মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া, লন্ডন: চীনের উহান শহরের ল্যাবে করোনাভাইরাস তৈরির প্রমাণ পেয়েছেন ব্রিটিশ বিজ্ঞানীরা। উহানের একটি ল্যাবে চীনা বিজ্ঞানীরা করোনাভাইরাস তৈরি করেছেন। কোভিড-১৯ এর উৎস অনুসন্ধানে নতুন তদন্তের ঘোষণার মধ্যেই একটি গবেষণায় ব্রিটিশ বিজ্ঞানীদের পক্ষ থেকে এ দাবি করা হয়েছে। তাঁরা জানান, পরে এটি তৈরিতে নিজেদের ভূমিকা গোপন রাখতে রিভার্স-ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মাধ্যমে ভাইরাসটির আরেকটি সংস্করণ তৈরি করা হয়েছে, যাতে মনে হয় এটি বাঁদুড়ের কাছ থেকে প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্টি হয়েছে। রবিবার গবেষণা প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম ডেইলি মেইল।
এই গবেষণা প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন ব্রিটিশ অধ্যাপক আঙ্গুস ডালগ্লেইশ ও নরওয়ের বিজ্ঞানী বিরজার সোরেনসেন। আঙ্গুস লন্ডনের সেন্ট জর্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনকোলজির অধ্যাপক এবং সোরেনসেন ইমিউনর নামক একটি প্রতিষ্ঠানের সভাপতি।
কোভিড-১৯ প্রথম শনাক্ত হয়েছিল ২০১৯ সালের শেষের দিকে চীনের শহর উহানে। ভাইরাসটির উৎপত্তির জন্য চীনের পশু বিক্রির একটি বাজারের কথা বলা হয়েছিল। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই ভাইরাস প্রাণী থেকে মানুষের দেহে সংক্রমিত হয়েছে। শুরু থেকেই সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন করোনাভাইরাস তৈরির জন্য চীনকে দায়ী করে আসছেন। মার্কিন নির্বাচনে ট্রাম্পের পরাজয় এবং ক্ষমতা হস্তান্তরের পর কিছুদিন এই বিতর্ক থেমে গিয়েছিল। কয়েক দিন আগে আবারও সেই বিতর্ক উসকে দেন চীনের এক ভাইরোলজিস্ট। ড. লি মেং ইয়ান নামের এই ভাইরোলজিস্ট দাবি করেছেন, তার কাছে প্রমাণ রয়েছে যে, করোনাভাইরাস চীনের একটি ল্যাবে তৈরি করা হয়েছে। গত বছর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে গবেষণা করছেন ইয়ান। তিনি জানান, এই বিষয়ে মুখ খোলায় তাকে ক্রমাগত হুমকি দেওয়া হয়। প্রাণ বাঁচাতে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে এসেছেন।
গবেষণা প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, চীনা বিজ্ঞানীরা একটি প্রাকৃতিক করোনাভাইরাসের মেরুদণ্ড পেয়েছেন চীনের গুহার একটি বাদুড়ের দেহে। তাঁরা এটিকে নতুন একটি স্পাইকে যুক্ত করেন। এতে ভাইরাসটি প্রাণঘাতী ও উচ্চ সংক্রমণশীল কোভিড-১৯ এ পরিণত হয়।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, গবেষকরা কোভিড-১৯ এর নমুনায় বিশেষ ফিঙ্গারপ্রিন্ট পেয়েছেন, যা কেবল একটি গবেষণাগারেই কারসাজি করে তৈরি করা সম্ভব।
চীনে তৈরি ভাইরাস সম্পর্কিত রেট্রো-ইঞ্জিনিয়ারিং প্রমাণযোগ্য তথ্যে দুই গবেষক দাবি করেছেন, তাদের কাছে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ভাইরাস তৈরি হওয়ার প্রমাণ রয়েছে। তবে এই বিষয়টিকে উপেক্ষা করা হয়েছে।
গবেষণায় বলা হয়েছে, উহান ল্যাবে ইচ্ছাকৃতভাবে ডাটা ধ্বংস করা হয়েছে। যারা এই বিষয়ে কথা বলেছেন তাদের কণ্ঠ দমানো ও বিজ্ঞানীদের গুম করা হয়েছে।
২২ পৃষ্ঠার গবেষণা প্রতিবেদনটি বায়োফিজিক্স ডিসকভারির বৈজ্ঞানিক জার্নাল কোয়ার্টারলি রিভিউতে প্রকাশিত হবে। এতে তাঁরা দাবি করেছেন, গেইন অব ফাংশন নামের প্রকল্পে কয়েকটি মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে কি ভাবে চীনা বিজ্ঞানীরা ভাইরাস তৈরির তথাকথিত যন্ত্র তৈরি করেছেন।
এই প্রকল্পে প্রাকৃতিক ভাইরাসকে আরও বেশি সংক্রামক করে তোলার গবেষণা করা হয়েছিল। এই প্রকল্পকে বেআইনি ঘোষণা করেছিলেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।
এক সাক্ষাৎকারে আঙ্গাস ডালগ্লেইশ জানান, পদার্থ বিজ্ঞানের নিয়ম অনুসারে, এক সঙ্গে চারটি পজিটিভ চার্জের অ্যামিনো এসিড পাওয়া সম্ভব না। একমাত্র উপায় হলো তা কৃত্রিমভাবে তৈরি করা।
Leave a Reply