নবীগঞ্জ নবীগঞ্জ ( হবিগঞ্জ) থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা :নবীগঞ্জ-বাহুবল উপজেলা নিয়ে গঠিত হবিগঞ্জ-১ আসনে আজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এ আসনে ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৩১ হাজার ৪২২ জন। প্রার্থী ছিলেন ৬ জন। আসন ভাগাভাগির ফলে নৌকার প্রার্থী জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ডাঃ মুশফিক হুসেন চৌধুরীকে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করতে হয়েছে।
বর্তমানে এ আসনে ৫জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য শাহ নওয়াজ মিলাদ গাজীর ছোট ভাই গাজী মোহাম্মদ সাহেদ ( ট্রাক) সম্প্রতি অসুস্থতা জনিত কারনে সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন থেকে সরে দাড়ান।
অপর ৪ জন প্রার্থী হলেন– জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী সাবেক এমপি এমএ মুনিম চৌধুরী বাবু (লাঙ্গল), স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক সংরক্ষিত আসনের এমপি অ্যাডভোকেট আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী (ঈগল), স্বতন্ত্র প্রার্থী, ইসলামি ঐক্যজোট বাংলাদেশের মোস্তাক আহমেদ ফারহানী (মিনার), কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের মো. নুরুল হক (গামছা)।
এর মধ্যে নির্বাচনের শুরু থেকে নৌকার এ আসনে মাঠ চষে বেড়িয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত মহিলা আসনের সাবেক সংরক্ষিত আসনের এমপি স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী। তিনি ঈগল পাখি প্রতীক নিয়ে স্থানে স্থানে গিয়ে ভোট ও দোয়া চাইছেন।
নৌকার সমর্থন নিয়ে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে সাবেক এমপি এমএ মুনিম চৌধুরী বাবুও ব্যাপক প্রচারণা চালিয়েেন। উভয় উপজেলায় আওয়ামী লীগ ও জাপা মিলে যৌথভাবে নেতাকর্মীরা লাঙ্গলের পক্ষে ভোট চাইছেন।
এমএ মুনিম চৌধুরী বাবুর বলেছেন, তিনি এমপি থাকা অবস্থায় স্থানে স্থানে ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। এর আগে এ আসন থেকে তিনিসহ লাঙ্গলের প্রার্থী দুইবার জয়ী হয়েছেন। অপরদিকে কেয়া চৌধুরী বলেছেন ঈগল পাখির জয় ঠেকানো যাবে না। কারণ তিনি এমপি থাকাকালীন সময়ে অনেক উন্নয়ন করেছেন। প্রচণ্ড শীতে হাওড়, গ্রাম ও পাহাড়ি এলাকা নিয়ে গঠিত এ আসনে দুই প্রার্থীর মধ্যে লড়াই ছিল জমজমাট। চায়ের দোকান থেকে শুরু করে সর্বত্র আলোচনায় দুই প্রার্থী। এছাড়া বাকী তিন প্রার্থীর প্রচারণা চোখে পড়ার মতো নয়।
এমএ মুনিম চৌধুরী বাবু বলেন, লাঙ্গলের পক্ষে গণজোয়ার তৈরি হয়েছে। আমার বিশ্বাস উন্নয়নধারা অব্যাহত রাখতে সম্মানীত ভোটারগণ কেন্দ্রে কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিয়ে আমাকে এমপি নির্বাচিত করবেন।
অ্যাডভোকেট আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী বলেন, এমপি থাকা অবস্থায় উন্নয়নমূলক কাজ করেছি। উন্নয়নের স্বার্থে লোকজন আমাকে এমপি দেখতে চায়। ঈগলের পক্ষে গণজোয়ার তৈরি হয়েছে।
আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা বলছেন এ আসন নৌকার ঘাঁটি। নৌকা নিয়ে এ আসন থেকে ২০১৮ সালে এমপি নির্বাচিত হন গাজী মোহাম্মদ শাহনওয়াজ (মিলাদ গাজী)। তার আগে মিলাদ গাজীর বাবা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা সাবেক মন্ত্রী দেওয়ান ফরিদ গাজী ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮ সালের নিবার্চনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১০ সালের ১৯ নভেম্বর দেওয়ান ফরিদ গাজী মৃত্যুবরণ করেন। শূন্য আসনে ২০১১ সালের ২৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের দূর্গে প্রথমবারের মতো হানা দেয় বিএনপি। বিএনপি মনোনীত প্রার্থী আলহাজ্ব শেখ সুজাত মিয়া আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে ওই উপনিবার্চনে তৎকালীন জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ডা. মুশফিক হুসেন চৌধুরীকে পরাজিত করেন। ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসন ভাগাভাগিতে জাতীয় পার্টি প্রার্থী এমএ মুনিম চৌধুরী বাবু বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এমপি নির্বাচিত হন।
এছাড়া এ আসন থেকে ১৯৭০ সালের নিবার্চনে আওয়ামী লীগের আবদুল আজিজ চৌধুরী, ১৯৭৩ সালে আওয়ামী লীগের আব্দুল মান্নান চৌধুরী ছানু মিয়া, ১৯৭৯ সালে জাসদের মাহাবুবুর রব সাদী, ১৯৮৬ সালে আওয়ামী লীগের ইসমত আহমদ চৌধুরী, ১৯৮৮ সালে জাসদের অ্যাডভোকেট আব্দুল মোছাব্বির, ১৯৯১ সালে জাতীয় পার্টির খলিলুর রহমান চৌধুরী রফি এমপি নির্বাচিত হন।
এবারও এ আসনে লাঙ্গল ও ঈগলের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে হাড্ডাহাড্ডি বলে মাঠ ঘুরে জানা গেছে। কার গলায় জুটবে বিজয়ের মালা সেটা জানার অপেক্ষায় নবীগঞ্জ – বাহুবলবাসী।
Leave a Reply