নবীগঞ্জ(হবিগঞ্জ) সংবাদদাতা::
নবীগঞ্জে কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে গতকাল সোমবার দুপুরে নবীগঞ্জ-শেরপুর রোডস্থ ছালামতপুর হাজারী কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্টিত মতবিনিময় সভা চলাকালে ছাত্রদলের দু’গ্রুপে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছে। এতে পথচারীসহ অন্তত অর্ধ শতাধিক আহত হয়েছে। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন সরকারী বেসরকারী হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এ সময় ৭টি মটর সাইকেল ও আসবাব পত্র এবং ১টি দোকান ভাংচুর হয়েছে। ঘটনার খবর পেয়ে থানার ওসি মোঃ আজিজুর রহমানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে করেছে। এ সময় ছাত্রদলের বিবদমান গ্রুপের কর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দু জনকে আটক করেছে। এ ঘটনায় নবীগঞ্জ শহরে উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন সংঘর্ষ এড়াতে শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
জানাযায়, গতকাল সোমবার দুপুরে শহরতলীর ছালামতপুর হাজারী কমিউনিটি সেন্টারে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশ ক্রমে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলকে আরো গতিশীল করার লক্ষ্যে নবীগঞ্জ উপজেলা ও পৌর ছাত্রদলের উদ্যোগে মতবিনিময় সভা অনুষ্টিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ সভাপতি ওমর ফারুক কাওসার। প্রধান বক্তা ছিলেন কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারন সম্পাদক আরিফুল হক আরিফ, ও বিশেষ অতিথি ছিলেন সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ জামিল হোসেন ও রায়হান উদ্দিন। সভা শুরুতেই ছাত্রনেতা জহিরুল ইসলাম সোহেলের গ্রুপের নেতাকর্মীরা আগে থেকেই মঞ্চের চেয়ার দখলে নেয়। পরে ছাত্রনেতা রায়েছ চৌধুরীর নেতৃত্বে তার গ্রুপের নেতাকর্মী নিয়ে অনুষ্টান স্থলে গিয়ে বসার জায়গা না পেয়ে উভয় গ্রুপের মধ্যে বাকবিতন্ডা শুরু হয়।
এ সময় কেন্দ্রীয় নেতারা অনুষ্টান মঞ্চে আসলে উত্তেজনা আরো বেগতিক হয়ে উঠে। এক পর্যায়ে সেন্টারের ভিতরেই চেয়ার নিয়ে উভয় গ্রুপের নেতাকর্মীরা মারামারি শুরু করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের বাহিরে চলে যায়। শুরু হয় উভয় পক্ষের মাঝে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। সংঘর্ষ চলাকালে উভয় পক্ষই দেশীয় অস্ত্রের পাশাপাশি ইটপাটকেল ব্যবহার করেছে। সংঘর্ষে গুরুতর আহতরা হলেন জুলন মিয়া (২৩), পাবেল মিয়া (২৭), শরীফুল ইসলাম জুনেদ (২৮), সাইফুর রহমান বাবু (২৩), পথচারী মুছন মিয়া (২৫) ও পথচারী মহিম উদ্দিন (৭২)। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করেও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। তবে পুলিশ আহতের খবর পাওয়া যায়নি।
পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে শরীফ আহমেদ আবিদ ও জুয়েল মিয়া নামের ২ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের বাড়ি হবিগঞ্জ শহরে বলে জানাগেছে। ভাংচুরকৃত ৭টি মটর সাইকেল জব্দ করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। এছাড়াও ছাত্রলীগের নেতা রাসেদ চৌধুরীর একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্টান ভাংচুর করা হয়েছে। এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানার ওসি মোঃ আজিজুর রহমান জানান, ছাত্রদলের কর্মী সভায় দুগ্রুপের সংঘর্ষের খবর পেয়ে তাৎক্ষনিকভাবে পুলিশ ঘটনাস্থল গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনা হয়েছে। শহরে সংঘর্ষ এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে, ২ জনকে আটক করা হয়েছে এবং সংঘর্ষে ভাংচুরকৃত মটরসাইকেল জব্দ করা হয়েছে।
Leave a Reply