সোমবার মিরপুরের পীরেরবাগ এলাকায় অস্ত্র উদ্ধারের সময় সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হয়েছেন মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) জালাল উদ্দীন। সন্ত্রাসীদের ছোড়া গুলি মাথায় লেগে আহত হন জালাল। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় প্রথমে তাকে পান্থপথের স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া ও পাবলিক রিলেসন্স বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৯ সালের সেপ্টেম্বরের ১ তারিখ বাংলাদেশ পুলিশের কনস্টেবল পদে যোগদান করেন জালাল। ২৯ বছরের চাকরি জীবনে তিনি বিভাগীয় কোন শাস্তি পাননি। ভালো কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ পেয়েছেন প্রশংসা ও আর্থিক পুরস্কার। গুরুত্বপূর্ণ মামলার রহস্য উদঘাটন ও অপরাধ নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখার জন্য ২০১৩ সালে তিনি বাংলাদেশ পুলিশের সম্মানজনক প্রেসিডেন্ট পুলিশ মেডেল (পিপিএম-সেবা) পদকে ভূষিত হয়েছেন। ডিএমপি আরও জানায়, মেধা, মনন ও দক্ষতার মাধ্যমে ২০০২ সালে সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) পদে, ২০০৭ সালে উপ-পরিদর্শক (এসআই) পদে ও ২০১৭ সালে পুলিশ পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) পদে পদোন্নতি পান তিনি।
মঙ্গলবার বাদ জোহর রাজারবাগ পুলিশ লাইনস কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ সংলগ্ন মাঠের পাশে জালাল উদ্দিনের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. মো. জাবেদ পাটোয়ারীসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানাজায় অংশ নেন। রাজারবাগে জালালের জানাজা শেষে আইজিপি বলেন, জালাল উদ্দীনের খুনিদের অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি করা হবে।
নিহতের মরদেহের ময়নাতদন্তের পর এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের ডা. প্রদীপ কুমার বিশ্বাস বলেন, একটি গুলি বাম কানের ঠিক উপর দিয়ে লেগে ব্রেইন ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। আরেকটি গুলি মাথার পাশ দিয়ে লেগে বাইরে চলে যায়। ভিতর থেকে একটি বুলেট বের করা হয়েছে।
জালাল উদ্দীন ১৯৭০ সালে ঝিনাইদহ জেলার কালিগঞ্জের ভোলপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মৃত বিশারত আলী মণ্ডল। ৫ ভাই, দুই বোনের মধ্যে তৃতীয় ছিলেন জালাল। তিনি স্ত্রীসহ দুই কন্যা সন্তান রেখে গেছেন। তার বড় মেয়ে তৃপ্তি ঢাকা ভিকারুন্নিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণিতে এবং ছোট মেয়ে তূর্যা অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। জালাল উদ্দিনের মৃত্যুতে তার গ্রামের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।সূত্র পূর্বপশ্চিমবিডি.নিউজ।
Leave a Reply