হবিগঞ্জ প্রতিনিধি::হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে ট্রিপল মার্ডারের ঘটনায় দায়েরকৃত দুই মামলায় ৪ জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। একই সাথে তাদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ২ বছরের সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন। বাকী আসামীদের বেখসুর খালাস দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় এ রায় দেন হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়েরা জজ এসএম নাসিম রেজা। যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন উপজেলার পুরান পাথারিয়া গ্রামের তোরাব আলী, সুরুজ মিয়া, আলী মোহাম্মদ ও করম আলী।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, পুরান পাথারিয়া গ্রামের আলী মোহাম্মদ এবং করম আলীর গোষ্ঠীর মধ্যে সম্পতি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। ১৯৯৮ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর সকালে করম আলীর গোষ্ঠীর সায়েদ বিরোধপূর্ণ পুকুরে হাত মুখ ধুতে যান। এ সময় আলী মোহাম্মদের সাথে কথা কাটিকাটি হয়। এর জের ধরে উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষে আলী মোহাম্মদ গোষ্ঠীর নুর মোহাম্মদ ঘটনাস্থলে মারা যান। করম আলী গোষ্ঠীর শামসুল হককে গুরুতর আহত অবস্থায় আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষনা করেন। অপর আহত আফিল উদ্দিনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান। নুর মোহাম্মদ হত্যা ঘটনায় আলী মোহাম্মদ বাদি হয়ে ১শ’ জনকে আসামী করে এবং অপর পক্ষ আফিল উদ্দিন ও শামসুল হক হত্যার ঘটনায় আতিকুনেচ্ছা বাদি হয়ে ৪৬ জনকে আসামী করে একই দিন বানিয়াচং থানায় পৃথক মামলা দায়ের করেন। উভয় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বানিয়াচং থানার তৎকালীন এসআই অমরেন্দ্র মল্লিক ১৯৯৯ সালের ১১ আগস্ট নুর মোহাম্মদ হত্যা মামলায় ১০৩ জনকে এবং আফিল উদ্দিন ও শামসুল হক হত্যা মামলায় ৬২ জনকে আসামী করে আদালতে চার্জশিট দেন। আদালত আফিল উদ্দিন ও শামসুল হক হত্যা মামলায় দীর্ঘ শুনানী শেষে ১৭ জনের মধ্যে ৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহন করে বৃহস্পতিবা এ রায় দেন। রায়ে তোরাব আলী, সুরুজ মিয়া ও আলী মোহাম্মদকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করেন। একই সাথে তাদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ২ বছরের সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন। অপরদিকে একই ঘটনায় দায়েরকৃত নুর মোহাম্মদ হত্যা মামলায় ১৬ জনের মধ্যে ১১ জনের সাক্ষ্য গ্রহন শেষে রায় দেন বিচারক। রায়ে করম আলীকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করা হয়। তাকেও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ২ বছরের সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন। রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল আহাদ ফারুক। তিনি রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
Leave a Reply