নোয়াখালী থেকে নবীন::নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার চরজুবলী ইউনিয়নে গণধর্ষণের শিকার চার সন্তানের জননী হাসপাতাল থেকে বাড়ি যাওয়ার ছুটি পেয়েছে। বৃহস্পতিবার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শারীরিকভাবে অনেকটা সুস্থ্য থাকায় তাকে ছুটি দেন। তবে দীর্ঘ সতের দিন হাসপাতালের বেডে লড়াই শেষে বাড়ি যাওয়ার প্রস্তুতি নিলেও নিজ এলাকায় নিরাপত্তাহীনতার ভীতি তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে নির্যাতিতা ও তার পরিবারের সদস্যদের।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, গত ৩১ ডিসেম্বর গণধর্ষণের শিকার ওই নারী হাসপাতালে ভর্তি হন। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন ছিল। শুরুর দিকে শারীরিক বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরক্ষার মাধ্যমে গণধর্ষণের আলামতও পাওয়া যায়। পরবর্তীতে দীর্ঘ দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় বিভিন্ন মেডিকেল বোর্ডের মাধ্যমে তাকে সর্বোচ্চ চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। বর্তমানে তিনি আগের চেয়ে শারীরিকভাবে অনেকটা সুস্থ্য রয়েছেন। স্বাভাবিক খাওয়া-ধাওয়া ও নিজে নিজে চলাফেরা করতে পারছেন। সর্বশেষ পুনরায় মেডিকেল বোর্ড গঠন করে তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় তাকে ছুটি দেয়া হয়েছে। তবে আগামী ২ ফেব্রুয়ারি অর্থোপেডিক বিভাগে আবারও পরীক্ষা-নীরিক্ষা করা হবে। এছাড়া যেকোনো সমস্যা হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করারও আশ্বাস দেন।
এদিকে নির্যাতিতা ও তার পরিবারের সদস্যরা জানান, সকলের সার্বিক সহযোগিতায় নির্যাতিতা অনেকটা সুস্থ হলেও বাড়ি যাওয়ার পর নিরাপত্তা নিয়ে শংকা পাচ্ছেন। তবে পুলিশ প্রশাসন ওই নারীর সকল প্রকার নিরাপত্তা দেওয়ার কথা বললেও এ বিষয়ে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হয়নি কেউই।
প্রসঙ্গত; নির্যাতনের শিকার ওই নারী (৪০) গত ৩০ ডিসেম্বর রাতে ১০-১২ জনের একদল ঘরে ঢুকে প্রথমে স্বামী-স্ত্রী দুজনকে মারধর করে। পরে স্বামী ও সন্তানদের বেঁধে রেখে ওই নারীকে ঘরের বাইরে নিয়ে গণধর্ষণ করে। এ ঘটনায় ভিকটিমের স্বামী ৯ জনের নাম উল্লেখ করে গত ৩১ ডিসেম্বর চরজব্বর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার এজহারভূক্ত ছয়জন এবং তদন্তে ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত আরও পাঁচজনসহ মোট এগারজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে মোট আটজন আসামী।
Leave a Reply