নিজস্ব প্রতিবেদক::বাংলাদেশসহ বিশ্বের সনাতন ধর্মাবলম্বীরা আজ সোমবার পালন করছেন মহাসপ্তমী পূজা। গতকাল রবিবার মহাষষ্ঠীতে দেবী দুর্গার আগমন বা বোধনের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে দুর্গাপূজার মূল আচার-অনুষ্ঠান। ভোর থেকেই ঢাকের বাদ্য, শঙ্খধ্বনি, উলুধ্বনি আর চণ্ডীপাঠের মধ্য দিয়ে দেবীকে বরণ করেন ভক্তরা।
শাস্ত্রীয় বিধান অনুযায়ী, সপ্তমী পূজা শুরু হয় দেবীর চক্ষুদান, নবপত্রিকা প্রবেশ ও স্থাপনের মধ্য দিয়ে। এরপর কল্পারম্ভ, সপ্তমীবিহিত পূজা ও ষোড়শ উপাচার দিয়ে দেবীকে পূজিত করা হয়। আজকের পূজার মূল সময় সকাল ৭টা ২৯ মিনিট ১৭ সেকেন্ডের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে।
মহাসপ্তমীর অন্যতম প্রধান আচার হলো নবপত্রিকা প্রবেশ। কদলী (কলাগাছ), কচু, হরিদ্রা, জয়ন্তী, বিল্ব, দাড়িম্ব, অশোক, মান ও ধান—এই নয়টি উদ্ভিদ একত্র করে কলাবউ রূপে প্রতীকীভাবে সাজানো হয় এবং দেবীর প্রতিমার ডান পাশে স্থাপন করা হয়। ধর্মীয় বিশ্বাসে, নবপত্রিকার প্রতিটি উদ্ভিদ দেবী দুর্গার নয়টি রূপের প্রতীক।
এদিন দর্পণ স্নানের মধ্য দিয়ে দেবীর মহাস্নানও সম্পন্ন হয়। প্রতিমার সামনে আয়নায় প্রতিফলিত প্রতিবিম্বে জল ও উপাচার নিবেদন করে এই আচার পালিত হয়।
পৌরাণিক কাহিনি অনুযায়ী, ত্রেতাযুগে ভগবান রামচন্দ্র রাবণের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যাওয়ার আগে শরৎকালে দেবী দুর্গার অকালবোধন করেন। দেবীর কৃপায় তিনি সীতাকে উদ্ধার করতে সক্ষম হন। সেই ঐতিহাসিক ঘটনাকে কেন্দ্র করেই শরৎকালের পূজা পরিচিত হয়েছে শারদীয় দুর্গাপূজা নামে।
আজ মহাসপ্তমীর পর আগামীকাল মহাষ্টমী ও কুমারী পূজা, বুধবার মহা নবমী এবং বৃহস্পতিবার প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে সমাপ্তি ঘটবে শারদীয় দুর্গোৎসবের।
দুর্গোৎসব আজ কেবল সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, বরং সর্বজনীন উৎসব। ঢাকের বাদ্য, শঙ্খধ্বনি, উলুধ্বনি ও ভক্তির আবহে আজকের মহাসপ্তমী মণ্ডপে মণ্ডপে বাঙালির সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে নতুন করে আলোকিত করছে।
Leave a Reply