসনে ১৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দিতা করছেন। এ পৌরসভায় ভোটার রয়েছেন ৪৭ হাজার ১৫ জন কেন্দ্র রয়েছে ২৩ টি। এই পর্যন্ত সাধারণ কাউন্সিলর পদে যারা বিজয়ী হয়েছেন তারা হলেন, ১নং-ওয়ার্ডে আবুল হাসনাত মোহাম্মদ কাউছার , ২নং- ইয়াসিন নুর, ৩নং-মোশারফ হোসেন ৪নং- চঞ্চল কুমার লৌহ, ৫নং- গোলাম সাবেরীন সাবু, ৬নং- আবাবিল নুর, ৭নং- আহসান জামিল আনাছ, ৯নং- গোলাম আহমদ, ৮নং ওয়ার্ডে আহমেদ নুর । জেলা নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ মুরাদ উদ্দিন হাওলাদার জানান, পৌরসভায় সুষ্ঠু ভাবে সকাল ৮ থেকে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত শান্তিপুর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। কোথাও কোন অপ্রীতিকর কোন ঘটনা ঘটেনি।
ছাতক পৌরসভায় আওয়ামীলীগ প্রার্থী কালাম চৌধুরী বিজয়ী
ছাতক পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী, বর্তমান মেয়র আবুল কালাম চৌধুরী নৌকা প্রতীকে ১২হাজার ৮শ’২৩ভোট পেয়ে বেসরকারীভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির মনোনীত প্রার্থী রাশিদা বেগম ন্যান্সি ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন ৭হাজার ৯শ’ ৮ভোট। এ নিয়ে পৌরসভায় টানা চতুর্থবারের মতো মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন আবুল কালাম চৌধুরী। বেসরকারিভাবে প্রাপ্ত ফলাফলে নৌকা প্রতীকে আবুল কালাম চৌধুরী ৪ হাজার ৯শ’১৫ ভোট বেশি পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। এ পৌরসভায় মোট ভোটার ছিলেন ৩০হাজার ২শ’ ৮জন। আবুল কালাম চৌধুরী ২০০৪ সালের পৌর নির্বাচনে প্রথমবারের মতো ছাতা প্রতীক নিয়ে পৌর চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। দায়িত্বে ছিলেন ২০১১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। ২০১১ সালের নির্বাচনে আবুল কালাম চৌধুরী কাপ-পিরিচ প্রতীক নিয়ে পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হন এবং দায়িত্ব পালন করেন ২০১৬ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। পরবর্তীতে ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত পৌর নির্বাচনে দলীয় প্রতীক নৌকা নিয়ে তিনি ফের বিজয়ী হয়েছিলেন। শনিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত নিরবিচ্ছিন্নভাবে পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের ১৯টি ভোট কেন্দ্রের ৭৭টি ভোট কক্ষে চলে ভোটগ্রহণ। বড় রকমের কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই কড়া নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে উৎসবমূখর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটাররা স্বতস্ফুর্তভাবে স্ব স্ব পছন্দের প্রার্থীদের ভোট প্রদান করেন। দিনব্যাপী বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে নারী ভোটারদের উপস্থিতি বেশি দেখা গেছে। এছাড়া এখানে ৯টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেছেন ৪৭জন প্রার্থী। ছাতক থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ নাজিম উদ্দিন জানান, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে সবগুলো কেন্দ্রে সর্বক্ষণ কঠোর নজরধারী করেছে পুলিশ বাহিনী। ভোটগ্রহন সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত কোনো ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উপজেলা নির্বাচন অফিসার ফয়জুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও নির্বাচনের বিষয়ে কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
জগন্নাথপুর পৌরসভায় বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী আক্তার হোসেন বিজয়ী
জগন্নাথপুর পৌরসভার নির্বাচনের ভোটগ্রহন শনিবার বিকাল ৪টায় শেষ হয়েছে। প্রথমবমবারে মতো এই পৌরসভায় ইভিএম পদ্ধতিতে সকাল আট থেকে ভোট দেয়া শুরু হয়ে একটানা বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে। উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্র জানায়, এ পৌরসভার ভোটার ২৮ হাজার ৬শ’৪২ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ১৪ হাজার ৩শ ৯২ এবং নারী ভোটার ১৪ হাজার ২শ’ ৫০জন। মোট ভোট কেন্দ্র ১২টি। বিকালের প্রত্যেক ওয়ার্ডের প্রাপ্ত ফলাফলে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান মেয়র মিজানুর রশীদ ভূঁইয়া (নৌকা) প্রতিককে পরাজিত করে। সাবেক মেয়র ও সাবেক উপজেলা বিএনপির সভাপতি স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক আক্তারুজ্জামান আক্তার (চামচ) প্রতিক নিয়ে জয়লাভ করেন। বেসরকারিভাবে ঘোষিত ফলাফল অনুয়ায়ী, মোঃ আক্তার হোসেন, (স্বতন্ত্র চামুচ) ৮৩৭৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী। মো. মিজানুর রশিদ ভূঁইয়া, (আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী নৌকা)-৮০১৮ ভোট। মোট ভোট ২৮,৬৪২, মোট প্রদত্ত ভোট- ১৮১৮৮, মোট বৈধ ভোট -১৮২০৬, মোট বাতিল ভোট -১৮, প্রদত্ত ভোটের শতকরা হার-৬। ১ নং ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিল নির্বাচিত হয়েছেন শাহীন মিয়া,২ নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন জিতু মিয়া উট পাখি পাখি প্রতীকে ৪৬০ ভোট পেয়ে বেসরকারি ভাবে নির্বাচিত হন, ৩ নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন আলাল মিয়া, ৪ নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন কামাল হোসেন, ৫ নং ওয়ার্ডে বিপুল ভোটে আবারো কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন শফিকুল হক, ৬ নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন কৃষ্ণ চন্দ্র, ৭ নং ওয়ার্ডে দ্বিতীয় বারের মতো কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন সুহেল আহমদ। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী ছালিক আহমদ ডালিম প্রতিকে ভোট ৪৫৭ পেয়েছেন , ৮নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন ছাত্রলীগ নেতা সাফরোজ ইসলাম মুন্না, ৯ নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন ছমির উদ্দিন। উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারি রিটার্নিং অফিসার মুজিবুর রহমান বলেন, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে। বেসরকারিভাবে মো. আক্তার হোসেন, (স্বতন্ত্র চামুচ) ৮৩৭৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছে।
Leave a Reply