এসটিভি ডেস্ক:: আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম আর নেই। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৬৭ বছর। আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া জানান,ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে থাইল্যান্ডের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার (৩ জানুয়ারি) দিবাগত রাত সাড়ে ৯টায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। শনিবার ( ৫ জানুয়ারি) বিকেলে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে সৈয়দ আশারফুল ইসলামের মরদেহ দেশে আসবে।
এর আগে গত ১৮ সেপ্টেম্বর সংসদ থেকে ছুটি নিয়েছিলেন সৈয়দ আশরাফ।প্রসঙ্গত, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ সদর ও হোসেনপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত কিশোরগঞ্জ-১ আসনে নৌকা প্রতীকে জয়ী হয়েছেন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। বৃহস্পতিবার সংসদ সদস্যদের শপথ গ্রহণের দিন থাকলেও বিদেশে চিকিৎসাধীন থাকায় তিনি শপথ নিতে পারেননি। শপথ গ্রহণের জন্য সময় চেয়ে তার পক্ষে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছে বৃহস্পতিবার চিঠি পাঠানো হয়।
উল্লেখ্য, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ১৯৫২ সালে ময়মনসিংহ শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা সৈয়দ নজরুল ইসলাম ছিলেন মুক্তিযুদ্ধকালীন মুজিবনগর সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক।
পারিবারিক ঐতিহ্যের সূত্র ধরেই তিনি ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। স্বাধীনতার পর বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-প্রচার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর কারাগারে বাবা সৈয়দ নজরুল ইসলামসহ জাতীয় চার নেতার নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর তিনি যুক্তরাজ্য চলে যান। প্রবাস জীবনে তিনি যুক্তরাজ্যে আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করার ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
এরপর ১৯৯৬ সালে দেশে ফিরে তিনি কিশোরগঞ্জ সদর আসন থেকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে প্রথমবার সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হন। এ সময় তিনি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।২০০১ সালের ১ অক্টোবরে অনুষ্ঠিত অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুনরায় তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
২০০৮ সালের নির্বাচনেও তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৪ সালেও নির্বাচিত হন সৈয়দ আশরাফ।এদিকে, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ২০০৯ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এরপর তাকে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে নির্বাচিত করা হয়।
সৈয়দ আশরাফের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
Leave a Reply