পবিত্র শুক্রবারের আমল এবং করণীয়

ডেস্ক রিপোর্ট ::

ইসলামে শুক্রবারকে সপ্তাহের সর্বোত্তম দিন বলা হয়েছে। এই দিনকে “সপ্তাহের ঈদ” এবং “সর্বশ্রেষ্ঠ দিন” হিসেবে গণ্য করা হয়। হাদিসে বর্ণিত আছে যে, এদিন আল্লাহ বিশেষ রহমত বর্ষণ করেন এবং দোয়া কবুল করেন। তাই প্রতিটি মুসলমানের উচিত শুক্রবারের আমলগুলোর প্রতি গুরুত্ব দেওয়া।

জুমার দিনের বিশেষ আমল ও করণীয়

১. গোসল ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা:

হাদিসে বলা হয়েছে, জুমার দিন প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক মুসলিমের জন্য গোসল করা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা রক্ষা করা এবং সুগন্ধি ব্যবহার করা সুন্নত।

হাদিস:
প্রিয় নবী (সা.) বলেছেন—
“যে ব্যক্তি জুমার দিনে গোসল করে, উত্তমভাবে পবিত্রতা অর্জন করে, সুগন্ধি ব্যবহার করে এবং মসজিদে গিয়ে (ইমামের) খুতবা শোনে ও চুপ থাকে, তার ওই জুমা থেকে পরবর্তী জুমা পর্যন্ত গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়।” (বুখারি, ৮৮৩)

২. জুমার নামাজ আদায় করা:

জুমার নামাজ পুরুষদের জন্য ফরজ এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। যারা অকারণে জুমার নামাজ বাদ দেয়, তারা কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হবে।

হাদিস:
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন—
“যে ব্যক্তি তিনটি জুমা পরপর ছেড়ে দেয়, আল্লাহ তার অন্তর মোহর করে দেন।” (আবু দাউদ, ১০৫২)

৩.পবিত্র শুক্রবারের আমল এবং করণীয়

জুমার দিনে সূরা কাহাফ তিলাওয়াত করা সুন্নত এবং এতে অনেক সওয়াব রয়েছে।

হাদিস:
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন—
“যে ব্যক্তি জুমার দিনে সূরা কাহাফ তিলাওয়াত করবে, তার জন্য এক জুমা থেকে পরবর্তী জুমা পর্যন্ত নূর জ্বালিয়ে দেওয়া হবে।” (আবু দাউদ, ১০৫০)

৪. বেশি বেশি দরুদ শরিফ পাঠ করা:

জুমার দিনে রাসুল (সা.)-এর ওপর দরুদ পাঠ করার বিশেষ ফজিলত রয়েছে।

হাদিস:
নবী (সা.) বলেছেন—
“তোমাদের দিনগুলোর মধ্যে শ্রেষ্ঠ দিন হল জুমার দিন। এ দিনে আমার উপর বেশি বেশি দরুদ পাঠ করো। কারণ, তোমাদের দরুদ আমার কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়।” (আবু দাউদ, ১৫৩১)

৫. অধিক পরিমাণে দোয়া করা:

জুমার দিন একটি বিশেষ মুহূর্ত আছে, যখন দোয়া কবুল করা হয়।

হাদিস:
নবী (সা.) বলেন—
“জুমার দিনে এক বিশেষ সময় আছে, যখন বান্দা আল্লাহর কাছে যা চায়, আল্লাহ তা তাকে দেন।” (বুখারি, ৬৪০০)

৬. সদকা ও দান করা:

জুমার দিনে দান-সদকা করা অত্যন্ত উত্তম কাজ। এই দিনে দান করলে বেশি সওয়াব পাওয়া যায়।

হাদিস:
ইবনু আব্বাস (রা.) বলেন—
“রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, জুমার দিন দান-সদকা করা অন্যান্য দিনের তুলনায় বেশি মর্যাদাপূর্ণ।” (তিরমিজি, ৬০৩)

৭. আত্মীয়দের খোঁজখবর নেওয়া:

জুমার দিনে আত্মীয়-স্বজনদের খোঁজখবর নেওয়া এবং তাদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখা একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল।

হাদিস:
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন—
“যে ব্যক্তি আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখে, আল্লাহ তার জীবনে বরকত দান করেন।” (বুখারি, ২০৬৭)

উপসংহার:

জুমার দিন আমাদের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ও বরকতময়। তাই এই দিনের আমলগুলো যথাযথভাবে পালন করা উচিত। বিশেষ করে, জুমার নামাজ পড়া, কুরআন তিলাওয়াত করা, দরুদ পাঠ করা এবং বেশি বেশি দোয়া করা আমাদের উচিত। আল্লাহ আমাদের সবাইকে এই মহিমান্বিত দিনের বরকত লাভের তৌফিক দান করুন। আমিন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ জাতীয় আরো খবর..

ফেসবুকে আমরা