নবীগঞ্জ প্রতিনিধি ::নবীগঞ্জে আলোচিত কলেজ ছাত্রী তন্নী রায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়েরকৃত হত্যা মামলার রায়ের দিন আগামী ৭ জানুয়ারি মঙ্গলবার ধার্য করেছেন বিজ্ঞ আদালত। গত বুধবার বিশেষ বিচার ট্রাইব্যুনাল (২) সিলেট এর বিচারক মোঃ রেজাউল করিম এ আদেশ দেন। গত ১-২ জানুয়ারী যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে বিচারক ৭ জানুয়ারি রায়ের দিন ধার্য করেন। এর আগে ২০ জনের স্বাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন করেন আদালত। নিহত কলেজ ছাত্রী তন্নী রায়ের পিতা ও মামলার বাদী বিমল রায় এক্সপ্রেসকে জানান, আমার মেয়ে তন্নীর হত্যাকারী রানুর সর্বোচ্চ শাস্তির দাবী জানাই।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর বেলা দেড়টার দিকে তন্নী রায় নবীগঞ্জ শহরতলীর বাংলা টাউনে ইউ.কে আই সিটি কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টারে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বেড় হয়ে আর বাসায় ফিরে আসেনি। এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরী করেন তন্নী রায় এর বাবা। সাধারণ ডায়েরী করার ৩ দিনের মাথায় কলেজ ছাত্রী তন্নী রায়ের বস্তাবন্দি লাশ নদী থেকে উদ্ধার করে নবীগঞ্জ থানা পুলিশ। তন্নীর লাশ উদ্ধার এবং মামলা দায়েরের পর থেকেই পুলিশ ঘটনাস্থল এবং তন্নীর কথিত প্রেমিক রানু রায়ের বাড়িসহ আশপাশের সম্ভাব্য ঘরবাড়িতে তল্লাশী চালায়। নবীগঞ্জ থানা পুলিশের কাছে মামলার অগ্রগতি না আসলে মামলাটি হবিগঞ্জ ডিবি পুলিশের কাছে প্রেরণ করা হয়।
এদিকে তন্নী হত্যা মামলার প্রধান আসামী রানু রায়কে গ্রেফতার ও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবীতে একের পর এক মানববন্ধন করে আসছিল বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক সংগঠন। এরই জের ধরে তন্নী রায় হত্যাকান্ডের ২০ দিনের মাথায় ৭ অক্টোবর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ডিবি পুলিশের তৎকালীন ওসি মোঃ আজমিরুজ্জামানের নেতৃত্বে একদল সাদা পোশাকে ডিবি পুলিশ বিকাল বেলা বি-বাড়িয়া বাস স্ট্যান্ড এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে। পরে ৮ অক্টোবর শনিবার দুপুরে হবিগঞ্জের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিশাত সুলতানার আদালতে ঘাতক রানু ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করে। এবং তন্নী হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করে।
হত্যার কারণ হিসেবে রানু রায় স্বীকারোক্তিতে বলে তন্নীর সাথে দীর্ঘদিন ধরে রানু রায়ের প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিল। ওই বছর ১৭ সেপ্টেম্বর শনিবার প্রেমিক রানু রায়ের ডাকে সাড়া দিয়ে তন্নী ইউ.কে আই সিটি কোচিং সেন্টারে যাবে বলে বাসা থেকে বের হয়ে রানু রায়ের বাড়িতে যায়। যাওয়ার পর তন্নীর সাথে একাদিক ছেলের সম্পর্ক আছে এই বিষয়ে রানু তন্নীকে ওই সব ছেলেদের সাথে কথা বলা বন্ধ করার জন্য বলে। তখন এক পর্যায়ে রানুর সাথে তন্নীর ঝগড়া সৃষ্টি হয়। এ সময় রানু রায় তন্নীকে আঘাত করে। এরপর তন্নীর গলায় রানু চেপে ধরলে এক পর্যায়ে ঘটনাস্থলে সে মারা যায়। ২০১৬ সালে ১৯ ডিসেম্বর তন্নী হত্যা মামলায় রানু রায়কে একক আসামী করে আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করেছে হবিগঞ্জ ডিবি পুলিশ।
Leave a Reply