এম মুজিবুর রহমান: নবীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন সরকারী কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি ও সিনিয়র সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ফেসবুকে মানহানীকর মিথ্যা স্ট্যাটাস এবং বিভিন্ন ভূয়া একাউন্ট খোলে প্রতারণার অভিযোগে ফরজুন আক্তার মনি নামের এক প্রতারক নারীকে গ্রেফতার করে তাকে জিঞ্জাসাবাদের জন্য ৭দিনের রিমান্ডের আবেদন করে সোমবার সকালে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার বিকেলে শহরতলীর জে.কে উচ্চ বিদ্যালয় পয়েন্ট থেকে নবীগঞ্জ থানার একদল পুলিশ ডিজিটাল নিরাপত্তা ও তথ্য প্রযুক্তি আইনের মামলায় গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ উক্ত অভিযোগের সত্যতা পেলে রবিবার বিকেলে থানার এসআই শামসুল ইসলাম, এসআই শমীরণ দাশের নেতৃত্বে একদল পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। এসময় তার কাছ থেকে ২টি এনআইডি কার্ড, বিভিন্ন সংস্থার বেশ কিছু ভূয়া আইডি কার্ড, ৩টি মোবাইল ফোন, ১০ টি সিম কার্ড, একটি কলম ক্যামেরা এবং মোবাইলে শতাধিক পর্ন ভিডিও ব্লু ফিল্ম বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।
এদিকে গতকাল সোমবার নবীগঞ্জ উপজেলা আইন শৃংখলা কমিটির সভায় স্থানীয় সংসদ সদস্য গাজী মোঃ শাহনেয়াজ মিলাদ, উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুল হক চৌধুরী সেলিম উপস্থিতিতে উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাজমা বেগম বহুরুপী প্রতারক ফারজানা আক্তার ফরজুন ওরফে মনির বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব উপস্থাপন করলে, মনির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সর্ব সম্মতিতে সিন্ধান্ত গৃহিত হয় এবং প্রতারক মনি কর্তৃক নবীগঞ্জের সিনিয়র সাংবাদিক, জন প্রতিনিধি, সরকারী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ফেসবুকের মাধ্যমে মানহানিকর স্ট্যাটাস দেয়ার জন্য নিন্দা প্রস্তাব গৃহিত হয়।
অভিযোগ উঠেছে, ওই নারী দীর্ঘদিন যাবত নিজেকে সাংবাদিক ও মানবাধীকার কর্মী পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার লোকজনের সাথে প্রতারণা করে আসছিল। তার টার্গেট ছিল- নারী জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন দপ্তরের নারী কর্মকর্তা ও স্কুল-কলেজের ছাত্রী। প্রতি রাতেই নারীদের বিভিন্ন অশালীন ম্যাসেজ দিতো। এসব ম্যাসেজের স্ক্রীণশর্ট প্রকাশ হওয়ায় মনি নারী না পুরুষ এনিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। প্রতারক মনির এই প্রতারণার ফাঁদে পড়ে কেউ প্রতিবাদ করলেই মনি তার ফেইসবুক আইডিতে বিভিন্ন রকম হুমকি ধামকিমূলক ও মানহানীকর স্ট্যাটাস পোস্ট দিয়ে অপদস্ত করতো। কিছুদিন পূর্বে নবীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও সমকাল প্রতিনিধি এম এ আহমদ আজাদ ও সাংবাদিক এম মুজিবুর রহমান এর বিরুদ্ধে তার ফেইসবুক আইডিতে একাধিক মানহানীকর স্ট্যাটাস দিলে সংবাদিক আজাদ বাদী হয়ে পুলিশ ডিজিটাল নিরাপত্তা ও তথ্য প্রযুক্তি আইনে অভিযোগ দায়ের করেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা সমীরণ দাশ , বলেছেন তার রহস্য উদঘাটনের জন্য জিঞ্জাসাবাদের জন্য ৭দিনের রিমান্ডের আবেদন হয়েছে এবং মনিসহ গং তিন জনের বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে মামলা রের্কড হয়েছে। নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন বলেন, গ্রেফতারকৃত মনির বিরুদ্ধে অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। অনেক সম্মানীত ব্যক্তি ও সুশীল সমাজ এবং সরকারী কর্মকর্তাদের সম্মানহানী করেছে ফেসবুকে। ওসি আরো বলেন- নবীগঞ্জে অনেক ভূয়া সাংবাদিক রয়েছে। তারা সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে নানা অপকর্ম করছে, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
Leave a Reply