মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া, লন্ডন: ইংল্যান্ডে লকডাউনের কারণে নামাজের জামাত এবং বিয়ের অনুষ্ঠানে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ৫ নভেম্বর বৃহস্পতিবার থেকে আবারো পুরো ইংল্যান্ডে লকডাউন দিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। ব্রিটেনে এরই মধ্যে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ১০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। বিজ্ঞানীরা সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, এই শীতে আরো ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। মারা যেতে পারেন কমপক্ষে আরো ৮০ হাজার মানুষ। দিনে সেখানে নতুন করে আক্রান্ত হতে পারেন ২০ হাজার। স্বাস্থ্য বিভাগের এমন হুঁশিয়ারিতে জনসন দ্বিতীয় লকডাউন দিলেন। সরকার এমন ভূমিকায় যাবে এটা আগেই ফাঁস হয়ে গিয়েছিল। ফলে শনিবার দিনশেষে ডাউনিং স্ট্রিটে তড়িঘড়ি করে এক সংবাদ সম্মেলন করেন বরিস জনসন।
লকডাউনে যে সব বিধিনিষেধ:
প্রথমবারের লকডাউনের চেয়ে এবারের লকডাউনের বেশ কিছু ভিন্নতা রয়েছে। প্রথম লকডাউনের সময়ে জরুরি ও নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিষপত্রের দোকান ছাড়া প্রায় সবই ছিলো বন্ধ। লোকজনকে বাইরে যাওয়ার অনুমতি ছিলো সীমিত। তবে এবার স্কুল, কলেজসহ চালু রাখা হয়েছে বহু সার্ভিস।
মসজিদে গিয়ে জামাতে নামাজ আদায় করা যাবে না। ব্যক্তিগত ভাবে নামাজ পড়া যাবে, চাইল্ড কেয়ার, জরুরী সেবা যেমন রক্ত দানের জন্য খোলা রাখা যাবে। মসজিদ জানাজার জন্য খোলা রাখা যাবে। জানাজায় ৩০ জন অংশ নিতে পারবেন।
নতুন এই লকডাউনের অধীনে লোকজনকে বাড়িতেই অবস্থান করতে হবে। সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়া তারা বের হতে পারবেন না। যেসব কাজ বাড়িতে বসে করা যায় না, শুধু সেসব ক্ষেত্রে বাইরে যেতে পারবেন। চিকিৎসা নিতে, খাদ্য ও অন্য প্রয়োজনীয় পণ্য কেনাকাটার জন্য মানুষ বাইরে যেতে পারবে।
নতুন বিধিনিষেধের মধ্যে রয়েছে: বাড়ির ভেতরে বা গার্ডেনে মিটিং করা যাবে না। তবে পাবলিক স্পেইসে ওয়ান টু ওয়ান মিটিং করা যাবে। অপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান বন্ধ থাকবে, তবে ক্লিক এন্ড কালেক্ট ডেলিভারী সংগ্রহের জন্য খোলা রাখা যাবে। পাবস, বার, রেস্টুরেন্ট বন্ধ থাকবে, তবে টেকওয়ে সার্ভিসের জন্য চালু রাখা যাবে। ইনডোর আউটডোর লেজার সুবিধা, জিম, সুইমিং বন্ধ থাকবে, বিউটি সেলুনও বন্ধ থাকবে। নির্মাণ সাইট এবং উৎপাদন এলাকা চালু রাখা যাবে।
বিয়ে এবং সিভিল পার্টনারশিপ অনুষ্ঠান বিশেষ কারণ ছাড়া বন্ধ থাকবে।
যদি পিতামাতা আলাদা থাকেন তাহলে বাচ্চারা তাদের আবাসন পরিবর্তন করতে পারবে। ক্লিনিক্যালি দূর্বল লোকদের বিশেষ যত্নবান হতে বলা হয়েছে।
জনগণকে অন্যত্র রাত্রি যাপন, হলিডে যাওয়া এমনকি দেশের বাইরেও হলিডে যাওয়া নিষেধ করা হয়েছে। তবে কাজের জন্য বিদেশ যাত্রায় অনুমতি রয়েছে।
জনসাধারণকে অপ্রয়োজনে যানবাহন আরোহন না করতে বলা হয়েছে।
এদিকে, আগামি ২ ডিসেম্বরের পর আবারো টায়ার সিস্টেমে ফিরে আসবে ইংল্যান্ড। বরিস জনসন আশা করেন, বড়দিন সবাই মিলে উদযাপন করতে পারবেন।
একই সাথে বন্ধ হয়ে যাওয়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কর্মচারিরগণ বেতনের শতকরা ৮০ ভাগ নভেম্বর পর্যন্ত পাবেন।
Leave a Reply