নদীর উপর নির্মিত বাঁশের সাঁকোটি দিয়ে প্রতিদিন বাইপাস সড়ক দিয়ে ইনাতগঞ্জ বাজারে যাতায়াত করেন ২ থেকে ৩ হাজার মানুষ। এভাবেই ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে সাঁকো পারাপার করে চলছেন গ্রামের লোকজন। উক্ত স্থানে ব্রীজ নির্মাণে গ্রামবাসীসহ এলাকার জনসাধারণ স্থানীয় সংসদ সদস্য আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, লতিবপুর ও দীঘিরপাড় গ্রামের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া নরখাই নদীর মধ্যবর্তী স্থানে বাঁশ দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে বাঁশের সাঁকো। খালের উপর সেতু না থাকায় ভোগান্তির শেষ নেই তাদের। ঝুঁকিপূর্ণ এই সাঁকো দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছেন অসুস্থ নারী-পুরুষ, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা,শিক্ষার্থীসহ দিনমজুর।
স্থানীয় যুবক ছায়েদ আলী বলেন, শুষ্ক মৌসুমে বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হলেও বর্ষাকালে বাড়ে ভোগান্তি। অনেক সময় সাঁকো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। ভেসে যাওয়ার উপক্রম হয়। তখন খাল পারাপারে নৌকাই একমাত্র মাধ্যম হয়ে ওঠে। বর্ষা ও বন্যার সময় নৌকা দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ চলাচল করতে গিয়ে দুর্ঘটনাও ঘটে অহরহ। ফলে সাঁকোটি অপসারণ করে সেখানে ব্রিজ তৈরির দাবি জানান তিনি।
লতিবপুর গ্রামের ফরাস উদ্দিন জানান, প্রতি ৫ বছর পরপর জনপ্রতিনিধিদের পরিবর্তন হলেও পরিবর্তন হয়নি সাঁকোর। ছোটবেলা থেকে সাঁকোটি একই রকম দেখে আসছি। এখন ৬০ বছর বয়স, সাঁকোটি সাঁকোই রয়ে গেল। কোনো পরিবর্তন হয়নি। বৃদ্ধ ও শিশুদের মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হয়। কয়েকজনকে দুর্ঘটনারও শিকার হতে হয়েছে। ছেলে-মেয়েদের স্কুলে পাঠিয়েও দুশ্চিন্তায় থাকতে হয়। তাছাড়া গ্রামের কেউ মারা গেলে লাশ নিয়ে অপারে কবরস্থানে আসতে নৌকায় দিয়ে আসতে হয়। এসব বিবেচনা করে এই স্থানে একটি ব্রীজ নির্মাণে তিনি নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরীর সুদৃষ্টি কামনা করেন।
স্থানীয় ব্যক্তি তইফ উদ্দিন (৬২) বলেন, বর্তমান সরকারের নেতৃত্বে সারা দেশ উন্নয়নের রোল মডেল। এখানে একটি ব্রীজ নির্মাণ বেশী কিছু নয়। এটা আমাদের পারাপারের জন্য খুবই দরকার। গ্রামের শতশত মানুষের কষ্ট নিত্যদিনের সাথী বলে তিনি জানান।
স্থানীয় সাংবাদিক আশাহীদ আলী আশা বলেন, এক যুগেরও বেশী সময় ধরে এই খালের ওপর সেতু হবে হচ্ছে বলে আশায় বুক বেঁধে আছে গ্রামের মানুষ। সেতুর অভাবে মানুষজন অনেক কষ্ট করে বাঁশের সাঁকো দিয়ে নদী পার হতে হয়। অনেক সময় দুর্ঘটনাও ঘটে। মানুষের এই দুর্ভোগ লাঘবে অনতিবিলম্বে একটি সেতু নির্মাণ করা প্রয়োজন।
স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক খায়রুল হাসান বলেন, এ স্থানে একটি সেতু নির্মিত হলে অবহেলিত এই এলাকায় পরিবর্তন আসবে। । যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিশুদের যাতায়াতও বাড়বে।
নবীগঞ্জ উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী সাইদুর রহমান বলেন,এ স্থানে ব্রীজ নির্মাণ আমাদের নোটে নেই।তবে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। আগামীতে এ স্থানে ব্রীজ নির্মাণে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
Leave a Reply