ইনাতগঞ্জে জমিদার সরফ উল্লার জীবনগাথা ।। এক ঐতিহাসিক সংগ্রাম

রাকিল হোসেন ::

 

আটারো শতকে জমিদার ছিলেন নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের প্রজাতপুর গ্রামের সরফ উল্লা। তিনি সাদা মাঠা জীবনের অধিকারী ছিলেন। প্রচুর ধন সম্পদের অধিকারী ছিলেন। ছিলেন ৩৬০ হাল জমির মালিক। কোন অহংকার ছিলনা। মানুষ কে সাহায্যে করছেন দু হাত ভরে। জমিদার হিসেবে কোন অহংকার ছিলনা।

 

তিনি ছিলেন ৪ মেয়ে ১ সন্তানের জনক। তিনি অঢেল ধন সম্পদের মালিক হলেও বাড়িতে তৈরী করেননি কোন অট্রালিকা। টিন সেটের ঘরে জীবন যাপন করেছে। জমিদার সরফ উল্লা মৃত্যু পর তার সন্তান হরুপ উল্লা পুরো সম্পত্তি হাতে পেলেও পরবর্তীতে তিনি সম্পদ আর ধরে রাখতে পারেননি। তিনিও মৃত্যুর পূর্বে কিছু সম্পদ রেখে গেলেও তাহার সন্তানরা ধরে রাখতে পারেননি। এখন শুধু কালের সাক্ষি হয়ে দন্ডায়মান অবস্থায় রয়েছে সেই জমিদার বাড়িটি।

 
এতক্ষণ যার কথা বলছিলাম জমিদার সরফ উল্লা আমার নানা। ৫ সন্তানের মধ্যে আমার মা আলফাছ বিবি ছিলেন সবার ছোট। ৩৬০ হাল জমিনের অর্থাৎ পুরো সম্পত্তিতে তিনি আমার মা ও মামাকে মালিকানা দিয়ে যান। কিন্ত আমার মা ছিলেন সহজ সরল। জমিদারের মেয়ে হয়েও ছিলনা কোন অহংকার। সম্পত্তির এক আনা সম্পদ ও তিনি আনেননি। যদিও এসে রেকর্ড মূলে মালিক ছিলেন আমার মা। তৎকালীন সময়ে আমার বাবা ছিলেন ইউনিয়ন কাউন্সিলর সদস্য,পেশায় ছিলেন হোমিও ডাক্তার। ছিলেন শিক্ষিত এবং এলাকার বিশিষ্ট  শালিস বিচারক। চাইলে আমার বাবা শহীদ সান উল্লা  এই সম্পত্তি নিয়ে আসতে পারতেন। কিন্ত সম্পত্তির তাহার কোন লোভ ছিলনা।

 

পরবর্তীতে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন এলাকার কিছু রাজাকার আলবদরদের সহায়তায় পাকিস্তান হানাদার বাহিনী আমার বাবাকে হত্যা করে।
এমন মা বাবার  সন্তান হিসেবে আমি গর্ব করি। মহান আল্লাহ পাক যেন আমার মা বাবা নানা সরফ উল্লা সহ সবাইকে জান্নাতুল ফেরদৌস নছিব করেন। আমীন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ জাতীয় আরো খবর..

ফেসবুকে আমরা