ছাদেকুল ইসলাম রুবেল,গাইবান্ধা:: একদিকে করোনা অন্য দিকে উত্তরের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও কয়েকদিনের প্রবল বর্ষণে গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার তিস্তামুখঘাট পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।আর এসব পানির কারণে পানি বন্দি মানুষের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে ঘরবাড়ী পানি বন্দি হওয়া আশ্রয় নিচ্ছে মানুষ আশ্রায়ন কেন্দ্র ও বন্যা নিয়ন্ত্রন বাধের উপরে বসবাস শুরু মধ্য দিয়ে নদী এলাকার মানুষের মানববেতর জীবন যাপন। গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেয়া তথ্যানুযায়ী,২৭ জুন শনিবার পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি গত ২৪ ঘন্টায় তিস্তামুখঘাট পয়েন্টে ৫৯ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ২৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এই পানি বৃদ্ধি আগামী চারদিন পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে। ফলে গাইবান্ধা জেলার বন্যা সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি, সাঘাটা ও গাইবান্ধা সদর উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে।
গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের সৈয়দপুর-বালাসীঘাটের বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধটি গত বছর বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড তা মেরামতের কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। ফলে ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি বৃদ্ধির সাথে সাথেই বাঁধ ভাঙা এলাকা দিয়ে পানি ঢুকে সাঁতারকান্দির চর ও ভাষারপাড়া এলাকা আকস্মিক বন্যায় নিমজিত হয়ে পড়ে। জানা গেছে, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমা অতিক্রমের ফলে নতুন নতুন গ্রাম প্লাবিত হয়ে বন্যা দেখা দিয়েছে। ব্রহ্মপুত্র নদবেষ্টিত নিম্নাঞ্চল ফুলছড়ি উপজেলার গজারিয়া, খাটিয়ামারী, ইউনিয়নের বেশিরভাগ এলাকা ও যমুনা নদীবেষ্টিত সাঘাটা উপজেলার হলদিয়া, পালপাড়া, চিনিরপটল, চকপাড়া, পবনতাইড়, থৈকরপাড়া, বাশহাটা, মুন্সিরহাট, গোবিন্দি, নলছিয়াসহ বিভিন্ন গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এছাড়াও সুন্দরগঞ্জ উপজেলার চন্ডিপুর, কাপাসিয়া, তারাপুর, বেলকা, হরিপুর ও শ্রীপুর গ্রামে পানি ঢুকতে শুরু করেছে । তিস্তা ও ঘাঘট নদীবেষ্টিত সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। জেলার সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলার ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে ফলে এ গ্রাম গুলোসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার প্রায় কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এছাড়া গাইবান্ধা বালাসীঘাট সড়কের বাঁধের পূর্ব অংশের সড়কটি পানিতে নিমজিত হয়ে গেছে। এদিকে সাঘাটা, ফুলছড়ি, গাইবান্ধা সদর, সুন্দরগঞ্জের নদী বেষ্টিত চরগুলোর নিম্নাঞ্চল ইতোমধ্যে তলিয়ে গেছে। ফলে এসব এলাকার বসতবাড়ির লোকজন পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। সেইসাথে পাট, পটল, কাঁচামরিচ ও শাক-সবজির ক্ষেতসহ সদ্য রোপণকৃত বীজতলা এ পানিতে তলিয়ে গেছে।
Leave a Reply