তাজুল ইসলাম, দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ) থেকে::সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আ‘লীগ ও বিএনপি সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় সৃষ্ট বিরোধটি সালিশ বৈঠকে নিস্পত্তির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পারস্পরিক সম্প্রীতি বজায় রাখতে এ ব্যাপারে মঙ্গলবার ছাতক-দোয়ারাবাজারের বিশিষ্ট মুরব্বিরা বালিউরা বাজারে সমবেত হত হন। দিনভর মুরব্বিদের ডাকা পরবর্তী সালিশ বৈঠকে আপস-নিস্পত্তির মাধ্যমে বিবদমান বিরোধটি মীমাংসার সিদ্ধান্ত নিলে উত্তপ্ত পরিস্থিতি শান্ত হয়। এ সময় উভয় পক্ষকে মামলা মোকদ্দমা কিংবা ঝগড়া-ঝাটির পূনরাবৃতি থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান উপস্থিত মাতব্বরগন।
উল্লেখ্য, সোমবার দোয়ারাবাজার উপজেলার নরসিংপুর ইউনিয়নের বৃহত্তর বালিউরা বাজারে মাছ কেনাকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের দু’দফা সংঘর্ষে অন্তত ৩০জন আহত হয়। গুরুতর আহতদের ছাতক, দোয়ারাবাজার ও সিলেটের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সোমবার সন্ধ্যায় ওই স্থানীয় বালিউরা বাজারে মাছ কিনতে যান দোয়ারাবাজার উপজেলা বিএনপির সভাপতি ফুলকারগাঁও নিবাসী সাবেক নরসিংপুর ইউপি চেয়ারম্যান সামছুল হক নমু। এ সময় মাছের দর-কষাকষি নিয়ে উপস্থিত আওয়ামীলীগ নেতা চমকিরগাঁও নিবাসী একই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান ভূঁইয়ার সাথে বাক-বিতন্ডার এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের সমর্থকরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। সংঘর্ষে আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুল হান্নান ভূঁইয়ার ছেলে আহত হলে পরিস্থিতি আরো উত্তপ্ত হয়ে উঠে।
এরই জের ধরে রাত ৮টার দিকে ফের উভয় পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে ইট-পাটকেল ও দেশিয় অস্ত্রসহ দ্বিতীয় দফা ঘন্টাব্যাপি সংঘর্ষ চলে। সংঘর্ষে আহতরা হচ্ছেন- কামরুজ্জামান রুবেল, নজরুল ইসলাম, আসকর আলী, আব্দুর রহমান, আব্দুস সহিদ, আইয়বুর রহমান, জাহেদ মিয়া, আব্দুস সামাদ, আব্দূল কাদির, লিটন, আব্দুল রব্বান, সামছুদ্দিন আহমদ, আব্দুর রউফ, আবুল মুনসুর, আব্দুল কাহার, শাওন ও আব্দুল মোমেনসহ অন্তত ৩০জন। সংঘর্ষের ঘটনায় সন্ধ্যা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত পুরো বাজার এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছিল।
এ সময় বাংলাবাজার-নোয়ারাই, নরসিংপুর-বালিউরা সড়কে পথচারীসহ সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। খবর পেয়ে দোয়ারাবাজার থানার তিন এসআইসহ এক প্লাটুন পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট ছুঁড়ার পর উত্তপ্ত পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঘটনাস্থলে আরো অতিরিক্ত দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত ছাতক-দোয়ারাবাজারের বিশিষ্ট মুরব্বিদের উদ্যোগে বিবদমান বিরোধটি সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে নিস্পত্তির সিদ্ধান্ত নিলে পরিস্থিতি প্রশমন হয়।
জানতে চাইলে দোয়ারাবাজার থানার ওসি সুশীল রঞ্জন দাস ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। এ ব্যাপারে থানায় কোনো মামলা হয়নি। এলাকার বিশিষ্ট মুরব্বিরা সালিশ বৈঠকে সৃষ্ট বিরোধটি মীমাংসার উদ্যোগ নিয়েছেন বলে তিনি জানান।
Leave a Reply