হোমনা(কুমিল্লা) প্রতিনিধি::কুমিল্লার হোমনায় উপজেলা নির্বাচনের তোড়জোড় শুরু হয়েছে। আগামী ১৮ মার্চে অনুষ্ঠিত হবে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন এ নির্বাচন নিয়ে গ্রাম গঞ্জে বইতে শুরু করেছে নির্বাচনী হাওয়া। ইতোমধ্যে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন পেতে ৮ প্রার্থী দৌড়ঝাঁপ ও লবিং-তদবির করে ব্যাস্থ সময় পাড় করছেন। হোটেল রেস্তোরায়,হাটে-ঘাটে,পাড়া-মহল্লায় ছোট ছোট টং দোকানে বসে চলছে নির্বাচনী আলোচনা। চায়ের দোকান গুলোতে নির্বাচনী আলোচনাকে কেন্দ্র করে বইছে তুমূল ঝড়। আলোচিত প্রার্থীদের নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইজ বুক সরব হয়ে উঠছে। বিভিন্ন অলিতে-গলিতে,মোড়ে-মোড়ে শোভা পাচ্ছে প্রার্থীদের প্রচারণার ব্যানার-ফেষ্টুন।
২০১৪ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান,ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বিএনপি থেকে নির্বাচিত হয়। কিন্তু এবারের নির্বাচনে বিএনপি দলীয় কোন প্রার্থীকে মাঠে দেখা যাচ্ছে না। ৩০ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে দলের ফল বিপর্যয়ের পর মনোবল হারিয়ে নীরবে-নিভৃতে সময় কাটাচ্ছেন বিএনপি নেতারা। জানা গেছে,নির্বাচন পূর্ব সহিংসতার অভিযোগে করা বিভিন্ন মামলায় জামিন নিয়ে এলাকায় আসলেও কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত মেনে নির্বাচনের কথা ভাবছেন না তাঁরা।
হোমনা উপজেলায় দীর্ঘ ৪৬ বছর পর আ’লীগের দলীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন নারী উদ্যোক্তা সেলিমা আহমান মেরী সিআইপি। সাধারণ জনগণের সাথে আলোচনা করে জানা গেছে, দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও উন্নয়নের স্বার্থে স্থনীয় রাজনীতিতে পরিবর্তনের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। সৎ,যোগ্য,নীতিবান,সকলের নিকট গ্রহনযোগ্য এবং এলাকার উন্নয়নে কাজ করবে পাশা পাশি সন্ত্রাস,ঘুষ-দূর্নীতি ও মাদক মুক্ত উপজেলা গঠন করবে এমন প্রার্থীই তাদের প্রত্যাশা।
আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশি চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসাবে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন- উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক এ.কে.এম সিদ্দিকুর রহমান আবুল, সহ সভাপতি শাহ আলম খন্দকার,সহ সভাপতি হাবিবুর রহমান, সহ-সভাপতি ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মো. ফজলুল হক মোল্লা, উপজেলা আ’লীগের সদস্য আলহাজ্ব রোস্তম আলম স্বপন, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মো. শহিদ উল্লাহ, কুমিল্লা উত্তর বঙ্গবন্ধু যুব পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক চেয়ারম্যান মো.খোরশেদ আলম,হোমনা উপজেলা বঙ্গবন্ধু যুব পরিষদেও সভাপতি সিরাজুল টম সুডেন, ও পূর্তগাল প্রবাসি মোহসিন হাবিব ভূইয়া।
এবারের নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন প্রত্যাশি উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক একেএম সিদ্দিকুর রহমান আবুল। তিনি ছাত্রজীবন থেকেই আওয়ামীলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এ ছাড়া তিনি হোমনা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি,হোমনা সরকারী ডিগ্রী কলেজ ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি (ভিপি),কুমিল্লা (উঃ) জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকও ছিলেন। রাজনৈতিক নানা প্রতিবন্ধকতার মাঝে ও নিজের যোগ্যতায় তার অবস্থান ধরে রেখেছেন তিনি। তাঁর রয়েছে একটি বিশাল কর্মীবাহিনী ও নিজস্ব ভোট ব্যাংক।
উপজেলা আ’লীগের সহ সভাপতি মো. শাহ আলম খন্দকার, তিনি বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সাবেক মহাসচিব এবং দলের একজন পরিছন্ন কর্মী। মো.হাবিবুর রহমান হাবিব দলের একজন নিবেদিত প্রান এবং কর্মী। বিগত সময়ে তিনি হামলা মামলার শিকার হয়েছেন। সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মো. ফজলুল হক মোল্লা তিনি ২০০৯ সালে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। কিন্তু ২০১৪ সালের নির্বাচনে একই পদে দলীয় কোন্দলের কারনে তিনি পাস করতে পারেনি। এবার চেয়ারম্যান পদে তিনিও মনোনয়ন পেতে লবিং করছেন।
আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশি উপজেলা আ’লীগের সদস্য আলহাজ্ব রোস্তম আলম স্বপন। তিনি উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি থাকাবস্থায় ২০০৯ সালের নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেন। পরে ২০১৪ সালের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে অংশগ্রহন করে মাত্র ৫৩ ভোট পান। পরবর্তীতে উপজেলা আ.লীগের সভাপতির মাধ্যমে আ’লীগে যোগদান করে সদস্য পদ লাভ করেন। এবার উপজেলা নির্বাচনে তিনিও আ’লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশি।
আরেক উপজেলা আ’লীগের সদস্য সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মো. শহিদ উল্লাহ তিনি দলের একনিষ্ট কর্মী ও প্রতিবাদী লোক হিসেবে পরিচিত। তিনি ব্যানার দিয়ে তার প্রার্থীতা জানান দিচ্ছেন। আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশি কুমিল্লা উত্তর জেলা বঙ্গবন্ধু যুবপরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক মো.খোরশেদ আলম তিনি আওয়ামীলীগের জন্য বহুবার মামলা হামলার শিকার হয়েছেন। উপজেলা জুড়ে রয়েছে তার ব্যাপক জনপ্রিয়তা। আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশি উপজেলা বঙ্গবন্ধু যুবপরিদের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম টম সুডেন,তার রয়েছে প্রতিটি ইউনিয়নে একটি কর্মীবাহিনী। বিগত সংসদ নির্বাচনে তিনি দলের পক্ষে গুরুত্ব পূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।
Leave a Reply