এসটিভি ডেস্ক:: মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসির দণ্ড কার্যকর হওয়া কাদের মোল্লাকে ‘শহীদ’ আখ্যায়িত করে সংবাদ প্রকাশের ঘটনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় দৈনিক সংগ্রামের সম্পাদক আবুল আসাদকে ৩ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত।শনিবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশিদ শুনানি শেষে রিমান্ডের আদেশ দেন। এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হাতিরঝিল থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক মোহাম্মদ গোলাম আজম ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করে আবুল আসাদকে শনিবার সোয়া ২টার দিতে ঢাকা সিএমএম আদালতে হাজির করেন।রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, বাদী মোহাম্মদ আফজাল একজন মুক্তিযোদ্ধা। তিনি দীর্ঘদিন ধরে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করছেন। রাজাকার আব্দুল কাদের মোল্লা ১৯৭১ সালে বিতর্কিত ভূমিকা, পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর দোসর ছিলেন। মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের শক্তি এখনো সরকারের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছে। তারই ধারাবাহিকতায় গত ১২ ডিসেম্বর ‘শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লার ৬ষ্ঠ মৃত্যুবর্ষিকী আজ’ উল্লেখ করে আসামির সম্পাদিত দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকা প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। প্রতিবেদনটিতে বিভিন্ন ধরনের মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য উল্লেখ ছিল।
আবেদনে আরো বলা হয়, মিথ্যা তথ্য সম্বলিত প্রতিবেদন প্রকাশের কারণে বিভিন্ন স্থানে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। আবুল আসাদ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আঘাত ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঘোলাটে করার জন্যই উস্কানিমূলক সংবাদ প্রকাশ করেন। উক্ত আসামিসহ অজ্ঞাতনামা রাষ্ট্রদ্রোহী সংঘবদ্ধ চক্রের সহায়তায় উস্কানিকমূলক তথ্য প্রচার করে দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও সংবিধান অস্বীকার করেছেন। তাই এ আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে অজ্ঞাতনামা আসামিদের নাম জানা যাবে।বেলা সাড়ে ৩টার দিকে রিমান্ড আবেদনের ওপর শুনানি হয়। শুনানিতে আসামিপক্ষে আইনজীবী আব্দুর রাজ্জাক রিমান্ড বাতিলপূর্বক জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া জামায়াত নেতা কাদের মোল্লাকে শহীদ উল্লেখ করে গত ১২ ডিসেম্বর একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে দেনিক সংগ্রাম পত্রিকা। এ সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়ে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ নামে একটি সংগঠন গত ১৩ ডিসেম্বর বিকাল থেকে মগবাজারে অবস্থিত দৈনিক সংগ্রামের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয়। পরে সন্ধ্যা সাতটার দিকে অফিসে প্রবেশ করে ভেতরে ভাঙচুর করে এবং সম্পাদককে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। এরপর পুলিশ তাকে হাতিরঝিল থানা হেফাজতে নেয়। ওইদিন রাতেই হাতিরঝিল থানা এলাকার মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার মোহাম্মদ আফজাল ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আবুল আসাদসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
Leave a Reply