রুজেল আহমদ সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি::ধর্মপাশা উপজেলার আটটি হাওরে ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মান ও মেরামত কাজ চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনো তা শেষ হয়নি। পাউবোর সংশ্লিষ্ঠদের দাবি, এ উপজেলার হাওরের প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজগুলোতে গড়ে ৭৫থেকে ৮০ভাগ মাটি ফেলার কাজ শেষ হয়েছে। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, প্রকল্প গুলোতে গড়ে ৬০ থেকে ৬৫ ভাগ মাটি ফেলার কাজ শেষ হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ না হওয়ায় এ নিয়েূ এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে।
উপজেলা প্রশাসন, এলাকাবাসী, পাউবোর কর্মকর্তা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলার চন্দ্র সোনার থাল, সোনমড়ল, ধানকুনিয়া, কাইলানী, জয়ধনা, ঘোড়াডোবা,গুরমা ও গুরমার বর্ধিতাং হাওরে পানি উন্নয়ন বোর্ড বাঁধ নির্মান ও মেরামত কাজ বাস্তবায়ন করে আসছে। কাবিটা নীতিমালা অনুযায়ী গত বছরের ১৫ডিসেম্বর থেকে ফসলরক্ষা
বাঁধ নির্মান ও মেরামত প্রকল্প কাজ শুরু করে তা ২৮ফেব্রুয়ারির মধ্যে সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু হাওর থেকে দেরিতে পানি নামায়,জরীপ,প্রাক্কলন তৈরিসহ অন্যান্য কাজ যথাসময়ে শেষ না হওয়ায় এ উপজেলায় ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মান ও মেরামত প্রকল্প কাজ শুরু হয় চলতি বছরের ১০জানুয়ারি থেকে। হাওরের বাঁধ নির্মান ও মেরামত কাজের জন্য ১৩৪টি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি রয়েছে। এসব প্রকল্প গুলোতে গড়ে ৭৫থেকে ৮০ভাগ মাটির কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে পাউবোর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
তবে এলাকাবাসী বলছেন, বাঁধগুলোতে ৬০খেকে ৬৫ভাগ মাটি ফেলার কাজ হয়েছে। বাঁধের স্লোপ,কমপেকশনসহ অন্যান্য কাজ সঠিকভাবে ্এখনো করা হয়নি। এ ছাড়া এলাকাবাসী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা এ উপজেলার নতুন ২৮টি গুরুত্বপূর্ণ বাঁধ পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় এনে প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজ শুরু করার দাবি জানিয়ে আসলেও এখনো এ নিয়ে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
এতে করে পানি ঢুকে হাওরের বোরো ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। হাওর বাঁচাও, সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলনের ধর্মপাশা উপজেলা কমিটির সদস্য সচিব চয়ন কান্তি দাস বলেন, বাঁধ নির্মান ও মেরামত কাজ এখনো শেষ না হওয়ার বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখ ও হতাশাজনক। বাঁধের স্লোপ ও কমপেকশন সঠিকভাবে করা হচ্ছে না। এ উপজেলার ১৩৪ টি পিআইসি কমিটি রয়েছে। এই প্রকল্প সমূহে গড়ে ৬০থেকে ৬৫ ভাগ মাটি ফেলার কাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।
প্রকল্প কাজে তদারকির দায়িত্বে থাকা পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলীরা দায়িত্ব পালনে চরম অবহেলা করেছেন। সময়মতো বাঁধ নির্মান ও মেরামত কাজ শেষ না হওয়ায় বোরো ফসল নিয়ে কৃষকদের শঙ্কা রয়েই গেছে। সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী ও ধর্মপাশা উপজেলা কাবিটা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব মাহমুদুল ইসলাম বলেন, এ উপজেলার ১৩৪টি পিআইসি কমিটির মধ্যে বেশির ভাগ পিআইসি কমিটিই প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজে এক্সক্যাভেটরের ওপর নির্ভরশীল ছিলেন।
ফলে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে প্রকল্প কাজ বাধাগ্রস্ত হয়েছে। প্রকল্প কাজগুলোতে স্লোপ,কমপেকশনও ঘাস লাগানোর কাজ অসম্পন্ন রয়েছে। বাঁধের তদারকির কাজে কোনো গাফিলতি করা হয়নি। এ উপজেলায় বাঁধ নির্মান ও মেরামত কাজের প্রকল্প সমূহে গড়ে ৭৫থেকে৮০ভাগ মাটির কাজ শেষ হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে যাবতীয় কাজ সম্পন্ন হবে বলে আশা করছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্ত্ ও উপজেলা কাবিটা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি মো. মামুন খন্দকার বলেন, এ উপজেলার ১৩৪টি প্রকল্পের মধ্যে বুধবার দুপুর পর্যন্ত ৫৪টি পিআইসির সভাপতি কাজ সম্পন্ন হয়েছে মর্মে আমার কাছে লিখিতভাবে আবেদন করেছেন। এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। বাঁধের কাজ সঠিকভাবে শেষ করা হয়েছে কী না তা সরেজিমেন পরিদর্শন করে আমরা দেখার পর এ নিয়ে প্রয়োজনীয় পদ্েক্ষপ নেওয়া হবে।। বাঁধের কাজ নিয়ে কেউ গড়িমসি করলে তা বরদাস্ত করা হবে না।
Leave a Reply