মোরেলগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এইচ এম মাহমুদ আলী বলেন, আমার ইউনিয়নে গাবতলা, কাঠালতলা, খাউলিয়া, পানিবন্ধি শত শত পরিবার ও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
মোরেলগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. রোকোনুজ্জামান বলেন, মোরেলগঞ্জ পৌরসভা, মোরেলগঞ্জ সদর, বারইখালী, খাউলিয়া, বহরবুনিয়া, পুটিখালী, তেলিগাতি, পঞ্চকরণ, বলইবুনিয়া ইউনিয়নের প্রায় পনের হাজার পরিবার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ।
মোরেলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবের বৃদ্ধি পাওয়া পানিতে মোরেলগঞ্জ উপজেলার কিছু মানুষ পানিবন্ধি হয়ে পড়েছে। আমরা তাদের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ করেছি। ক্ষয় ক্ষতি ও যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় উপজেলা প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে।
শরণখোলা গ্রামের মোঃ আবুল কালাম শিকদার বলেন, রাতের বৃষ্টির সাথে সাথে ভোলানদীর পানি বৃষ্টি পায়। সকালের জোয়ারে বাড়িঘর সব তলিয়ে গেছে। শুধু পানি নয় ঢেউয়ে ঘরের পোতাও নষ্ট হয়ে গেছে।
খুড়িয়াখালী গ্রামের মোঃ ইদ্রিস খলিফা, নেয়ামুল জমাদ্দারসহ কয়েকজন বলেন, রাতেও বুঝতে পারনি এত পানি হবে। সকাল ৮টার দিকে হটাৎ পানি এসে আমাদের বাড়ি-ঘর তলিয়ে যায়। সবাইকে নিয়ে রাস্তার পাশে আশ্রয় নিয়েছি। ভাটিতে পানি কমলে বাড়ি যাব। না হয় রাতে আশ্রয়কেন্দ্রে থাকতে হবে।
চরগ্রামের জলিল গুরু ও সাইদুল শিকদার বলেন, বেড়িবাঁধ না থাকায় প্রতিটি ঝড়েই আমাদের ডুবতে হয়। মূল্যবান মালামাল নষ্ট হ। হাসমুরগী ৃারা যায়। সকালের হঠাৎ পানিতে চরগ্রামের সবার বাড়ি ঘর তলিয়ে গেছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য বাচ্চু মুন্সি বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের ফলে নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে আশপাশের পাঁচটি গ্রামের অন্তত ৩ হাজার পরিবার পানিবন্ধি হয়ে পড়েছেন। অনেকের রান্না বান্নাও বন্দ রয়েছে। নদীর পাশে বাড়ি হওয়াটাই আমাদের কাল হয়েছে।
শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার মোস্তফা শাহিন বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবের বৃদ্ধি পাওয়া পানিতে শরণখোলা উপজেলার কিছু মানুষ পানিবন্ধি হয়ে পড়েছে। আমরা তাদের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ করেছি। এছাড়াও ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও চেয়ারম্যানদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তারা ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা করবেন। তাদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমান লিখে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে বলে জানান তিনি।
ইয়াসে প্রাণ গেল শিশুর
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে ঘূর্ণিইঝড় ইয়াসের প্রভাবে ওঠা পানিতে ডুবে জিনিয়া আক্তার(৪) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার বেলা ১১টার দিকে খাউলিয়া ইউনিয়নের চালিতাবুনিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নির্মানশ্রমিক কালাম গাজীর মেয়ে জিনিয়া ।
ঘটনার সময় বাড়ির মধ্যে পানি উঠতে দেখে গরু বাঁচানোর জন্য ছুটে যান কালাম গাজী ও তার স্ত্রী লিজা বেগম। কিছুক্ষণ পরে ঘরে ফিরে জিনিয়াকে না পেয়ে খোজাখুজি শুরু করেন। এক পর্যায়ে তাকে পাওয়া যায় ঘরের পাশে পানির মধ্যে। দ্রুত হাসপাতালে আনা হলে মেডিকেল অফিসার ডা. কামাল হোসেন মুফতি তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে খাউলিয়া ইউনয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. আলমগীর হোসেন বলেন, ঘর ছুই ছুই পানি উঠে যাওয়ায় শিশুটি সবার চোখ ফাকি দিয়ে পানিতে পড়ে মারা যায়।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. রোকনুজ্জামান বলেন, শিশুটি জোয়ারের পানিতে ডুবে মারা গেছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, শিশুটি বন্যার পানিতে মারা গেছে কিনা তা নিশ্চিত হতে আরো সময় লাগবে।
Leave a Reply