নবীগঞ্জে ৪ বছরের শিশুকে পানিতে ফেলে হত্যা।। দাদী ফুফু গ্রেফতার

নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা : নবীগঞ্জ উপজেলায় পারিবারিক কলহের জেরে ৪ মাসের শিশু মাহমুদা আক্তার মিমকে হত্যা মামলায় দাদি মরিয়ম বিবি (৪৫) ও তার ফুফু পপি আক্তার (২০) কে গ্রেফতার করেছে নবীগঞ্জ থানা পুলিশ। হত্যাকাণ্ডে পপির সম্পৃক্ততা থাকতে পারে মর্মে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন মরিয়ম বিবি। গত বুধবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে গ্রেফতারকৃতদের কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার কালিয়ারভাঙ্গা ইউনিয়নের ইমামবাড়ি বাজারের চরগাঁও গ্রামের আওলাদ মিয়ার স্ত্রী ও নিহত মিম এর মা মিনারা বেগমের সাথে তার শ্বাশুড়ি মরিয়ম বিবি (৪৫) ও ননদ পপি আক্তার (২০) এর প্রায়ই পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মনোমালিন্য ও ঝগড়া হতো। গত মঙ্গলবার সকালে ঘুম থেকে ওঠে সাংসারিক কাজকর্ম ও রান্না-বান্না নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন মিনারা বেগম। পরে চার মাসের মেয়ে সন্তান মাহমুদা আক্তার মিমকে ঘুম পাড়িয়ে পুনরায় রান্নার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি। ওই সময় মিনারা বেগমের শ্বাশুড়ি মরিয়ম বিবি (৪৫) ও ননদ পপি আক্তার (২০) বসতঘরের ভিতরে অবস্থান করছিল। কিছুক্ষণ পর মিনারা বেগমের শ্বশুর আব্দুল মজিদ মিমকে খুঁজে শয়ন কক্ষে প্রবেশ করলে মিমকে না পেয়ে চারিদিকে খোঁজাখুজি শুরু করেন। পরে শয়ন কক্ষের পিছনে অবস্থিত পুকুরের কিনারায় তার মরদেহ পাওয়া যায়।
খবর পেয়ে নবীগঞ্জ থানা পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট শেষে ময়নাতদন্তের জন্য হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে প্রেরণ করে।
এদিকে এ ঘটনার পর থেকে নানা রহস্যে সৃষ্টি হয়। ৪ বছর বয়সী শিশুর পুকুরে পানিতে ডুবে মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে জট বাঁধতে থাকে। পুলিশ তদন্ত শুরু করে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়- নিহত মিম এর দাদি মরিয়ম বিবি (৪৫) ও তার ফুফু পপি আক্তার (২০)কে। পরে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে মিমকে পানিতে ফেলে পপি আক্তার হত্যা করতে পারে মর্মে পুলিশকে জানান মরিয়ম বিবি (৪৫)।
এ ঘটনায় নবীগঞ্জ থানায় মিনারা বেগম বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করলে মরিয়ম বিবি ও পপি আক্তারকে উক্ত মামলায় গ্রেফতার দেখায় পুলিশ।
মঙ্গলবার দুপুরে হবিগঞ্জের বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন মরিয়ম বিবি (৪৫)। পরে তাদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।
নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ কামাল হোসেন বলেন, – পারিবারিক বিভিন্ন কলহের জেরে মিমকে পানিতে ফেলে পপি আক্তার হত্যা করতে পারে, মিম যখন ঘুমিয়ে ছিল তখন একমাত্র পপি ঘরে ছিলো, মিমকে পানিতে ফেলার শব্দ মরিয়ম বিবি শুনতে পান মর্মে আদালতকে জানিয়েছেন। ওসি মো. কামাল হোসেন আরও বলেন- পপি আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে তবে এখনো তার কাছ থেকে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি, অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে পপি আক্তারকে রিমান্ডে আনা হবে। দ্রুত হত্যা মূল রহস্য উদঘাটন হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ জাতীয় আরো খবর..

ফেসবুকে আমরা