মতিউর রহমান মুন্না ॥ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রেশ না কাটতেই নবীগঞ্জে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তোড়জোড় শুরু হয়ে গেছে। সম্প্রতি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরপরই মাঠপর্যায়ে গণসংযোগে নেমে পড়েছেন নবীগঞ্জের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। এসব প্রার্থীরা তাঁদের তৃণমূল পর্যায়ের কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করতে দেখা গেছে। নির্বাচন কমিশন (ইসি)’র প্রাথমিক ঘোষণা অনুযায়ী এ বছরের মার্চে দলীয় প্রতীকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই আভাস পেয়েই উপজেলার সর্বত্র শুরু হয়েছে নির্বাচনি আলোচনা। মাঠ পর্যায়ের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তাদের সমর্থকরা দিচ্ছেন বিভিন্ন পোষ্ট।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আগামী মার্চে নির্বাচন হবে এমন একটি সম্ভাব্য সময় ঘোষণা দিয়েছে কমিশন। ১৩ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে নবীগঞ্জ উপজেলা গঠিত। এবার এ উপজেলায় ভোটার সংখ্যা ২ লক্ষ ৩৬ হাজার ৮শত ৩৮ জন। ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের হয়ে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করতে পারেন এমন সম্ভাব্য অনেক প্রার্থীর নাম বেশ জোরেশোরে উচ্চারিত হচ্ছে। এবারে উপজেলা পর্যায়ে কোন দলের কারা হবেন প্রার্থী, সেই হিসাব-নিকাশ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে নানা আলোচনার ঝড় বইছে। সামনে স্বল্প সময়ের কারণে সম্প্রতি নড়েচড়ে বসতে শুরু করছে সম্ভাব্য প্রার্থীরা। বিশেষ করে সম্প্রতি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার পালে হাওয়া লাগায় ইতোমধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এর স্থানীয় নেতারা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থীতা পেতে দলীয় হাইকমান্ডেও দৌড়-ঝাঁপ শুরু করেছেন। তবে বিএনপিসহ অন্যান্য দলের মধ্যে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে কোন তৎপরতা তেমন লক্ষ করা যাচ্ছে না। বিএনপি’র দলীয় একটি সূত্র জানায়, নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে কি না তা নিয়ে কিছুদিনের মধ্যে আলোচনা হবে।
সূত্রে প্রকাশ, ২০১৪ সালের ২৩ মার্চ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কেন্দ্র ভিত্তিক ৫৪৩টি স্থায়ী এবং ৬টি অস্থায়ী বুথে ভোট অনুষ্টিত হয়েছিল। হবিগঞ্জ জেলার গুরুত্বপূর্ণ জনপদ নবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৯ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে (পুরুষ) ৯ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় করেছিলেন। ১৯ দলীয় জোটের একক প্রার্থী থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান শেফুকে প্রায় ৯ হাজার ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে নির্বাচিত হন ক্ষমতাসীন জোট আওয়ামীলীগ মনোনীত হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি এডভোকেট আলমগীর চৌধুরী। আলমগীর চৌধুরী পেয়েছিলেন ৪২ হাজার ৪৩ ভোট। আর মুজিবুর রহমান সেফু পেয়েছিলেন ৩৩ হাজার ২৩১ ভোট।
বর্তমান চেয়ারম্যান এডভোকেট আলমগীর চৌধুরী নবীগঞ্জ উপজেলার করগাঁও ইউনিয়নের করগাঁও গ্রামে ১৯৬৫ সালে ১ এপ্রিল স¤্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহন করেন। বি.এ, এলএলবি ডিগ্রীধারী মোঃ আলমগীর চৌধুরী ছাত্র জীবনেই রাজনীতির মাধ্যমে রাজনৈতিক জীবন শুরু করে রাজপথের একজন পরীক্ষিত সৈনিক হিসাবে খ্যাতি অর্জন করেন। বর্তমানে তিনি হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ছাড়াও বিভিন্ন দায়িত্বশীল সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছেন। এবার নির্বাচনেও তিনি দলীয় মনোয়ন পাবেন বলে মনে করেছেন অনেকেই। বিগত দিনের উন্নয়ন কর্মকান্ডের কারণে দলীয় মনোনয়নের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী এডভোকেট আলমগীর চৌধুরী।
এ ছাড়াও আওয়ামী লীগ থেকে যাদের নাম সর্বত্রই শোনা যাচ্ছে তারা হলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও গজনাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমদাদুর রহমান মুকুল, হবিগঞ্জ-১ (বাহুবল-নবীগঞ্জ) আসনের সাবেক এমপি প্রয়াত অ্যাডভোকেট আব্দুল মোছাব্বির এর পুত্র হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমানে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এবং হবিগঞ্জ জেলা পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট সুলতান মাহমুদ, নবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগ সভাপতি আলহাজ্ব ফজলুল হক চৌধুরী সেলিম।
এ ছাড়াও উপজেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক ড. শাহ আবুল খয়ের, থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান শেফু, উপজেলা বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি মোঃ দুলাল চৌধুরীসহ অনেকেরই নাম শুনা যাচ্ছে।
Leave a Reply