ছাদেকুল ইসলাম রুবেল,গাইবান্ধা:: গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার চন্ডিপুর গ্রামের নিজ বাড়িতেই চিকিৎসাহীনতায় ভুগছেন গুরুতর অসুস্থ্য বীর-মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ওয়াহেদ মিঞা (৬৪)।
তিনি গত ২ মাস পূর্বে হঠাৎ ব্রেইন স্ট্রোকে আক্রান্ত হন।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত ২২ জুন নিজ বাড়িতে হঠাৎ ব্রেইন স্ট্রোকে আক্রান্ত হন বীর-মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ওয়াহেদ মিঞা। এতে শঙ্কটাপন্ন অবস্থায় তাঁকে রংপুরস্থ বে-সরকারীভাবে পরিচালিত প্রাইম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান পরিবারবর্গ। সেখানে তিনি প্রায় পক্ষকাল (১৩ দিন) ধরে আইসিইউ’তে অত্যন্ত সেবা, যতœ আর সু-চিকিৎসায় অনেকাটা সুস্থ্য হয়ে উঠেন।
এরপর রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এতে অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় তাঁকে বাড়িতে ফিরে আনা হয়। তখন থেকেই অর্থাভাবে বীর-মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ওয়াহেদ মিঞার প্রয়োজনীয় চিকিৎসা হচ্ছে না।
বীর-মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ওয়াহেদ মিঞার স্ত্রী গোলাপী বেগম, মেয়ে চায়না আক্তার জুঁই দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, প্রাইম মেডিকেল কলেজে চিকিৎসা- সেবা পর্যাপ্ত ছিল। তার চেয়ে ভাল চিকিৎসা সেবার আশা করে সরকারীভাবে পরিচালিত রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর রোগী (আব্দুল ওয়াহেদ মিঞা) একজন বীর-মুক্তিযোদ্ধা এ পরিচয় দেয়ার পরও কর্তৃপক্ষের কোন সু-দৃষ্টি মেলেনি। সেখানে চিকিৎসা সেবা তো দূরের কথা রোগীর প্রতি মাত্রাতিরিক্ত অবহেলা দেখতে পাই।
এতে অবস্থার আরো অবনতি দেখা দেয়। ফলে আমরা পুণরায় প্রাইম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিই। কিন্তু, আমরা তখন চরম অসহায়। ফলে রোগী নিয়ে বাড়ি ফিরে আসি। বর্তমানে অর্থাভাবে পরিবারের পক্ষ থেকে চিকিৎসা করা বড়ই কঠিন হয়ে পড়েছে।
বীর-মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ওয়াহেদ মিঞা বিগত ১৯৫৫ সালের ৫ মে উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের মৃত চাঁদ মিঞা- সেরাজান বেওয়া দম্পত্তির ঘরে জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর পৈত্রিক বিষয় সম্পত্তিসহ বাস্তভিটা কয়েকদফা তিস্ত নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবার পর নদী কুলবর্তী চন্ডিপুর গ্রামে পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করছেন। তিনি পানি উন্নয়ণ বোর্ডের ওয়ার্ক এ্যসিস্ট্যান্ট পদে চাকরি করতেন।
সাম্প্রতি তিনি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন। পরিবারের ৩ মেয়ে ও ৩ ছেলে রয়েছে। তাদের মধ্যে শুধুমাত্র চায়না আক্তার জুঁই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকতা ছাড়া অন্যান্য ভাইবোনদের মধ্যে কেউই সরকারি চাকরিতে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ওয়াহেদ তাঁর মা-বাবার সরসার জীবনে দ্বিতীয় সন্তান। চায়না আক্তার জুঁই ও তার মা জানান, রোগীর (আব্দুল ওয়াহেদ মিঞা) চিকিৎসার্থে কয়েক লাখ টাকার দরকার। কিন্তু, তাদের পক্ষে এ টাকা জোগাড় করা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডর এমদাদুল হক বাবলু বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ওয়াহেদ মিঞার অসুস্থ্যতার খবর জানা নেই। উপজেলা নির্বাহী অফিসার- মো. সোলেমান আলী বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ওয়াহেদ মিঞার চিকিৎসার্থে ইতোমধ্যে ১০ হাজার টাকা প্রদান কর হয়েছে।
Leave a Reply