শাহ এসএম ফরিদ,জগন্নাথপুর থেকে ::আর পনের দিন পরেই শেষ হচ্ছে ভাদ্র মাস। ভাদ্র মাসের শুরুতে আমন ধান চাষের উপযুক্ত সময়। তাই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মতো সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরেও চলছে আমন রোপনের ধুম। কৃষকরা এখন আমন ধানের চারা রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
উপজেলার প্রতিটি হাওরে ধান আবাদের উপযুক্ত জমিতে চলছে আমন ধানের চারা রোপনে ব্যস্ততা। গত আমন মৌসুমের শুরুর দিকে আতস্মিক বন্যায় বীজতলার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হলেও এবার কুশিয়ারা অববাহিকায় বন্যা ছাড়া আর কোনো ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি না হওয়ায় এ মৌসুমে বুকভরা আশা নিয়ে দিনভর মাঠে কাজ করছেন কৃষকরা।
জগন্নাথপুর কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবারের আমনধান চাষাবাদের জন্য জগন্নাথপুর উপজেলায় ৮ হাজার ২শত আশি হেক্টর জমিতে রোপাআমন ধানের চাষাবাদের জন্য লক্ষমাত্রা নিধারণ করা হয়েছে। নতুন জাতের বাইশ ও তেইশ ধানের আবাদ করতে কৃষকদের পারামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে কুশিয়ারা নদীর তীর্রবতী এলাকায় ভাসমান বীজতলা তৈরী করতে কৃষকদের বলা হচ্ছে।
সরজমিনে উপজেলার বিভিন্ন হাওর ঘুরে দেখা যায়, শ্রাবণের শেষ থেকে শুরু করে ভাদ্র মাসের এ সময়ে এসে এখানে একসাথে কখন রোদ আবার কখনো বৃষ্টির দেখা পাওয়ায় কৃষকরা অনেকটা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন চাষাবাদে। কেউবা জমি তৈরি করছেন, কেউবা আবার বীজতলা থেকে বীজ তোলছেন, কেউবা বীজতলার চারা পরিচর্চায় ব্যস্ত রয়েছেন, কেউবা আবার উৎসবমুখর পরিবেশে জমিতে করছেন ধানের চারা রোপণ। দেখা মিলেছে দলবেঁধে উৎসবমুখর পরিবেশে ধানের চারা তুলা ও রোপণের চিত্রও।
কৃষকরা জানিয়েছেন, চলতি বছর শ্রাবণ ও ভাদ্র মাসে ব্যাপক বৃষ্টিপাত হলেও ভাদ্র মাসের শুরুতে এসে হঠাৎ করে রোদের প্রথরতা বৃদ্ধি আর বৃষ্টি স্বল্পতা দেখা দিয়েছে। ফলে কৃষকরা জমিতে পানি ধরে রাখা নিয়ে কিছুটা উদ্বিগ্ন রয়েছেন। অন্যান্য বছর জমিতে পর্যাপ্ত পানি থাকলেও এবার প্রখর রোদে জমি থেকে দ্রুত পানি নামতে শুরু করায় তাড়াতাড়ি করে আবাদ সারতেই কোমর বেঁধে মাঠে নেমে সকলেই। আগামী দু’সপ্তাহ বা তারও একটু বেশি সময়ের মধ্যেই এই উপজেলার আমন চাষাবাদ শেষ হবে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শওকত উসমান মজুনদার জানান, কুশিয়ারা পাড়ের কৃষকদের জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময়ে বন্যার শঙ্কা থাকায় চাষাবাদে কৃষকদের মধ্যে কিছুটা ধীরতা দেখা দিয়েছিল। ইতোমধ্যে এ উপজেলায় প্রায় সব জমিতে ধানের চারা লাগানো হয়েছে। আগামী ১৫-২০ দিনের মধ্যে বাকি জমিতেও চাষাবাদ শেষ হবে। তিনি আরো জানান,এবার আমান ধানের বা¤পার ফলনে তারা বিশেষ কিছু কর্মসূচী ও পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। এ বৎসর আমন ধান লাগানো থেকে ঘরে তোলা পর্যন্ত আবহাওয়া অনুক’লে থাকলে বা বড় ধরনের কোন প্রাকৃতিক দূর্যোগের মুখোমুখি না হলে আমন ধানের বা¤পার ফলন হবে বলে তিনি জানান।
Leave a Reply