নবীগঞ্জ সংবাদদাতা: নবীগঞ্জ উপজেলার দুটি ইউনিয়নের দুটি প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগে বিল স্বাক্ষর না করায় এনিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউপি চেয়ারম্যানদের মধ্যে চরম দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে। এনিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান সংশ্লিষ্ট প্রজেক্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন। এর জের ধরে গত ২৬ জুন উন্নয়ন সম্বনয় সভা ও আইন শৃংখলা সভা বর্জন করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান বৃন্দ। বিষয়টি সমাধান না হলে চেয়ারম্যান বৃন্দ পরবর্তী সভায় যোগদান করবেন না বলে ঘোষনা দিয়েছেন।
গত ৩০ জুন অর্থ বছরের হিসাব নিকাশ শেষ হলেও ঐ দুটি প্রজেক্ট এর বিল ছাড় দেননি উপজেলা চেয়ারম্যান। ইউপি চেয়ারম্যানদের অভিযোগ উপজেলা চেয়ারম্যান তাদের সাথে খারাপ আচরণ করেছেন। এই জন্য তারা উন্নয়ন সম্বনয় সভা ও আইন শৃংখলা সভা বর্জন করেছেন। উপজেলা চেয়ারম্যান বলেছেন, তিনি কোন চেয়ারম্যানের সাথে বাজে ব্যবহার করেছেন বা কোন অনিয়ম দুর্নীতি করেছেন প্রমান হলে তিনি পদত্যাগ করবেন,অন্যতায় তিনি আপোসে কখনও কোন দূর্নীতিকে প্রশ্রয় দিবেন না।তিনি দূর্নীতি করেননি ও করবেন না এবং দূর্ণীতিকে রোধ করে সমাজকে বদলে দিবেন এটাই প্রতিজ্ঞা।
জানাযায়, নবীগঞ্জ উপজেলার কুর্শি ইউনিয়নের ভুবির বাক চৌশতপুর সড়কের খালের উপর কালভার্ট নির্মানে অনিয়ম হলে অভিযোগের ভিত্তিতে ঐ প্রকল্পটির বিল এবং কালিয়ার ভাঙ্গা ইউনিয়নের মান্দার কান্দি গ্রামের অঞ্জন পুরুকায়স্থ এর বাড়ির সামনে একটি সড়কে এলজিএসপি ও জেলা পরিষদের বরাদ্ধ দিয়ে কাজ করা হয়। কিন্তু ঐ সড়কের উপর এডিপি ফান্ডের বরাদ্ধ দেখিয়ে একটি ভুয়া বিল তোলার চেষ্টা করলে উপজেলা চেয়ারম্যান ঐ দুটি বিল আটক করে দেন। এনিয়ে দুই ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের সাথে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়।এর জের ধরে তার ২৬ জুন উন্নয়ন সম্বনয় সভা ও আইন শৃংখলা সভা বর্জন করেন ইউপি চেয়ারম্যান বৃন্দ।
এ ব্যাপারে কালিয়ারভাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বলেন, আমি উক্ত সড়কের কাজ করেই বিল দিয়েছি। এক সড়কে তিনটি প্রজেক্ট হতেই পারে বিষয়টি বিস্তারিত এখন বলতে পারবো না।
কুর্শি ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ফারছু মিয়া কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি, তবে তিনি বলেন সরেজমিন পরিদর্শন করলেই সব পাওয়া যাবে।
ইউপি চেয়ারম্যান সমিতির সভাপতি ইজাজুর রহমান বলেন, তাদের সাথে উপজেলা চেয়ারম্যান বাজে ব্যবহার করেছেন তাই তারা উন্নয়ন সম্বনয় সভা ও আইন শৃংখলা সভা বর্জন করেছেন। উল্লেখিত দুটি প্রজেক্টের বিষয়ে তিনি বলেন, এনিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান সংশ্লিষ্টদের সাথে বাজে ব্যবহার করেছেন। এখন কেউ ভুয়া বিল করার সুযোগ নাই। বিষয়টি সমাধান না হলে আমরা পরবর্তী সভায় যাবো না।
নবীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুল হক চৌধুরী সেলিম বলেন, নবীগঞ্জ উপজেলার কুর্শি ইউনিয়নের ভুবির বাক চৌশতপুর সড়কের খালের উপর কালভার্ট নির্মানে অনিয়ম হলে অভিযোগ পাই এবং কালিয়ার ভাঙ্গা ইউনিয়নের মান্দার কান্দি গ্রামের অঞ্জন পুরুকায়স্থ এর বাড়ির সামনে একটি সড়কে এলজিএসপি ও জেলা পরিষদের বরাদ্ধ দিয়ে কাজ করা হয়। কিন্তু ঐ সড়কের উপর এডিপি ফান্ডের বরাদ্ধ দেখিয়ে একটি ভুয়া বিল তোলার চেষ্টা করলে আমি ঐ দুটি বিল আটক করে দেই এটাই আমার অপরাধ। তিনি বলেন কোন চেয়ারম্যানের সাথে আমি বাজে ব্যবহার করেছি বা কোন অনিয়ম দুর্নীতি করেছি প্রমান করতে পারলে আমি চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করব। অন্যতায় আমি আপোসে কখনও কোন দূর্নীতিকে প্রশ্রয় দিবো না। আমি দূর্নীতি করিনি ও করবেন না। এবং দূর্ণীতিকে রোধ করে সমাজকে বদলে দিব এটাই আমার প্রতিজ্ঞা।
এব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী আনোয়ারুল হক বলেন, আমরা উপজেলা চেয়াম্যানের নির্দেশ পেয়েছি। সংশ্লিষ্ট দুটি ইউনিয়নের প্রজেক্ট পরিদর্শন করলে অনিয়ম পরিলক্ষিত হয়েছে। উপরের নির্দেশ পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply