সুন্দরগঞ্জে স্বামীর উপর রাগ করে ৩৩ দিন বয়সের পুত্র সন্তান রেখে নিজের শরীরে আগুন দিলো মা 

ছাদেকুল ইসলাম রুবেল, গাইবান্ধাঃগাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জে তথ্য গোপন করে বিয়ে করার ক্ষোভে ৩৩ দিন বয়সের ছেলে সন্তান সৌরভ মিয়াকে রেখে নিজের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন মা আদুরী বেগম (২১)।
ঘটনাটি শনিবার রাত সাড়ে এগারোটার দিকে উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের রামধন (ফুলবাড়ি) গ্রামে ঘটেছে। পরে স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করালে কর্তব্যরত চিকিৎসক অবস্থা বেগতিক দেখে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রোববার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রের্ফাড করেন। আদুরী বেগম ঐ গ্রামের জহুরুল ইসলামের ছেলে মিজানুর রহমান মিজানের (২৮) দ্বিতীয় স্ত্রী। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
 তথ্যে জানা যায়, মিজানুর রহমান মিজান বছর খানেক আগে ভালো বেসে প্রথম স্ত্রী ও দুই ছেলে সন্তানের কথা গোপন রেখে দ্বিতীয় বিয়ে করেন আদুরী বেগমকে। আদুরী বেগমের কোলে ৩৩ দিন বয়সের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। আদুরী বেগম কুড়িগ্রাম জেলা সদরের বাসিন্দা বলে জানা যায়। বিয়ের পর থেকেই আদুরী বেগম তার বাবার বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। সেখানে যাতায়াত ছিলো মিজানের। এদিকে বিয়ের পর থেকেই আদুরী বেগম শ্বশুরালয়ে আসতে চাপ দিতেন স্বামীকে। মিজান বিভিন্ন টালবাহনা করে কাল ক্ষেপন করেন। অবশেষে ঘটনার দশ দিন আগে আদুরী আসেন স্বামীর এলাকায় এবং অবস্থান নেন মিজানের ফুফা আইনুল হকের বাড়িতে। আইনুল হকের বাড়ি রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলায়। পরে সেখান থেকে ঘটনার দিন বিকেলে আদুরী আসেন তার স্বামীর বাড়িতে। শুরু হয় সতীনে-সতীনে বাকবিতন্ডা। পরে প্রতিবেশিরা রাতে এসে উভয় পক্ষকে শান্ত করেন। আদুরী বেগমকে মিজানের বড় আম্মা জামেলা বেগমের ঘরে থাকতে বলেন এবং পরের দিন সকালে এ বিষয়ে আবারোও বসা হবে বলে জানান। কিন্তু ঘটনার রাতেই রাগে-ক্ষোভে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন আদুরী বেগম। পরে তার চিৎকার শুনে প্রতিবেশিরা ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (রমেক) পাঠান। অবস্থা বেগতিক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) রেফার্ট করেন।
মোবাইল ফোনে মিজান জানান, আমার অসুস্থ স্ত্রীর চিকিৎসা করাতে আমি ব্যাস্ত। পরে কথা বলবো এ বিষয়ে। আপনারা এলাকায় গিয়ে খোঁজ নেন। আমি দোষি হলে শাস্তি মাথা পেতে নিব।
ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করে সুন্দরগঞ্জ থানা ইনচার্জ (ওসি) এস.এম সোবহান বলেন, এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। তবে বিষয়টি শোনার পর নিজে ঘটনাস্থলে গিয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছি। এ বিষয়ে তথ্য উদঘাটনে ব্যাপক তৎপর রয়েছি আমরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ জাতীয় আরো খবর..

ফেসবুকে আমরা