ডেস্ক রিপোর্ট ::ঢাক-ঢোল, শঙ্খধ্বনি আর উলুধ্বনিতে মুখরিত হয়ে চলছে শারদীয় দুর্গোৎসব। মহাসপ্তমীর আনুষ্ঠানিকতা শেষ হওয়ার পর আজ মঙ্গলবার সারা দেশের ন্যায় নবীগঞ্জসহ রাজধানীতে উদযাপিত হচ্ছে মহাঅষ্টমী। ভক্তি, আনন্দ ও আচার-অনুষ্ঠানের আবহে মণ্ডপগুলো এখন ভরে উঠেছে। এদিনের প্রধান আকর্ষণ কুমারী পূজা, যা দেবী শক্তির এক বিশেষ প্রতীকী রূপ।
অষ্টমীর তাৎপর্য
শারদীয় দুর্গোৎসবের অষ্টমী শুধু আনন্দ আর উচ্ছ্বাসের দিন নয়, ভক্তিময়তারও শীর্ষ মুহূর্ত। ধর্মীয় বিশ্বাসে, এদিন কুমারী পূজার মাধ্যমে পূর্ণতা লাভ করে অষ্টমীর মাহাত্ম্য। অষ্টমীকে শাস্ত্র মতে সবচেয়ে শুভক্ষণ ধরা হয়।
কুমারী পূজার দর্শন
হিন্দু শাস্ত্র মতে, নারীই শক্তির মূল। কুমারী পূজার মাধ্যমে নারীকে দেবী রূপে পূজা করা হয়। একটি অল্পবয়সী কন্যাকে দেবী দুর্গার প্রতীক ধরে পূজা করার মধ্যে নারীর প্রতি শ্রদ্ধা ও ভক্তির প্রকাশ ঘটে। এ বিশ্বাসে বলা হয়, নারী কেবল পরিবার নয়, সৃষ্টির মূল চালিকাশক্তি।
পূজার আচার
২ থেকে ১২ বছর বয়সী কন্যাদের মধ্যে একজন বা একাধিককে কুমারী হিসেবে বেছে নেওয়া হয়। তাদের স্নান করিয়ে শুদ্ধ পোশাকে সাজানো হয়, দেবীর আসনে বসানো হয়। ফুল, ধূপ, চন্দন, সিঁদুর দিয়ে তাদের পূজা করা হয়। ভক্তরা মনে করেন, কুমারীর চরণে প্রণাম করলে জীবনের দুঃখ-কষ্ট দূর হয় এবং পরিবারে শান্তি-সমৃদ্ধি আসে।
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট
কুমারী পূজার ইতিহাস অনেক পুরনো। তবে স্বামী বিবেকানন্দ এ পূজাকে সর্বজনীনভাবে প্রচলন করে সমাজে এর মর্যাদা বৃদ্ধি করেন। তখন থেকেই দুর্গোৎসবে কুমারী পূজা বিশেষ গুরুত্ব পায়।
আধুনিক তাৎপর্য
বর্তমান সময়ে কুমারী পূজা শুধু ধর্মীয় আচার নয়, বরং নারীকে সম্মান ও সমতার প্রতীক হিসেবেও ধরা হয়। সমাজে যখন এখনো নারী বৈষম্যের শিকার, তখন কুমারী পূজা বার্তা দেয়— নারী শক্তির প্রতীক, তাকে সম্মান জানানোই মানবতার আসল রূপ।
রাজধানীতে সময়সূচি
ঢাকার রামকৃষ্ণ মিশনে আজ মহাঅষ্টমীর পূজা শুরু হয়েছে সকাল ৬টা ১০ মিনিটে। পুষ্পাঞ্জলি হয়েছে সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে। সকাল ১১টা থেকে শুরু হয় কুমারী পূজা, যা দুপুর ১টা পর্যন্ত চলে। দুপুরে প্রসাদ বিতরণ হয়। আর সন্ধ্যা ৬টা ১৩ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে সন্ধিপূজা, যা সমাপ্ত হবে সন্ধ্যা ৭টা ১ মিনিটে।
Leave a Reply