মতিউর রহমান মুন্না ॥ নবীগঞ্জের আউশকান্দি বাজারে অবস্থিত অরবিট হসপিটালের চিকিৎসক খায়রুল বাশারের বিরুদ্ধে প্রতারণার ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি বাতিল করা হয়েছে। গতকাল বুধবার সকালে জেলা সিভিল সার্জনের নির্দেশে ওই ৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি বাতিল আর গঠনের ঘটনায় ধু¤্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। তবে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, তদন্ত কমিটির সদস্যদের চেয়ে অভিযুক্ত চিকিৎসক উচ্চপদস্থ হওয়ায় ওই কমিটি বাতিল করা হয়েছে।
হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ রথীন্দ্র চন্দ্র দেবকে সভাপতি করে নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও জানা গেছে। এদিকে হসপিটালের পরিচালক মহিবুর রহমান হারুন হঠাৎ করে দেশ ত্যাগ করার খবর পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েন প্রতারণার শিকার হওয়া শিশুর পরিবার। শিশু জিবার মা শিরিনা আক্তার জানান, ‘চিকিৎসক খায়রুল বাশারের প্রতারণার ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়, তদন্ত কমিটি কর্তৃক আমাকে নোটিশ দেওয়া হয় বুধবার সকালে হাসপাতালে উপস্থিত হওয়ার জন্য, আমি সেখানে উপস্থিত হলে ডাঃ আব্দুস সামাদ, ডাঃ ইফতেখার হোসেন চৌধুরী ও ডাঃ জান্নাত আরা চৌধুরী আমাকে বিভিন্ন প্রশ্ন করেন।
কিন্তু কোন কিছু না লিখেই সাদা কাগজে স্বাক্ষর রেখে বাড়ি চলে যেতে বলেন।’ এ ঘটনাকে সন্দেহের চোঁখে দেখছেন শিরিনা আক্তার। এ ব্যাপারে ডাঃ আব্দুস সামাদ বলেন, সিভিল সার্জনের নির্দেশে আমাকে সভাপতি করে কমিটি গঠন করা হয়েছিল। এরই প্রেক্ষিতে আমরা ওই শিশুর মাকে নোটিশ করে তার বক্তব্য গ্রহন করি। পরে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক জানানো হয় কমিটির কার্যক্রম স্থগিত রাখার জন্য। তবে সাদা কাগজে স্বাক্ষরের বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন তাকে আমরা আন্তরিকতার সহিত ওই বিষয়টি নিয়ে বুঝিয়েছি অন্য কিছু নয়।
উল্লেখ্য, ডাঃ খায়রুল বাশার কর্তৃক সুস্থ্য শিশুকে অসুস্থ্য বানিয়ে উন্নত চিকিৎসার নামে অন্য একটি প্রাইভেট হসপিটালের চিকিৎসকের কাছে পাঠানোর নামে প্রতারণার খবর বিভিন্ন মিডিয়ায় ফলাও করে প্রচারিত হলে হবিগঞ্জ-৩ আসনের এমপি আবু জাহিরের নজরে পড়লে তিনি জেলা আইনশৃংখলা কমিটির সভার প্রস্তাব করলে পরে সিদ্ধান্তক্রমে হবিগঞ্জের সিভিল সার্জন ডাঃ সুচিন্ত চৌধুরী ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করার জন্য নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তাকে নির্দেশ প্রদান করেন।
এরই প্রেক্ষিতে নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডাঃ গোলাম মোস্তফা নবীগঞ্জ হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডাঃ আব্দুস সামাদকে প্রধান করে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ ইফতেখার আলম চৌধুরী ও মেডিকেল অফিসার ডাঃ জান্নাত আরা চৌধুরীকে ৩ সদস্য করে কমিটি গঠন করেন। ওই কমিটিকে ৭ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। ঘটনাটি সুষ্ট তদন্তের মাধ্যমে দোষি চিকিৎসকের শাস্তি দাবী করছেন শিশুর পরিবার।
Leave a Reply