মোঃ জামাল মিয়া,ভৈরব (কিশোরগঞ্জ ) প্রতিনিধি॥ ২০ মার্চ প্রয়াত রাষ্ট্রপতি আলহাজ্ব জিল্লুর রহমানের ৫ম মৃত্যুবার্ষিকী। রাজনৈতিক জীবনে নিজ জন্মস্থান ভৈরবকে তিনি করেছেন গৌরবউজ্জ্বল। রেখে গেছেন অসংখ্য স্মৃতি। ২০০৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের ১৯ তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করার পর ৮০ বছর বয়সেও তিনি দাপটের সাথে দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম হয়।
তিনি রাজনীতির তৃণমূল থেকে সর্বোচ্চ পদে আসিন হন। তিনি জীবনের বেশীর ভাগ সময় রাজনীতিতেই ব্যায় করেছেন। কিন্তু শত চেষ্টা থাকা স্বত্বেও জীবনের শেষ ইচ্ছা ভৈরবকে জেলায় উন্নতি করে যেতে পারেননি তিনি। এতে নিজ জন্মস্থান ভৈরবের জনগণের মধ্যে চলছে চাপা ক্ষোভ।
প্রয়াত রাষ্ট্রপতি আলহাজ্ব জিল্লুর রহমান কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব উপজেলার ভৈরবপুর গ্রামে ১৯২৯ সালের মার্চ মাসে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মেহের আলী আইনজীবি ছিলেন। বাবার চাকুরী সুবাদে তিনি ময়মনসিংহের মৃত্যুঞ্জয়ী বিদ্যা নিকেতন থেকে প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। পরে ভৈরব কেবি পাইলট স্কুল থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা শেষ করে পরবর্তীতে ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি লাভ করেন।
তিনি একাধারে ভাষা সৈনিক, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, ১৯৯৬ সালের গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী, সংসদ উপনেতাসহ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। দেশ স্বাধীনতার পর ভৈরবÑকুলিয়ারচর থেকে ৬ বার সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন।
সর্বশেষ ২০০৯ সালে ১২ ফেব্রুয়ারি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের ১৯তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়ে শপথ গ্রহণ করেন। তিনি রাজনৈতিক জীবনে জন্মস্থান ভৈরবে অসংখ্য স্মৃতি রেখে গেছেন। তিনি রেখে গেছেন নিজ বাসভবন আইভি ভবনটি। ঐ ভবনটি এখন তালাবদ্ধ হয়ে স্মৃতি হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে। ভবনটির ভিতরেও রয়েছে অসংখ্য স্মৃতি।
তিনি যে স্মৃতি রেখে গেছেন তা আজও ভুলার মত নয়। ভৈরববাসী প্রিয় নেতা জিল্লুর রহমানকে হারিয়ে খুব বিষান্নিত। এই ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার মত নয় বলে ভৈরববাসী মনে করেন। তিনি রাষ্ট্রপতি হওয়ার কয়েক মাস পর ১৩ জুলাই ভৈরবের মাটিতে পা রেখে এবং ভৈরবের মানুষের সাথে তিনি সুর মিলিয়ে জীবনের শেষ রক্ত বিন্দু দিয়ে হলেও ভৈরবকে জেলা ঘোষণা করার ইচ্ছা পোষণ করেন।
প্রবল ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও দীর্ঘ ৪ বছরেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। তবে একটি প্রজ্ঞাপনে ভৈরবকে প্রস্তাবিত জেলা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। জিল্লুর রহমান তার দায়িত্ব পালন অবস্থায় ২০১৩ সালে ১০ মার্চ অসুস্থ হয়ে পরলে মূমুর্ষ অবস্থায় সিংগাপুরে মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০ মার্চ বিকেলে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
প্রয়াত রাষ্ট্রপতি মো. জিল¬ুর রহমান বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ থেকে পদত্যাগ করে ২০০৯ সালের ১২ই ফেব্রুয়ারি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের ১৯ তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়ে সপথ গ্রহণ করেন। তিনি রাষ্ট্রপতি হওয়ার কয়েক দিন পর ১৩ জুলাই ভৈরবের মাটিতে পা রাখেন এবং ভৈরবের মানুষের সাথে তিনি সুর মিলিয়ে জীবনের শেষ রক্তবিন্ধু দিয়ে হলেও ভৈরবকে জেলা ঘোষনা করার ইচ্ছা পোষন করেন।
এই মৃত্যুবার্ষিকী ঘিরে গুলশানে তার নিজ বাসভবন আইভি কনকর্ডে মিলাদ,দোয়া,কোরআনখানির আয়োজন করা হয়েছে । এছাড়াও ভৈরব উপজেলা আওয়ামীলীগের উদ্যোগে তার নিজ জন্মভুমি ভৈরবে আগামী ২৪ মাচ দিনব্যাপীর্ কোরআন খানি,দোয়া,মিলাদ ও শোকসভাসহ কাঙালি ভোজের আয়োজন করা হয়েছে । এতে স্থানীয় সাংসদ ও বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন বলে দলীয় সূত্রে জানা যায় ।
Leave a Reply